ঢাকা ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কিটক্যাটে নিম্নমানের চিনি, নেসলে ও মেঘনা গ্রুপের প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৮:০৭:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
  • / ৩৩ Time View

দেশে ‘নিম্নমানের খাদ্যপণ্য উৎপাদন, আমদানি ও বাজারজাত’ করার অভিযোগে নেসলে বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ দুইজন এবং মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ঢাকার নিরাপদ খাদ্য আদালত।

সোমবার দুটি পৃথক মামলায় স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত সাহারা বিথী এ আদেশ দেন।

মামলা দুটির বাদী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের খাদ্য পরিদর্শক কামরুল হাসান নিরাপদ খাদ্য আদালতর এমন আদেশ হওয়ার কথা বলেছেন।

এর মধ্যে একটি মামলায় বাংলাদেশের বাজারে ‘নিম্নমানের’ কিটক্যাট চকলেট বাজারজাতের অভিযোগে নেসলে বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিপাল আবে বিক্রমা ও পাবলিক পলিসি ম্যানেজার রিয়াসাদ জামানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ান জারি করে আদালত।

একই দিনে আরেক আদেশে একই আদালত ‘সালফার ডাই অক্সাইড সমৃদ্ধ’ নিম্নমানের চিনি প্রস্তুতের দায়ে মেঘনা সুগার রিফাইনারির কর্ণধার মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।

চিনি উৎপাদনকারী মেঘনা সুগার রিফাইনারি ব্যবসায়িক গোষ্ঠী মেঘনা গ্রুপের একটি কোম্পানি, যেটির গ্রুপ চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল।

মামলা দুটির বাদী খাদ্য পরিদর্শক কামরুল যাচাই বাছাইয়ে পাওয়া তথ্যের বরাতে বলেন, খাদ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি দুটি ‘জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করে নিম্নমানের পণ্য’ বিক্রি করছে।

এর মধ্যে কিটক্যাট বিএসটিআইয়ের ‘অনুমোদন ও প্রত্যয়ন’ ছাড়াই পণ্য বাজারজাত করছে বলে একটি মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

আর মেঘনা সুগারের বিরুদ্ধে আরেক মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, এ কোম্পানির চিনিতে ‘চিনির মাত্রা কম ও সালফারের উপস্থিতি’ পাওয়া গেছে।

পরিদর্শক কামরুল বলেন, “প্রথম মামলাটি দায়ের করা হয়েছে নেসলে উৎপাদিত কিটক্যাট চকলেট-কোটেড ওয়েফার পরীক্ষা করে নিম্নমানের প্রমাণ পাওয়ার পর। দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্যটির নমুনা ওয়েফার বিস্কুট এবং তার চকোলেট আবরণ—দুটি ভাগে পরীক্ষা করা হয়েছিল।“

এ মামলার অভিযোগের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এর মানদণ্ডে অনুমোদিত সর্বাধিক ১ শতাংশের বিপরীতে ওয়েফার বিস্কুটটিতে ২.৩২ শতাংশ অম্লতা (অ্যাসিডিটি) পাওয়া যায়। আবরণে ব্যবহৃত চকলেটে অনুমোদিত ১২ থেকে ১৪ শতাংশের পরিবর্তে ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ দুধের কঠিন পদার্থ ছিল। একই পণ্যে দুধের ফ্যাট বা চর্বির পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ২৩ শতাংশ, যা মানসম্মত পরিমাণ ২.৫ থেকে ৩.৫ শতাংশ সীমার বেশ নিচে।

ওই খাদ্য পরিদর্শক বলেন, “উচ্চ অ্যাসিডিটি পচন নির্দেশ করে বা সহজভাবে বললে বোঝায় যে খাবারটি পচা।”

তার ভাষ্য, “মানদণ্ডের সীমার চেয়ে কম দুধের কঠিন পদার্থ এবং দুধের ফ্যাট থাকার অর্থ হলো, যে খাবারটিকে দুগ্ধজাত পণ্য হিসেবে বাজারজাত করা হয়, তাতে দুধের উপস্থিতি নেই।”

পরীক্ষাগুলো একটি সরকারি খাদ্য নিরাপত্তা গবেষণাগারে করা হয়েছে বলে মামলায় তথ্য দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে উৎপাদিত একটি চকোলেট-কোটেড ওয়েফারের সর্বোচ্চ দাম ২০ টাকা। তবে নেসলের বাজারজাত করা কিটক্যাট ভারত থেকে আমদানির পর বাংলাদেশে ৬০ থেকে ১৩৫ টাকা দামের মধ্যে বিক্রি হয়।

তবে নেসলে বাংলাদেশের কোম্পানি সচিব দেবব্রত রায় চৌধুরী বলেন, “কিটক্যাট এর মত প্রোডাক্টের জন্য বিএসটিআই কোনো ‘স্ট্যান্ডার্ড ডেভেলপ’ করেনি। যে কারণে কিটক্যাটে কিন্তু বিএসটিআই’র কোনো সিল থাকে না। তারা যে স্ট্যান্ডার্ড ডেভেলপ করেছে সেটা চকলেট বিস্কুটের। এ বিষয়ে তারা আমাদের একটি এনওসি দিয়েছে।”

দুবাই ও ভারত থেকে কিটক্যাট আমদানি করার দাবি করে এ কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের এই পণ্য পরীক্ষা করে সরকারের আরেকটি সংস্থা বিসিএসআইআর। প্রত্যেকটা কনসাইনমেন্ট ছাড়ের জন্য এ পণ্য পরীক্ষার পর বিসিএসআইআর এর প্রতিবেদন নেওয়া হয়। সেটি দেখেই পণ্যটির ছাড়পত্র দেয় কাস্টমস।”

নেসলের পণ্যে গড়বড় করার কোনো সুযোগ নেই দাবি করে কোম্পানি সচিব বলেন, “সারা পৃথিবীতে কিটক্যাট প্রোডাক্টটা বিক্রি হয়। ওটা খুবই সংবেদনশীল, যে কারণে ওটা একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “তারা (মামলাকারী) আমাদের সঙ্গে অফিসিয়ালি কোনো যোগাযোগই করেনি। যখন আমাদের ডিস্ট্রিবিউটারের সাথে যোগাযোগ করছে তখন সাথে সাথেই তারা কাগজপত্র জমা দিয়েছে। এরপরেও আমি খুবই অবাক হচ্ছি সে মামলা করে দিয়েছে।

”উনি সবাইকে ইগনোর (আমলে নিচ্ছেন না) করছেন। আমরা বিদেশি বিনিয়োগকারী। ৩২ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। কখনো এরকম হয়নি। এরকম করলে আমরা কীভাবে ব্যবসা করব।”

মামলায় অভিযোগ করা হয়, কিটক্যাট বিএসটিআই এর কোনো অনুমোদন ও প্রত্যয়ন ছাড়াই পণ্য বাজারজাত করছে।

অপর মামলার অভিযোগে বলা হয়, মেঘনা সুগার মিলের উৎপাদিত চিনির একটি নমুনায় ন্যূনতম অনুমোদিত ৯৯.৭০ শতাংশের বিপরীতে ৭৭.৩৫ শতাংশ ‘সুক্রোজ’ পাওয়া গেছে।

একই চিনির নমুনায় সালফার ডাই-অক্সাইড পরীক্ষায় ০.০৮ পিপিএম পাওয়া যায়। বিএসটিআই মানদণ্ড অনুযায়ী, চিনিতে সালফার ডাই-অক্সাইডের কোনো উপস্থিতি থাকার কথা নয় বলে মামলার আবেদনে বলা হয়েছে।

খাদ্য পরিদর্শক কামরুল বলেন, “সালফার ডাই-অক্সাইড হলো একটি প্রিজারভেটিভ এবং এটি কৃত্রিমভাবে চিনি সাদা করতে ব্যবহৃত হয়।”

আর চিনিতে কমমাত্রার সুক্রোজ থাকার অর্থ এতে চিনির বদলে ‘কৃত্রিম মিষ্টি করার উপাদান’ ব্যবহার করা হয়েছে, ব্যাখায় বলেন ওই কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে মেঘনা সুগারের বক্তব্য জানা যায়নি। তাদের বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হয় মেঘনা গ্রুপের জনসংযোগ বিভাগের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে।

হাবিব উল্ল্যাহ নামের ওই কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মামলার বিষয়ে কী তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে- সে বিষয়ে জানতে চান এবং হোয়াটসঅ্যাপে তা পাঠাতে বলেন।

তার হোয়াটঅ্যাপে মামলায় করা অভিযোগের বিষয়ে জানানো হয়। তবে পরে বক্তব্যের জন্য যোগাযোগ করেও তার আর সাড়া পাওয়া যায়নি।

নিরাপদ খাদ্য আদালত মামলাগুলোর পরবর্তী শুনানির জন্য ১৫ ডিসেম্বর ঠিক করেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

কিটক্যাটে নিম্নমানের চিনি, নেসলে ও মেঘনা গ্রুপের প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ০৮:০৭:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫

দেশে ‘নিম্নমানের খাদ্যপণ্য উৎপাদন, আমদানি ও বাজারজাত’ করার অভিযোগে নেসলে বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ দুইজন এবং মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ঢাকার নিরাপদ খাদ্য আদালত।

সোমবার দুটি পৃথক মামলায় স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত সাহারা বিথী এ আদেশ দেন।

মামলা দুটির বাদী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের খাদ্য পরিদর্শক কামরুল হাসান নিরাপদ খাদ্য আদালতর এমন আদেশ হওয়ার কথা বলেছেন।

এর মধ্যে একটি মামলায় বাংলাদেশের বাজারে ‘নিম্নমানের’ কিটক্যাট চকলেট বাজারজাতের অভিযোগে নেসলে বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিপাল আবে বিক্রমা ও পাবলিক পলিসি ম্যানেজার রিয়াসাদ জামানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ান জারি করে আদালত।

একই দিনে আরেক আদেশে একই আদালত ‘সালফার ডাই অক্সাইড সমৃদ্ধ’ নিম্নমানের চিনি প্রস্তুতের দায়ে মেঘনা সুগার রিফাইনারির কর্ণধার মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।

চিনি উৎপাদনকারী মেঘনা সুগার রিফাইনারি ব্যবসায়িক গোষ্ঠী মেঘনা গ্রুপের একটি কোম্পানি, যেটির গ্রুপ চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল।

মামলা দুটির বাদী খাদ্য পরিদর্শক কামরুল যাচাই বাছাইয়ে পাওয়া তথ্যের বরাতে বলেন, খাদ্য উৎপাদনকারী কোম্পানি দুটি ‘জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করে নিম্নমানের পণ্য’ বিক্রি করছে।

এর মধ্যে কিটক্যাট বিএসটিআইয়ের ‘অনুমোদন ও প্রত্যয়ন’ ছাড়াই পণ্য বাজারজাত করছে বলে একটি মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

আর মেঘনা সুগারের বিরুদ্ধে আরেক মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, এ কোম্পানির চিনিতে ‘চিনির মাত্রা কম ও সালফারের উপস্থিতি’ পাওয়া গেছে।

পরিদর্শক কামরুল বলেন, “প্রথম মামলাটি দায়ের করা হয়েছে নেসলে উৎপাদিত কিটক্যাট চকলেট-কোটেড ওয়েফার পরীক্ষা করে নিম্নমানের প্রমাণ পাওয়ার পর। দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্যটির নমুনা ওয়েফার বিস্কুট এবং তার চকোলেট আবরণ—দুটি ভাগে পরীক্ষা করা হয়েছিল।“

এ মামলার অভিযোগের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এর মানদণ্ডে অনুমোদিত সর্বাধিক ১ শতাংশের বিপরীতে ওয়েফার বিস্কুটটিতে ২.৩২ শতাংশ অম্লতা (অ্যাসিডিটি) পাওয়া যায়। আবরণে ব্যবহৃত চকলেটে অনুমোদিত ১২ থেকে ১৪ শতাংশের পরিবর্তে ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ দুধের কঠিন পদার্থ ছিল। একই পণ্যে দুধের ফ্যাট বা চর্বির পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ২৩ শতাংশ, যা মানসম্মত পরিমাণ ২.৫ থেকে ৩.৫ শতাংশ সীমার বেশ নিচে।

ওই খাদ্য পরিদর্শক বলেন, “উচ্চ অ্যাসিডিটি পচন নির্দেশ করে বা সহজভাবে বললে বোঝায় যে খাবারটি পচা।”

তার ভাষ্য, “মানদণ্ডের সীমার চেয়ে কম দুধের কঠিন পদার্থ এবং দুধের ফ্যাট থাকার অর্থ হলো, যে খাবারটিকে দুগ্ধজাত পণ্য হিসেবে বাজারজাত করা হয়, তাতে দুধের উপস্থিতি নেই।”

পরীক্ষাগুলো একটি সরকারি খাদ্য নিরাপত্তা গবেষণাগারে করা হয়েছে বলে মামলায় তথ্য দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে উৎপাদিত একটি চকোলেট-কোটেড ওয়েফারের সর্বোচ্চ দাম ২০ টাকা। তবে নেসলের বাজারজাত করা কিটক্যাট ভারত থেকে আমদানির পর বাংলাদেশে ৬০ থেকে ১৩৫ টাকা দামের মধ্যে বিক্রি হয়।

তবে নেসলে বাংলাদেশের কোম্পানি সচিব দেবব্রত রায় চৌধুরী বলেন, “কিটক্যাট এর মত প্রোডাক্টের জন্য বিএসটিআই কোনো ‘স্ট্যান্ডার্ড ডেভেলপ’ করেনি। যে কারণে কিটক্যাটে কিন্তু বিএসটিআই’র কোনো সিল থাকে না। তারা যে স্ট্যান্ডার্ড ডেভেলপ করেছে সেটা চকলেট বিস্কুটের। এ বিষয়ে তারা আমাদের একটি এনওসি দিয়েছে।”

দুবাই ও ভারত থেকে কিটক্যাট আমদানি করার দাবি করে এ কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের এই পণ্য পরীক্ষা করে সরকারের আরেকটি সংস্থা বিসিএসআইআর। প্রত্যেকটা কনসাইনমেন্ট ছাড়ের জন্য এ পণ্য পরীক্ষার পর বিসিএসআইআর এর প্রতিবেদন নেওয়া হয়। সেটি দেখেই পণ্যটির ছাড়পত্র দেয় কাস্টমস।”

নেসলের পণ্যে গড়বড় করার কোনো সুযোগ নেই দাবি করে কোম্পানি সচিব বলেন, “সারা পৃথিবীতে কিটক্যাট প্রোডাক্টটা বিক্রি হয়। ওটা খুবই সংবেদনশীল, যে কারণে ওটা একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “তারা (মামলাকারী) আমাদের সঙ্গে অফিসিয়ালি কোনো যোগাযোগই করেনি। যখন আমাদের ডিস্ট্রিবিউটারের সাথে যোগাযোগ করছে তখন সাথে সাথেই তারা কাগজপত্র জমা দিয়েছে। এরপরেও আমি খুবই অবাক হচ্ছি সে মামলা করে দিয়েছে।

”উনি সবাইকে ইগনোর (আমলে নিচ্ছেন না) করছেন। আমরা বিদেশি বিনিয়োগকারী। ৩২ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। কখনো এরকম হয়নি। এরকম করলে আমরা কীভাবে ব্যবসা করব।”

মামলায় অভিযোগ করা হয়, কিটক্যাট বিএসটিআই এর কোনো অনুমোদন ও প্রত্যয়ন ছাড়াই পণ্য বাজারজাত করছে।

অপর মামলার অভিযোগে বলা হয়, মেঘনা সুগার মিলের উৎপাদিত চিনির একটি নমুনায় ন্যূনতম অনুমোদিত ৯৯.৭০ শতাংশের বিপরীতে ৭৭.৩৫ শতাংশ ‘সুক্রোজ’ পাওয়া গেছে।

একই চিনির নমুনায় সালফার ডাই-অক্সাইড পরীক্ষায় ০.০৮ পিপিএম পাওয়া যায়। বিএসটিআই মানদণ্ড অনুযায়ী, চিনিতে সালফার ডাই-অক্সাইডের কোনো উপস্থিতি থাকার কথা নয় বলে মামলার আবেদনে বলা হয়েছে।

খাদ্য পরিদর্শক কামরুল বলেন, “সালফার ডাই-অক্সাইড হলো একটি প্রিজারভেটিভ এবং এটি কৃত্রিমভাবে চিনি সাদা করতে ব্যবহৃত হয়।”

আর চিনিতে কমমাত্রার সুক্রোজ থাকার অর্থ এতে চিনির বদলে ‘কৃত্রিম মিষ্টি করার উপাদান’ ব্যবহার করা হয়েছে, ব্যাখায় বলেন ওই কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে মেঘনা সুগারের বক্তব্য জানা যায়নি। তাদের বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হয় মেঘনা গ্রুপের জনসংযোগ বিভাগের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে।

হাবিব উল্ল্যাহ নামের ওই কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মামলার বিষয়ে কী তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে- সে বিষয়ে জানতে চান এবং হোয়াটসঅ্যাপে তা পাঠাতে বলেন।

তার হোয়াটঅ্যাপে মামলায় করা অভিযোগের বিষয়ে জানানো হয়। তবে পরে বক্তব্যের জন্য যোগাযোগ করেও তার আর সাড়া পাওয়া যায়নি।

নিরাপদ খাদ্য আদালত মামলাগুলোর পরবর্তী শুনানির জন্য ১৫ ডিসেম্বর ঠিক করেছে।