ঢাকা ০২:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ

রংপুরে নেসকোর প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধের দাবি

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব্যুরো
  • Update Time : ০৭:৪৫:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
  • / ২৭ Time View

জবরদস্তিমূলকভাবে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের প্রতিবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ গ্রাহক ও নাগরিক সমাজ। জনস্বার্থ উপেক্ষা করে নেসকোর চাপের মুখে বাড়ি–বাড়ি প্রিপেইড মিটার বসানোর অভিযোগ তুলে রংপুর মহানগর নাগরিক কমিটি জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছে। প্রিপেইড মিটার পদ্ধতিতে আর্থিক ক্ষতি, তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়া ও হয়রানির আশঙ্কায় গ্রাহকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ২টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কমিটির সদস্য সচিব এডভোকেট পলাশ কান্তি নাগের নেতৃত্বে স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হোসেন, নীরেন্দ্রনাথ রায়, আব্দুল জব্বার, এবিএম মসিউর রহমান, এডভোকেট খায়রুল ইসলাম বাপ্পী, আলোকচিত্রী ফিরোজ চৌধুরী, আব্দুল হামিদ বাবু, মাহফুজার রহমান, এডভোকেট শারমিন আক্তার, এডভোকেট মামুন, সবুজ রায়, নুরুন্নবী বুলবুল প্রমুখ।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) রংপুর নগরীতে বাসা–বাড়ি, দোকানপাট ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রিপেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রম জোরদার করেছে। গ্রাহকদের আপত্তি ও পূর্বের প্রশাসনিক নির্দেশনা সত্ত্বেও নেসকো বিভিন্ন কৌশলে জোরপূর্বক মিটার স্থাপন করছে। অনেক ক্ষেত্রে জবরদস্তির অভিযোগও উঠেছে।

স্মারকলিপিতে অবিলম্বে হয়রানিমূলক প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ এবং ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারের কার্যকর হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়।

রংপুর মহানগর নাগরিক কমিটি সদস্য সচিব এডভোকেট পলাশ কান্তি নাগ বলেন, গ্রাহকদের মতামত গণশুনানি ছাড়াই নেসকো একতরফাভাবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে। প্রিপেইড মিটারের মাধ্যমে আগাম অর্থ পরিশোধ, ব্যালেন্স শেষ হলে তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঝুঁকি এবং মিটার ভাড়া, এজেন্ট কমিশন, জরিমানা ও সারচার্জসহ নানা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে গ্রাহকদের। যা বিদ্যুৎ আইন ২০০৩-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

তিনি আরও বলেন, প্রিপেইড মিটার পদ্ধতি চালুর পেছনে রাজনৈতিক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট লাভবান হচ্ছে। বিগত সরকার আমলে নেওয়া সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় নির্দিষ্ট একটি চক্রকে সুবিধা দিতে কোটি কোটি টাকার মিটার কেনাসহ অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হোসেন বলেন, প্রিপেইড মিটারে ব্যালেন্স শেষ হয়ে গেলে সুদসহ জরিমানা দিতে হচ্ছে। সার্ভার ডাউন হলে গ্রাহকরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অন্ধকারে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। কৃষিখাতে সেচ পাম্প ব্যবহারকারীরা আগের মতো বাকিতে বিদ্যুৎ নিতে পারছেন না, ফলে চাষাবাদ ব্যহত হচ্ছে। পাশাপাশি এই পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ বিভাগের হাজারো কর্মচারীর চাকরি হারানোর আশঙ্কাও রয়েছে।

বক্তারা বলেন, প্রিপেইড মিটার চালু করা হলে সাধারণ মানুষ নতুন করে হয়রানি ও আর্থিক দুর্ভোগে পড়বে। বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি, ক্যাপাসিটি চার্জ ও অতীতের লোপাট হওয়া হাজার হাজার কোটি টাকার দায়ও জনগণকেই বহন করতে হচ্ছে।

রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসান বলেন, স্মারকলিপি পেয়েছি। খুব দ্রুত তা সংশ্লিষ্টদের নিকট ফরওয়ার্ড করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

রংপুরে নেসকোর প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধের দাবি

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব্যুরো
Update Time : ০৭:৪৫:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫

জবরদস্তিমূলকভাবে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের প্রতিবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ গ্রাহক ও নাগরিক সমাজ। জনস্বার্থ উপেক্ষা করে নেসকোর চাপের মুখে বাড়ি–বাড়ি প্রিপেইড মিটার বসানোর অভিযোগ তুলে রংপুর মহানগর নাগরিক কমিটি জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছে। প্রিপেইড মিটার পদ্ধতিতে আর্থিক ক্ষতি, তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়া ও হয়রানির আশঙ্কায় গ্রাহকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ২টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কমিটির সদস্য সচিব এডভোকেট পলাশ কান্তি নাগের নেতৃত্বে স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হোসেন, নীরেন্দ্রনাথ রায়, আব্দুল জব্বার, এবিএম মসিউর রহমান, এডভোকেট খায়রুল ইসলাম বাপ্পী, আলোকচিত্রী ফিরোজ চৌধুরী, আব্দুল হামিদ বাবু, মাহফুজার রহমান, এডভোকেট শারমিন আক্তার, এডভোকেট মামুন, সবুজ রায়, নুরুন্নবী বুলবুল প্রমুখ।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) রংপুর নগরীতে বাসা–বাড়ি, দোকানপাট ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রিপেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রম জোরদার করেছে। গ্রাহকদের আপত্তি ও পূর্বের প্রশাসনিক নির্দেশনা সত্ত্বেও নেসকো বিভিন্ন কৌশলে জোরপূর্বক মিটার স্থাপন করছে। অনেক ক্ষেত্রে জবরদস্তির অভিযোগও উঠেছে।

স্মারকলিপিতে অবিলম্বে হয়রানিমূলক প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ এবং ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নে সরকারের কার্যকর হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়।

রংপুর মহানগর নাগরিক কমিটি সদস্য সচিব এডভোকেট পলাশ কান্তি নাগ বলেন, গ্রাহকদের মতামত গণশুনানি ছাড়াই নেসকো একতরফাভাবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে। প্রিপেইড মিটারের মাধ্যমে আগাম অর্থ পরিশোধ, ব্যালেন্স শেষ হলে তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঝুঁকি এবং মিটার ভাড়া, এজেন্ট কমিশন, জরিমানা ও সারচার্জসহ নানা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে গ্রাহকদের। যা বিদ্যুৎ আইন ২০০৩-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

তিনি আরও বলেন, প্রিপেইড মিটার পদ্ধতি চালুর পেছনে রাজনৈতিক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট লাভবান হচ্ছে। বিগত সরকার আমলে নেওয়া সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় নির্দিষ্ট একটি চক্রকে সুবিধা দিতে কোটি কোটি টাকার মিটার কেনাসহ অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হোসেন বলেন, প্রিপেইড মিটারে ব্যালেন্স শেষ হয়ে গেলে সুদসহ জরিমানা দিতে হচ্ছে। সার্ভার ডাউন হলে গ্রাহকরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অন্ধকারে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। কৃষিখাতে সেচ পাম্প ব্যবহারকারীরা আগের মতো বাকিতে বিদ্যুৎ নিতে পারছেন না, ফলে চাষাবাদ ব্যহত হচ্ছে। পাশাপাশি এই পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ বিভাগের হাজারো কর্মচারীর চাকরি হারানোর আশঙ্কাও রয়েছে।

বক্তারা বলেন, প্রিপেইড মিটার চালু করা হলে সাধারণ মানুষ নতুন করে হয়রানি ও আর্থিক দুর্ভোগে পড়বে। বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি, ক্যাপাসিটি চার্জ ও অতীতের লোপাট হওয়া হাজার হাজার কোটি টাকার দায়ও জনগণকেই বহন করতে হচ্ছে।

রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসান বলেন, স্মারকলিপি পেয়েছি। খুব দ্রুত তা সংশ্লিষ্টদের নিকট ফরওয়ার্ড করা হবে।