সিরিজ নিশ্চিত
আয়ারল্যান্ডের প্রতিরোধ ভেঙে দাপুটে জয় বাংলাদেশের
- Update Time : ০২:৪৬:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
- / ২৪ Time View
৬ উইকেটে ১৭৬ রান নিয়ে পঞ্চম দিনের খেলা শুরু করেছিল আয়ারল্যান্ড। অনেকেই ভেবেছিলেন প্রথম সেশনেই হয়তো টেস্ট জিতে নেবে বাংলাদেশ। সেটি আর হয়নি। পঞ্চম দিনে ৪ উইকেট পেতে প্রায় ৬০ ওভার বোলিং করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। শেষ পর্যন্ত আইরিশরা গুটিয়ে গেছে ১১৩.৩ ওভারে ২৯১ রান করে। চতুর্থ ইনিংসে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ গড়েও আয়ারল্যান্ড হেরে গেছে ২১৭ রানে। মিরপুরে চতুর্থ ইনিংসে বল খেলার রেকর্ড গড়া কার্টিস ক্যাম্ফার ৭১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
মিরপুরে চতুর্থ ইনিংসে কোনো সফরকারী দল আগে কখনও ১০০ ওভার খেলেনি। কোনো সফরকারী দল চতুর্থ ইনিংসে আগে কখনো ২৫০ রান করতে পারেনি। এবার পেরেছে আয়ারল্যান্ড। বীরোচিত ব্যাটিং পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে শেষ দিনে বাংলাদেশকে অনেক ভুগিয়ে তবেই হার মেনেছে তারা। আইরিশ প্রতিরোধ ভেঙে জিতে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
মিরপুর টেস্টের শেষ দিনে আইরিশদের রেকর্ড গড়া ব্যাটিং পারফরম্যান্সের পর বাংলাদেশ জিতেছে ২২১ রানে। দুই ম্যাচের সিরিজ তারা প্রত্যাশিতভাবেই জিতে নিয়েছে ২-০ ব্যবধানে। স্রেফ চার উইকেট নিয়ে শেষ দিন শুরু করেও রোববার চমকপ্রদ ব্যাটিং পারফরম্যান্সে ৫৯.৩ ওভার ব্যাটিং করেন আইরিশরা। শেষ পর্যন্ত ১১৩.৩ ওভারে ২৯১ রানে থামে তাদের ইনিংস।
মিরপুর চতুর্থ ইনিংসে সফরকারী দলের সর্বোচ্চ ইনিংস আগে ছিল ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার ২৪৪। সবচেয়ে বেশি ওভার ছিল ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের ৮৩.১ ওভার। সাকিব আল হাসানকে টপকে আগের দিনই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড গড়েছিলেন তাইজুল ইসলাম। শেষ দিনে তিনি দেশের প্রথম বোলার হিসেবে স্পর্শ করেন ২৫০ উইকেট। ৫৭ টেস্টে এই মাইলফলকে পা রেখে বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে দ্রুততম হিসেবে তিনি ছুঁয়ে ফেলেন রাঙ্গানা হেরাথের বিশ্ব রেকর্ড।
দুই ইনিংসেই তার প্রাপ্তি চারটি উইকেট। আলাদা করে বলতে হবে হাসান মুরাদের কথাও। শেষ ইনিংসে চারটি উইকেট নিয়েছেন তিনিও। আয়ারল্যান্ডের নবম উইকেট জুটি যখন বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন তিনিই টানা দুই বলে শেষ দুই উইকেট নিয়ে নিশ্চিত করেছেন দলের জয়।।
৬ উইকেটে ১৭৬ রান নিয়ে দিন শুরু করে আয়ারল্যান্ড। কার্টিস ক্যাম্ফার ও অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন বাংলাদেশকে অপেক্ষায় রাখেন অনেকটা সময়। ২০৫ বলে ২৬ রানের জুটি গড়েন দুজন, যেখানে ক্যাম্ফারের অবদান ৫২ বলে ৩। ম্যাকব্রাইনকে (২১) ফিরিয়ে জুটি ভাঙার পাশাপাশি ২৫০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন তাইজুল। পরের জুটিতে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। ক্যাম্ফার যথারীতি এক প্রান্ত আগলেই ছিলেন। জর্ডান নিল খেলেন দারুণ কিছু শট। মেহেদী হাসান মিরাজের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ভাঙে ৪৮ রানের জুটি। ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৩০ করে বোল্ড হন নিল।
আইরিশ প্রতিরোধ পর্বে এরপর ক্যাম্ফার ও গ্যাভিন হোয়ের বীরত্ব। অভাবনীয় ব্যাটিং দক্ষতা দেখিয়ে বাংলাদেশের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে ওভারের পর ওভার কাটিয়ে দেন দুজন। শেষ পর্যন্ত ৫৪ রানের জুটি থামে ১৯১তম বলে। হাসান মুরাদের দারুণ ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হন হোয়ে। অভিষিক্ত লেগ স্পিনার ৩৭ রান করেন ১০৪ বল খেলে।পরের বলেই বোল্ড হয়ে যান শেষ ব্যাটসম্যান ম্যাথু হামফ্রিজ। জিতে যায় বাংলাদেশ।
২৫৯ বল লড়াই করে ৭১ রানে অপরাজিত থাকেন ক্যাম্ফার। মিরপুর চতুর্থ ইনিংসে এত বেশি বল খেলার কীর্তি নেই আর কারও। সেই ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে সাকিবের ২১২ ছিল আগের রেকর্ড। আয়ারল্যান্ডের হয়ে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি বল খেলার রেকর্ডেও ক্যাম্ফার ছাড়িয়ে যান নিজের আগের কীর্তিকে (২২৯ বল)। শেষ পর্যন্ত তারা হেরেছে। তবে লড়াইয়ে হাল ছাড়েনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪৭৬
আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৬৫
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ২৯৭/৪ (ডি.)
আয়ারল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৫০৯, আগের দিন ১৭৬/৬) ১১৩.৩ ওভারে ২৯১ (ক্যাম্ফার ৭১*, ম্যাকব্রাইন ২১, নিল ৩০, হোয়ে ৩৭, হামফ্রিজ ০; ইবাদত ১১-৩-২৯-০, তাইজুল ৪০-৭-১০৪-৪, খালেদ ১২-০-৪৫–১, মিরাজ ২৭-১১-৪৯-১, মুরাদ ২২.৩-১১-৪৪-৪, মুমিনুল ১-০২-০)।
ফল: বাংলাদেশ ২১৭ রানে জয়ী।
সিরিজ: দুই ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়







































































































































































































