ঢাকা ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভেঙে ফেলা হচ্ছে ভূমিকম্পে হেলে পড়া ভবনটি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৬:৫৮:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
  • / ৩৫ Time View

ঢাকার ধামরাইয়ে ভূমিকম্পে হেলে পড়া ভবন। ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকার ধামরাইয়ে ভূমিকম্পে হেলে পড়া ঝুঁকিপূর্ণ চারতলা ভবনটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর উপজেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল থেকে ভবনটি ভাঙা শুরু হয়। এর আগে, ২০২৪ সালের মে মাসে আংশিক হেলে পড়ে। শুক্রবারের ভূমিকম্পে আরও বেশি হেলে পড়ে ভবনটি।

শনিবার দুপুরের দিকে ধামরাই পৌরসভার ঢুলিভিটা এলাকায় গড়ে ওঠা ধানসিঁড়ি হাউজিং প্রকল্পে জিয়াউদ্দিন নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভাঙার কাজ করতে দেখা যায় শ্রমিকদের।

ভবন মালিক ও স্থানীয়রা জানান, ধানসিঁড়ি হাউজিং প্রকল্পের ভেতরে পাশাপাশি দুটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। দুই ভবনের মধ্যে ১০ ফুট জায়গায় করিডরের মতো আরেকটি চারতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এটির ভেতর দিয়েই পেছনের দিকে অপর মূল ভবনে ঢুকতে হয়। এই করিডরের মতো অংশটিই পাশের ছয় তলা ভবনের ওপর হেলে পড়ে।

ভবনটিতে ঢুকে দেখা যায়, করিডরের তৃতীয় তলার অংশটি পাশের ছয়তলা ভবনের ওপর হেলে রয়েছে। তিন তলার বারান্দার রেলিংয়ের ইটের গাঁথুনির অংশ ফেটে গেছে। তবে করিডরের আর কোথাও কোনও স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। করিডর দিয়ে ঢুকে চারতলা ভবনের ভেতরেও কোনও ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দেখা যায়নি।

ভবনের মালিকপক্ষ জানায়, ওই প্লটটিতে ছয় তলা ভবন করার অনুমতি ছিল। এর মধ্যে সেটি দুটি প্লট আকারে বিক্রি করেন মালিক। চার শতাংশের একটি অংশ কিনে নেন মো. রফিক নামে এক ব্যক্তি। তিনি সেখানে তিনতলা ভবন নির্মাণ করেন। আর পেছনের দুই শতাংশ জমি কিনে নেন জিয়াউদ্দিন। সেখানে তিনি নির্মাণ করেন চারতলা ভবন। এ ছাড়া তিনতলা ভবন ও পাশের অপর ছয়তলা ভবনের মাঝখানে সড়কের মতো থাকা প্রায় ১০ ফুট চওড়া এবং প্রায় ৪২ ফুট লম্বা জমি কিনে নিয়ে সেখানে করিডরের মতো বর্ধিত চারতলা সংযুক্ত ভবন নির্মাণ করেন জিয়াউদ্দিন। সেটিই ২০২৪ সালে প্রথম হেলে পড়ে। আর শুক্রবার পুরোপুরি কাত হয়ে যায়। প্রশাসনের নির্দেশে সকাল থেকেই ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু করে মালিকপক্ষ।

ভবনমালিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনের ছেলে মোনায়েম বলেন, ‘আগেই আমাদের এটা ভাঙার পরিকল্পনা ছিল। প্রশাসন যতটা ভাঙতে বলবে, সেটা ভাঙতাম। কিন্তু গতকাল ভূমিকম্প হয়েছে, যে কারণে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। যেজন্য দ্রুত এটা ভাঙার উদ্যোগ নিই। আজ সকাল থেকে ভাঙার কাজ চলছে। অর্ধেকের বেশি ভাঙা হয়ে গেছে। খুব দ্রুত ভাঙা শেষ হবে।’

ভবনটি হেলে পড়ার সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসন ও ভবনমালিক ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভাঙা শুরু করায় স্থানীয় বাসিন্দারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মামনুন আহমেদ অনীক বলেন, ‘গতকাল ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর আমরা ওখানে লোক পাঠাই। পরিদর্শনের পর ভবনটি ভেঙে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের দিকে অবশ্যই আমরা দায়িত্বশীল থাকবো।’

Please Share This Post in Your Social Media

ভেঙে ফেলা হচ্ছে ভূমিকম্পে হেলে পড়া ভবনটি

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ০৬:৫৮:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫

ঢাকার ধামরাইয়ে ভূমিকম্পে হেলে পড়া ঝুঁকিপূর্ণ চারতলা ভবনটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর উপজেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল থেকে ভবনটি ভাঙা শুরু হয়। এর আগে, ২০২৪ সালের মে মাসে আংশিক হেলে পড়ে। শুক্রবারের ভূমিকম্পে আরও বেশি হেলে পড়ে ভবনটি।

শনিবার দুপুরের দিকে ধামরাই পৌরসভার ঢুলিভিটা এলাকায় গড়ে ওঠা ধানসিঁড়ি হাউজিং প্রকল্পে জিয়াউদ্দিন নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভাঙার কাজ করতে দেখা যায় শ্রমিকদের।

ভবন মালিক ও স্থানীয়রা জানান, ধানসিঁড়ি হাউজিং প্রকল্পের ভেতরে পাশাপাশি দুটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। দুই ভবনের মধ্যে ১০ ফুট জায়গায় করিডরের মতো আরেকটি চারতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এটির ভেতর দিয়েই পেছনের দিকে অপর মূল ভবনে ঢুকতে হয়। এই করিডরের মতো অংশটিই পাশের ছয় তলা ভবনের ওপর হেলে পড়ে।

ভবনটিতে ঢুকে দেখা যায়, করিডরের তৃতীয় তলার অংশটি পাশের ছয়তলা ভবনের ওপর হেলে রয়েছে। তিন তলার বারান্দার রেলিংয়ের ইটের গাঁথুনির অংশ ফেটে গেছে। তবে করিডরের আর কোথাও কোনও স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। করিডর দিয়ে ঢুকে চারতলা ভবনের ভেতরেও কোনও ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দেখা যায়নি।

ভবনের মালিকপক্ষ জানায়, ওই প্লটটিতে ছয় তলা ভবন করার অনুমতি ছিল। এর মধ্যে সেটি দুটি প্লট আকারে বিক্রি করেন মালিক। চার শতাংশের একটি অংশ কিনে নেন মো. রফিক নামে এক ব্যক্তি। তিনি সেখানে তিনতলা ভবন নির্মাণ করেন। আর পেছনের দুই শতাংশ জমি কিনে নেন জিয়াউদ্দিন। সেখানে তিনি নির্মাণ করেন চারতলা ভবন। এ ছাড়া তিনতলা ভবন ও পাশের অপর ছয়তলা ভবনের মাঝখানে সড়কের মতো থাকা প্রায় ১০ ফুট চওড়া এবং প্রায় ৪২ ফুট লম্বা জমি কিনে নিয়ে সেখানে করিডরের মতো বর্ধিত চারতলা সংযুক্ত ভবন নির্মাণ করেন জিয়াউদ্দিন। সেটিই ২০২৪ সালে প্রথম হেলে পড়ে। আর শুক্রবার পুরোপুরি কাত হয়ে যায়। প্রশাসনের নির্দেশে সকাল থেকেই ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু করে মালিকপক্ষ।

ভবনমালিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনের ছেলে মোনায়েম বলেন, ‘আগেই আমাদের এটা ভাঙার পরিকল্পনা ছিল। প্রশাসন যতটা ভাঙতে বলবে, সেটা ভাঙতাম। কিন্তু গতকাল ভূমিকম্প হয়েছে, যে কারণে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। যেজন্য দ্রুত এটা ভাঙার উদ্যোগ নিই। আজ সকাল থেকে ভাঙার কাজ চলছে। অর্ধেকের বেশি ভাঙা হয়ে গেছে। খুব দ্রুত ভাঙা শেষ হবে।’

ভবনটি হেলে পড়ার সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসন ও ভবনমালিক ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভাঙা শুরু করায় স্থানীয় বাসিন্দারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মামনুন আহমেদ অনীক বলেন, ‘গতকাল ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর আমরা ওখানে লোক পাঠাই। পরিদর্শনের পর ভবনটি ভেঙে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের দিকে অবশ্যই আমরা দায়িত্বশীল থাকবো।’