ঢাকা ০৭:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে ইবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা

ইবি প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৫:০৫:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
  • / ২১ Time View

ইসলামী শিক্ষার সাথে আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ে উচ্চশিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)।

১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর শান্তিডঙ্গা- দুলালপুর কুষ্টিয়া -ঝিনাইদহ সীমান্তে এ প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মূলত শিক্ষা প্রশিক্ষণ এবং গবেষণার কাজ শুরু করে ১৯৮৬ সাল থেকে। শনিবার ২২ নভেম্বর ২০২৫ বিশ্ববিদ্যালয়টি ৪৬ বছর পেরিয়ে ৪৭ বছরে পদার্পণ করেছে। বর্তমানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯টি অনুষদের অধিনে ৩৬ বিভাগ চালু আছে, ২০২৫ -২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন অনুষদের অধীনে আরও দু’টি বিভাগ চালু হতে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য মতে এখানে ১৯ হাজার ৮৯৭ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে। বর্তমান পরিপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে একাডেমিক কার্যক্রম চালু রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে শিক্ষার্থীদের থাকে নানান ধরনের আবেগ-অনুভূতি, দাবি-দাওয়া ও অনুপ্রেরণার গল্প। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে ইবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা তুলে ধরেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো.আশরাফুল ইসলাম।

তামান্না তাসনিম তারিন
ইংরেজি বিভাগ

স্বাধীনতার পর প্রতিষ্ঠিত প্রথম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, আমাদের স্বপ্ন, পরিশ্রম, সংগ্রাম আর বেড়ে ওঠার গল্প। প্রতিদিনের ক্লাস, লাইব্রেরির শান্ত দুপুর, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, আর শিক্ষকদের অনুপ্রেরণা—সব মিলিয়ে ইবি আমার জীবনের খুব মূল্যবান একটি অধ্যায়। এটি শুধু উদযাপনের দিন নয়; আমাদের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবার একটি দিন।পাশাপাশি আমি আশা রাখবো— যেসকল বিষয়ে আমরা অন্যদের থেকে পিছিয়ে আছি সেগুলোয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় আগামী দিনে সাফল্য অর্জন করে এগিয়ে যেতে পারবো।

নাজমুল ইসলাম আরাফাত
আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগ

আমরা সর্বদা স্বপ্ন দেখি এক সুন্দর আগামীর। সেই সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো শিক্ষার্থীর পদচারণা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭৫ একরের সবুজ চত্বরে। এ বিদ্যাপীঠ প্রতিষ্ঠার পেছনে রয়েছে এদেশের ইসলামপ্রিয় মানুষের গভীর আবেগ ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা। ইসলাম ও আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বিত উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত আমাদের এই প্রাণপ্রিয় প্রতিষ্ঠানটি নবযাত্রা শুরু।​ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা একজন শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন সংকট অত্যন্ত পীড়াদায়ক একটি বাস্তবতা। তাই, আমি জোরালো দাবি জানাই—প্রশাসন দ্রুত সকল প্রকার আবাসন সংকট কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে শতভাগ আবাসিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করুক।

​ক্যান্টিনের খাবারের গুণগত মান নিশ্চিত করা, শিক্ষক সংকট নিরসন ও ক্লাসরুম সংকট দূরীকরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে প্রশাসন। তবুও স্বপ্নের পথে ছুটে চলা এই স্বাপ্নিকের স্বপ্নগুলো পূর্ণতা লাভ করুক।

মোবাশ্বির উল্লাহ
আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ

এ বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত হয়েছিল এমন একটি শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে, যেখানে শিক্ষার্থীরা ইসলামী জ্ঞান এবং আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ে প্রস্তুত হবে। লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীরা কেবল ধর্মীয় তত্ত্বই না শিখবে, বরং আধুনিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সমাজবিজ্ঞান, ব্যবসায় প্রশাসন ও মানবিক শাখাতেও দক্ষতা অর্জন করবে। এর মাধ্যমে তারা দেশের নৈতিক, সাংস্কৃতিক ও জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।

প্রারম্ভে আশা করা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি হবে দেশের ইসলামী গবেষণার মানদণ্ড নির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠান। এখানে শিক্ষার্থীরা আল-কুরআন, হাদিস, ফিকহ, ইসলামের ইতিহাস, দাওয়াহ, ইসলামী অর্থনীতি, নৈতিক দর্শন, তুলনামূলক ধর্ম, আরবি সাহিত্য ও ভাষা, ইসলাম ও আধুনিক সমাজবিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর উচ্চতর গবেষণা করবে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ, পাণ্ডুলিপি গবেষণা, ভাষা শিক্ষা এবং আধুনিক গবেষণার পদ্ধতিতে দক্ষ হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় দেশে ইসলামী চিন্তাধারাকে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করার লক্ষ্য স্থাপন করেছিল। কিন্তু বাস্তবতা প্রত্যাশার সঙ্গে পুরোপুরি মিলছে না। Theology & Islamic Studies অনুষদভুক্ত বিভাগ, ব্যবসায় প্রশাসনের কিছু বিভাগ, আইন বিভাগসহ হাতে গোনা কয়েকটি বিভাগ ছাড়া বলার মতো তেমন কারোর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেই। ইসলামী শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বয় এখনও প্রত্যাশামতো নয়। দুটি ধারাই স্বাধীন গতিতে চলছে এবং সমন্বিত কাঠামো পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত বাজেট নেই, ফলে শিক্ষার্থীরা গভীর গবেষণায় মনোযোগ দিতে পারছে না। দেশের চাকরিনির্ভর নীতি শিক্ষার্থীদের গবেষণার চেয়ে চাকরি প্রস্তুতিতে মনোযোগী করছে। ফলস্বরূপ, শিক্ষার্থীদের অনেকেই গবেষণার পরিবর্তে চাকরিপ্রস্তুতিতে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে।

আফরিন আক্তার মৌ
ইংরেজি বিভাগ

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়া অনেকের কাছে খুব বড় স্বপ্ন পূরণ বা সাধনার বিষয় হিসেবে গণ্য হওয়ার পাশাপাশি তা হতে পারে গ্রাম কিংবা শহর থেকে আসা শিক্ষার্থীর অভাবনীয় প্রাপ্তি।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর নবীন শিক্ষার্থীরা তাদের স্বপ্ন,কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য নিয়ে পদার্পন করে সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ৪৬ বছর পরেও বিশ্ববিদ্যালয়টি যেন নানা সমস্যায় জর্জরিত যা দিন দিন শিক্ষার্থীদের অগ্রগতির পথে অন্তরায়। এছাড়াও জুলাই আন্দোলনের পরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আশার আলো ছড়িয়ে পরে, উন্মদনার সৃষ্টি হয় এবং জাগরণ ঘটে। শুরুর দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেশনজট নিরসন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চত করা ইত্যাদি বিষয়গুলোর উপর মনোযোগ দিলেও এখনও আমূল পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়নি। চলতি বছরেই এক শিক্ষর্থীকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকারীকে শনাক্ত করতে পারেনি যা বাকি শিক্ষার্থীদের কাছে একইসাথে ভীতি ও হতাশার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থার ঘাটতি, গবেষণায় উদাসীনতা, আবাসন সংকট ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর উপর যথাযথ গুরুত্ব আরোপ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত সমস্যা সমাধান করতে পারলে তা হবে প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য আশীর্বাদ এবং সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা।

Please Share This Post in Your Social Media

বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে ইবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা

ইবি প্রতিনিধি
Update Time : ০৫:০৫:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫

ইসলামী শিক্ষার সাথে আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ে উচ্চশিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)।

১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর শান্তিডঙ্গা- দুলালপুর কুষ্টিয়া -ঝিনাইদহ সীমান্তে এ প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মূলত শিক্ষা প্রশিক্ষণ এবং গবেষণার কাজ শুরু করে ১৯৮৬ সাল থেকে। শনিবার ২২ নভেম্বর ২০২৫ বিশ্ববিদ্যালয়টি ৪৬ বছর পেরিয়ে ৪৭ বছরে পদার্পণ করেছে। বর্তমানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯টি অনুষদের অধিনে ৩৬ বিভাগ চালু আছে, ২০২৫ -২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন অনুষদের অধীনে আরও দু’টি বিভাগ চালু হতে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য মতে এখানে ১৯ হাজার ৮৯৭ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে। বর্তমান পরিপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে একাডেমিক কার্যক্রম চালু রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে শিক্ষার্থীদের থাকে নানান ধরনের আবেগ-অনুভূতি, দাবি-দাওয়া ও অনুপ্রেরণার গল্প। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে ইবি শিক্ষার্থীদের ভাবনা তুলে ধরেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো.আশরাফুল ইসলাম।

তামান্না তাসনিম তারিন
ইংরেজি বিভাগ

স্বাধীনতার পর প্রতিষ্ঠিত প্রথম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি শুধু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, আমাদের স্বপ্ন, পরিশ্রম, সংগ্রাম আর বেড়ে ওঠার গল্প। প্রতিদিনের ক্লাস, লাইব্রেরির শান্ত দুপুর, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, আর শিক্ষকদের অনুপ্রেরণা—সব মিলিয়ে ইবি আমার জীবনের খুব মূল্যবান একটি অধ্যায়। এটি শুধু উদযাপনের দিন নয়; আমাদের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবার একটি দিন।পাশাপাশি আমি আশা রাখবো— যেসকল বিষয়ে আমরা অন্যদের থেকে পিছিয়ে আছি সেগুলোয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় আগামী দিনে সাফল্য অর্জন করে এগিয়ে যেতে পারবো।

নাজমুল ইসলাম আরাফাত
আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগ

আমরা সর্বদা স্বপ্ন দেখি এক সুন্দর আগামীর। সেই সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো শিক্ষার্থীর পদচারণা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭৫ একরের সবুজ চত্বরে। এ বিদ্যাপীঠ প্রতিষ্ঠার পেছনে রয়েছে এদেশের ইসলামপ্রিয় মানুষের গভীর আবেগ ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা। ইসলাম ও আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমন্বিত উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত আমাদের এই প্রাণপ্রিয় প্রতিষ্ঠানটি নবযাত্রা শুরু।​ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা একজন শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন সংকট অত্যন্ত পীড়াদায়ক একটি বাস্তবতা। তাই, আমি জোরালো দাবি জানাই—প্রশাসন দ্রুত সকল প্রকার আবাসন সংকট কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে শতভাগ আবাসিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করুক।

​ক্যান্টিনের খাবারের গুণগত মান নিশ্চিত করা, শিক্ষক সংকট নিরসন ও ক্লাসরুম সংকট দূরীকরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে প্রশাসন। তবুও স্বপ্নের পথে ছুটে চলা এই স্বাপ্নিকের স্বপ্নগুলো পূর্ণতা লাভ করুক।

মোবাশ্বির উল্লাহ
আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ

এ বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত হয়েছিল এমন একটি শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে, যেখানে শিক্ষার্থীরা ইসলামী জ্ঞান এবং আধুনিক শিক্ষার সমন্বয়ে প্রস্তুত হবে। লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীরা কেবল ধর্মীয় তত্ত্বই না শিখবে, বরং আধুনিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সমাজবিজ্ঞান, ব্যবসায় প্রশাসন ও মানবিক শাখাতেও দক্ষতা অর্জন করবে। এর মাধ্যমে তারা দেশের নৈতিক, সাংস্কৃতিক ও জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।

প্রারম্ভে আশা করা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি হবে দেশের ইসলামী গবেষণার মানদণ্ড নির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠান। এখানে শিক্ষার্থীরা আল-কুরআন, হাদিস, ফিকহ, ইসলামের ইতিহাস, দাওয়াহ, ইসলামী অর্থনীতি, নৈতিক দর্শন, তুলনামূলক ধর্ম, আরবি সাহিত্য ও ভাষা, ইসলাম ও আধুনিক সমাজবিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর উচ্চতর গবেষণা করবে। এছাড়া শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ, পাণ্ডুলিপি গবেষণা, ভাষা শিক্ষা এবং আধুনিক গবেষণার পদ্ধতিতে দক্ষ হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় দেশে ইসলামী চিন্তাধারাকে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করার লক্ষ্য স্থাপন করেছিল। কিন্তু বাস্তবতা প্রত্যাশার সঙ্গে পুরোপুরি মিলছে না। Theology & Islamic Studies অনুষদভুক্ত বিভাগ, ব্যবসায় প্রশাসনের কিছু বিভাগ, আইন বিভাগসহ হাতে গোনা কয়েকটি বিভাগ ছাড়া বলার মতো তেমন কারোর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেই। ইসলামী শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বয় এখনও প্রত্যাশামতো নয়। দুটি ধারাই স্বাধীন গতিতে চলছে এবং সমন্বিত কাঠামো পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত বাজেট নেই, ফলে শিক্ষার্থীরা গভীর গবেষণায় মনোযোগ দিতে পারছে না। দেশের চাকরিনির্ভর নীতি শিক্ষার্থীদের গবেষণার চেয়ে চাকরি প্রস্তুতিতে মনোযোগী করছে। ফলস্বরূপ, শিক্ষার্থীদের অনেকেই গবেষণার পরিবর্তে চাকরিপ্রস্তুতিতে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে।

আফরিন আক্তার মৌ
ইংরেজি বিভাগ

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়া অনেকের কাছে খুব বড় স্বপ্ন পূরণ বা সাধনার বিষয় হিসেবে গণ্য হওয়ার পাশাপাশি তা হতে পারে গ্রাম কিংবা শহর থেকে আসা শিক্ষার্থীর অভাবনীয় প্রাপ্তি।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর নবীন শিক্ষার্থীরা তাদের স্বপ্ন,কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য নিয়ে পদার্পন করে সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ৪৬ বছর পরেও বিশ্ববিদ্যালয়টি যেন নানা সমস্যায় জর্জরিত যা দিন দিন শিক্ষার্থীদের অগ্রগতির পথে অন্তরায়। এছাড়াও জুলাই আন্দোলনের পরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আশার আলো ছড়িয়ে পরে, উন্মদনার সৃষ্টি হয় এবং জাগরণ ঘটে। শুরুর দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেশনজট নিরসন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চত করা ইত্যাদি বিষয়গুলোর উপর মনোযোগ দিলেও এখনও আমূল পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়নি। চলতি বছরেই এক শিক্ষর্থীকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকারীকে শনাক্ত করতে পারেনি যা বাকি শিক্ষার্থীদের কাছে একইসাথে ভীতি ও হতাশার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থার ঘাটতি, গবেষণায় উদাসীনতা, আবাসন সংকট ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর উপর যথাযথ গুরুত্ব আরোপ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত সমস্যা সমাধান করতে পারলে তা হবে প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য আশীর্বাদ এবং সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা।