ঢাকা ০৪:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিরল রোগে আক্রান্ত ‘দঙ্গল’ অভিনেত্রী ফাতিমা

বিনোদন ডেস্ক
  • Update Time : ১২:০৩:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১৭ Time View

ফাতিমা সানা শেখ I ছবি : সংগৃহীত

কয়েক বছর আগেই মৃগী রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়ে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন বলিউড অভিনেত্রী ফাতিমা সানা শেখ। এবার নিজের জীবনের আরেকটি গোপন ও কঠিন অধ্যায় জনসমক্ষে আনলেন ‘দঙ্গল’ খ্যাত এই অভিনেত্রী। ফাতিমা জানিয়েছেন, জীবনের একপর্যায়ে তিনি ‘বুলিমিয়া’ নামক এক জটিল মানসিক ও খাদ্যাভ্যাসজনিত রোগে আক্রান্ত ছিলেন।

সম্প্রতি ‘দ্য ইকোনমিক টাইমস’-এর এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ফাতিমার এই লড়াইয়ের কথা। বাইরের দুনিয়া তাকে হাসিখুশি ও আত্মবিশ্বাসী হিসেবে দেখলেও, ভেতরে ভেতরে তিনি লড়াই করছিলেন এক ভয়ংকর মানসিক চাপ ও অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে।

ফাতিমা জানান, এই সমস্যার সূত্রপাত মূলত তার ক্যারিয়ারের মোড় ঘোরানো সিনেমা ‘দঙ্গল’-এর সময় থেকে। সিনেমাটিতে কুস্তিগিরের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তাকে উচ্চ ক্যালোরির ডায়েট মেনে চলতে হয়েছিল। কিন্তু শুটিং শেষ হয়ে গেলেও খাবারের ওপর সেই নির্ভরতা আর কমাতে পারেননি অভিনেত্রী। খাবার যেন তার কাছে এক ধরনের মানসিক আশ্রয়ে পরিণত হয়।

তিনি বলেন, “খাবার আমার কাছে অপরাধবোধের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কখনো অতিরিক্ত খাওয়া, কখনো তা লুকোনোর চেষ্টা—এই চক্রে আমি নিজেই নিজেকে আটকে ফেলেছিলাম। খাবারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক একসময় ‘টক্সিক’ হয়ে পড়ে।”

ফাতিমা জানান, এই রোগ তার মানসিক অবস্থাকে এতটাই বিপর্যস্ত করে তুলেছিল, তিনি নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছিলেন। অভিনেত্রীর কথায়, “আমি নিজেকে দোষ দিতাম। মনে হতো আমার শরীর, আমার মন—কিছুই আমার নিয়ন্ত্রণে নেই।” লোকলজ্জা ও ভয়ের কারণে দীর্ঘসময় বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন তিনি।

ফাতিমার এই অস্বাভাবিক আচরণ প্রথম নজরে আসে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহঅভিনেত্রী সানায়া মালহোত্রার। সানায়াই প্রথম বুঝতে পারেন, ফাতিমা বড় ধরনের মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন এবং তার আচরণ স্বাভাবিক নয়। বন্ধুর এই মন্তব্যই চোখ খুলে দেয় ফাতিমার। তিনি উপলব্ধি করেন, তিনি আসলে নিজের সঙ্গেই এক অসম লড়াই লড়ছেন।

দীর্ঘ লড়াই, চিকিৎসা, সচেতনতা এবং বন্ধুদের সহযোগিতায় ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ফাতিমা। নিজের এই অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করে তিনি অন্যদের সচেতন করতে চেয়েছেন। তার অকপট স্বীকারোক্তি, ‘সাহায্য চাইতে লজ্জা নেই। আমি আমার অভিজ্ঞতা বলছি, যাতে অন্যরা ভয় না পায়।’

Please Share This Post in Your Social Media

বিরল রোগে আক্রান্ত ‘দঙ্গল’ অভিনেত্রী ফাতিমা

বিনোদন ডেস্ক
Update Time : ১২:০৩:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫

কয়েক বছর আগেই মৃগী রোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়ে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন বলিউড অভিনেত্রী ফাতিমা সানা শেখ। এবার নিজের জীবনের আরেকটি গোপন ও কঠিন অধ্যায় জনসমক্ষে আনলেন ‘দঙ্গল’ খ্যাত এই অভিনেত্রী। ফাতিমা জানিয়েছেন, জীবনের একপর্যায়ে তিনি ‘বুলিমিয়া’ নামক এক জটিল মানসিক ও খাদ্যাভ্যাসজনিত রোগে আক্রান্ত ছিলেন।

সম্প্রতি ‘দ্য ইকোনমিক টাইমস’-এর এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ফাতিমার এই লড়াইয়ের কথা। বাইরের দুনিয়া তাকে হাসিখুশি ও আত্মবিশ্বাসী হিসেবে দেখলেও, ভেতরে ভেতরে তিনি লড়াই করছিলেন এক ভয়ংকর মানসিক চাপ ও অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে।

ফাতিমা জানান, এই সমস্যার সূত্রপাত মূলত তার ক্যারিয়ারের মোড় ঘোরানো সিনেমা ‘দঙ্গল’-এর সময় থেকে। সিনেমাটিতে কুস্তিগিরের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তাকে উচ্চ ক্যালোরির ডায়েট মেনে চলতে হয়েছিল। কিন্তু শুটিং শেষ হয়ে গেলেও খাবারের ওপর সেই নির্ভরতা আর কমাতে পারেননি অভিনেত্রী। খাবার যেন তার কাছে এক ধরনের মানসিক আশ্রয়ে পরিণত হয়।

তিনি বলেন, “খাবার আমার কাছে অপরাধবোধের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কখনো অতিরিক্ত খাওয়া, কখনো তা লুকোনোর চেষ্টা—এই চক্রে আমি নিজেই নিজেকে আটকে ফেলেছিলাম। খাবারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক একসময় ‘টক্সিক’ হয়ে পড়ে।”

ফাতিমা জানান, এই রোগ তার মানসিক অবস্থাকে এতটাই বিপর্যস্ত করে তুলেছিল, তিনি নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছিলেন। অভিনেত্রীর কথায়, “আমি নিজেকে দোষ দিতাম। মনে হতো আমার শরীর, আমার মন—কিছুই আমার নিয়ন্ত্রণে নেই।” লোকলজ্জা ও ভয়ের কারণে দীর্ঘসময় বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন তিনি।

ফাতিমার এই অস্বাভাবিক আচরণ প্রথম নজরে আসে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহঅভিনেত্রী সানায়া মালহোত্রার। সানায়াই প্রথম বুঝতে পারেন, ফাতিমা বড় ধরনের মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন এবং তার আচরণ স্বাভাবিক নয়। বন্ধুর এই মন্তব্যই চোখ খুলে দেয় ফাতিমার। তিনি উপলব্ধি করেন, তিনি আসলে নিজের সঙ্গেই এক অসম লড়াই লড়ছেন।

দীর্ঘ লড়াই, চিকিৎসা, সচেতনতা এবং বন্ধুদের সহযোগিতায় ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ফাতিমা। নিজের এই অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করে তিনি অন্যদের সচেতন করতে চেয়েছেন। তার অকপট স্বীকারোক্তি, ‘সাহায্য চাইতে লজ্জা নেই। আমি আমার অভিজ্ঞতা বলছি, যাতে অন্যরা ভয় না পায়।’