ঢাকা ০২:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনার মামলায় যে ৫ অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১০:৩১:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১১ Time View

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দমাতে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যে মামলার রায় হতে যাচ্ছে, তাতে পাঁচটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনেছে প্রসিউকিশন। এ মামলায় অপর দুই আসামি হলেন অভ্যুত্থানের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং আইজিপির দায়িত্বে থাকা চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

তাদের মধ্যে শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামালকে পলাতক দেখিয়ে বিচারকাজ শেষ করেছে ট্রাইব্যুনাল। আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। আর কামালও ভারতে অবস্থান করছেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। আর সাবেক আইজিপি মামুন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। দায় স্বীকার করে তিনি এ মামলায় রাজসাক্ষী হয়েছেন।

এ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ‘নিউক্লিয়াস’ ছিলেন শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ভবিষ্যতে মানবতাবিরোধী অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হলে এই নিউক্লিয়াস বা প্রাণভোমরাকে অবশ্যই বিচারিক প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। এই নিউক্লিয়াসকে ভেঙে ফেলতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কখনো এ ধরনের অপরাধের নিউক্লিয়াস কেউ হতে না পারে।”

অভিযোগ ১

হাসিনা, কামাল, মামুনের বিরুদ্ধে খুন, হত্যাচেষ্টা, নির্যাতন এবং অন্যান্য অমানবিক কার্যকলাপের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ হল, তারা এসব অপরাধ সংঘটনে ‘প্ররোচনা, সহায়তা, সুবিধা প্রদান, যোগসাজশ এবং প্রতিরোধে ব্যর্থতা’ দেখিয়েছেন, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলোর সশস্ত্র কর্মীদের মাধ্যমে বেসামরিক জনগণের ওপর সংঘটিত হয়েছিল।

এ অভিযোগের মূল বিষয় হল–শেখ হাসিনার ১৪ জুলাইয়ের প্রেস ব্রিফিংয়ের পর আসাদুজ্জামান খান কামাল, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এবং তৎকালীন সরকারের অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা নিরস্ত্র ও নিরপরাধ ছাত্রসমাজের ওপর চালানো ‘ভয়াবহ ও পরিকল্পিত হামলায় প্ররোচনা, সহায়তা ও যোগসাজশে’ লিপ্ত ছিলেন।

অভিযোগ ২

এ অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে ছাত্র আন্দোলনকারীদের ‘হত্যার নির্দেশ’ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আবদুল্লাহ আল মামুন নিজ নিজ অধীনস্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়ে এই তার ‘বাস্তবায়ন ও সহায়তা’ করেছেন। তারা ‘ইচ্ছাকৃতভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের নির্দেশ, সহায়তা, যোগসাজশ ও ষড়যন্ত্রে’ জড়িত ছিলেন।

অভিযোগ ৩

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আন্দোলনরত ছাত্র আবু সাঈদকে হত্যার ঘটনা রয়েছে এ অভিযোগে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ হল, তিনি ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দিয়েছেন এবং আন্দোলনরত ছাত্রদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ’ দিয়েছেন।

ওই ‘নির্দেশের’ পর আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আবদুল্লাহ আল মামুনসহ উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা তাদের অধীনস্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সশস্ত্র কর্মীদের ‘প্ররোচিত, সহায়তা ও যোগসাজশে’ লিপ্ত হয়েছিলেন।

২০২৪ সালের ১৬ জুলাই নিরস্ত্র ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর ‘ব্যাপক ও পরিকল্পিত’ হামলার অংশ হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ‘অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে’ কাছ থেকে আবু সাঈদের বুকে একাধিক গুলি চালায় বলে প্রসিকিউশনের ভাষ্য।

অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা ‘নির্দেশ’ দিয়েছেন, ‘প্ররোচনা’ দিয়েছেন, ‘সহায়তা ও সুবিধা’ দিয়েছেন, ‘যোগসাজশে’ লিপ্ত হয়েছিলেন এবং ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ ও অন্যান্য অমানবিক কাজ’ করেছেন।

অভিযোগ ৪

এ অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট ঢাকার চানখাঁরপুলে ছয়জন নিরস্ত্র আন্দোলনকারীর গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় সম্পৃক্ততা রয়েছে এই তিন আসামির। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ হল, তিনি ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দিয়েছেন এবং ছাত্র আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ’ দিয়েছেন।

ওই নির্দেশের পর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সাবেক আইজিপি, তৎকালীন অন্যান্য উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলে তাদের অধীনস্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সশস্ত্র কর্মীদের কর্মকাণ্ডে ‘প্ররোচনা, সহায়তা ও যোগসাজশে’ যুক্ত ছিলেন।

চানখাঁরপুলে ছয়জন নিরস্ত্র আন্দোলনকারীকে হত্যার ঘটনাটি অভিযুক্তদের ‘জ্ঞাতসারে, তাদের নির্দেশ, প্ররোচনা, সহায়তা, সুবিধা, যোগসাজশ ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে’ সংঘটিত হয়েছে এবং তা মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল বলে অভিযোগকারী পক্ষের ভাষ্য।

অভিযোগ ৫

এ অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আশুলিয়ায় ছয়জন ছাত্র আন্দোলনকারীকে গুলি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যার পর পুড়িয়ে ফেলা হয়, এবং ষষ্ঠজনকে জীবিত অবস্থায় আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ হল, তিনি ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দিয়েছেন এবং ছাত্র আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ’ দিয়েছেন।

এই নির্দেশের পর অভিযুক্তরা তৎকালীন অন্যান্য উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলে তাদের অধীনস্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সশস্ত্র কর্মীদের কর্মকাণ্ডে ‘প্ররোচনা, সহায়তা ও যোগসাজশে’ যুক্ত ছিলেন।

অভিযোগ হল, এই কর্মকাণ্ড অভিযুক্তদের ‘নির্দেশ, প্ররোচনা, সহায়তা, সুবিধা, যোগসাজশ ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সচেতনভাবে’ সংঘটিত হয়েছে, যা মানবতাবিরোধী অপরাধের অন্তর্ভুক্ত, এবং এতে ‘নির্যাতন, খুনসহ অন্যান্য অমানবিক কাজ’ সংঘটিত হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

শেখ হাসিনার মামলায় যে ৫ অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ১০:৩১:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দমাতে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যে মামলার রায় হতে যাচ্ছে, তাতে পাঁচটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনেছে প্রসিউকিশন। এ মামলায় অপর দুই আসামি হলেন অভ্যুত্থানের সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং আইজিপির দায়িত্বে থাকা চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

তাদের মধ্যে শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামালকে পলাতক দেখিয়ে বিচারকাজ শেষ করেছে ট্রাইব্যুনাল। আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। আর কামালও ভারতে অবস্থান করছেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। আর সাবেক আইজিপি মামুন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। দায় স্বীকার করে তিনি এ মামলায় রাজসাক্ষী হয়েছেন।

এ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ‘নিউক্লিয়াস’ ছিলেন শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ভবিষ্যতে মানবতাবিরোধী অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধ করতে হলে এই নিউক্লিয়াস বা প্রাণভোমরাকে অবশ্যই বিচারিক প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। এই নিউক্লিয়াসকে ভেঙে ফেলতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কখনো এ ধরনের অপরাধের নিউক্লিয়াস কেউ হতে না পারে।”

অভিযোগ ১

হাসিনা, কামাল, মামুনের বিরুদ্ধে খুন, হত্যাচেষ্টা, নির্যাতন এবং অন্যান্য অমানবিক কার্যকলাপের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ হল, তারা এসব অপরাধ সংঘটনে ‘প্ররোচনা, সহায়তা, সুবিধা প্রদান, যোগসাজশ এবং প্রতিরোধে ব্যর্থতা’ দেখিয়েছেন, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলোর সশস্ত্র কর্মীদের মাধ্যমে বেসামরিক জনগণের ওপর সংঘটিত হয়েছিল।

এ অভিযোগের মূল বিষয় হল–শেখ হাসিনার ১৪ জুলাইয়ের প্রেস ব্রিফিংয়ের পর আসাদুজ্জামান খান কামাল, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এবং তৎকালীন সরকারের অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা নিরস্ত্র ও নিরপরাধ ছাত্রসমাজের ওপর চালানো ‘ভয়াবহ ও পরিকল্পিত হামলায় প্ররোচনা, সহায়তা ও যোগসাজশে’ লিপ্ত ছিলেন।

অভিযোগ ২

এ অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে ছাত্র আন্দোলনকারীদের ‘হত্যার নির্দেশ’ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আবদুল্লাহ আল মামুন নিজ নিজ অধীনস্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়ে এই তার ‘বাস্তবায়ন ও সহায়তা’ করেছেন। তারা ‘ইচ্ছাকৃতভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের নির্দেশ, সহায়তা, যোগসাজশ ও ষড়যন্ত্রে’ জড়িত ছিলেন।

অভিযোগ ৩

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আন্দোলনরত ছাত্র আবু সাঈদকে হত্যার ঘটনা রয়েছে এ অভিযোগে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ হল, তিনি ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দিয়েছেন এবং আন্দোলনরত ছাত্রদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ’ দিয়েছেন।

ওই ‘নির্দেশের’ পর আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আবদুল্লাহ আল মামুনসহ উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা তাদের অধীনস্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সশস্ত্র কর্মীদের ‘প্ররোচিত, সহায়তা ও যোগসাজশে’ লিপ্ত হয়েছিলেন।

২০২৪ সালের ১৬ জুলাই নিরস্ত্র ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর ‘ব্যাপক ও পরিকল্পিত’ হামলার অংশ হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ‘অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে’ কাছ থেকে আবু সাঈদের বুকে একাধিক গুলি চালায় বলে প্রসিকিউশনের ভাষ্য।

অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা ‘নির্দেশ’ দিয়েছেন, ‘প্ররোচনা’ দিয়েছেন, ‘সহায়তা ও সুবিধা’ দিয়েছেন, ‘যোগসাজশে’ লিপ্ত হয়েছিলেন এবং ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ ও অন্যান্য অমানবিক কাজ’ করেছেন।

অভিযোগ ৪

এ অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট ঢাকার চানখাঁরপুলে ছয়জন নিরস্ত্র আন্দোলনকারীর গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় সম্পৃক্ততা রয়েছে এই তিন আসামির। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ হল, তিনি ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দিয়েছেন এবং ছাত্র আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ’ দিয়েছেন।

ওই নির্দেশের পর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সাবেক আইজিপি, তৎকালীন অন্যান্য উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলে তাদের অধীনস্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সশস্ত্র কর্মীদের কর্মকাণ্ডে ‘প্ররোচনা, সহায়তা ও যোগসাজশে’ যুক্ত ছিলেন।

চানখাঁরপুলে ছয়জন নিরস্ত্র আন্দোলনকারীকে হত্যার ঘটনাটি অভিযুক্তদের ‘জ্ঞাতসারে, তাদের নির্দেশ, প্ররোচনা, সহায়তা, সুবিধা, যোগসাজশ ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে’ সংঘটিত হয়েছে এবং তা মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল বলে অভিযোগকারী পক্ষের ভাষ্য।

অভিযোগ ৫

এ অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আশুলিয়ায় ছয়জন ছাত্র আন্দোলনকারীকে গুলি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যার পর পুড়িয়ে ফেলা হয়, এবং ষষ্ঠজনকে জীবিত অবস্থায় আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ হল, তিনি ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্য দিয়েছেন এবং ছাত্র আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ’ দিয়েছেন।

এই নির্দেশের পর অভিযুক্তরা তৎকালীন অন্যান্য উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলে তাদের অধীনস্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সশস্ত্র কর্মীদের কর্মকাণ্ডে ‘প্ররোচনা, সহায়তা ও যোগসাজশে’ যুক্ত ছিলেন।

অভিযোগ হল, এই কর্মকাণ্ড অভিযুক্তদের ‘নির্দেশ, প্ররোচনা, সহায়তা, সুবিধা, যোগসাজশ ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সচেতনভাবে’ সংঘটিত হয়েছে, যা মানবতাবিরোধী অপরাধের অন্তর্ভুক্ত, এবং এতে ‘নির্যাতন, খুনসহ অন্যান্য অমানবিক কাজ’ সংঘটিত হয়েছে।