ঢাকা ০৫:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রথম সমাবর্তন অনিশ্চিত, তবু দ্বিতীয় সমাবর্তনের ফি নিচ্ছে বুটেক্স প্রশাসন: শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

নিয়ামুল ইসলাম তামিম, বুটেক্স প্রতিনিধি
  • Update Time : ০২:৪৯:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১৯ Time View

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) থেকে এখনো প্রথম সমাবর্তনও অনুষ্ঠিত হয়নি, অথচ প্রশাসন শুরু করেছে দ্বিতীয় সমাবর্তনের নামে নতুন করে রেজিস্ট্রেশন ফি সংগ্রহ—এতে ক্ষোভে ফুঁসছেন প্রাক্তন ও সদ্য স্নাতক শিক্ষার্থীরা। এক বছর আগে নির্ধারিত প্রথম সমাবর্তনের তারিখ পেরিয়ে গেলেও এখনো অনুষ্ঠানটি অনিশ্চিত, অথচ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবারও অর্থ নেওয়া হচ্ছে কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই।

২০২৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন হওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও নেওয়া হয়—গাউন, গিফট প্যাক, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টসহ সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা ও উপাচার্য পরিবর্তনের কারণে অনুষ্ঠানটি বাতিল হয়। এরপর থেকে এক বছরেরও বেশি সময় কেটে গেলেও সমাবর্তনের নতুন তারিখ ঘোষণা হয়নি।

এই অবস্থায় মূল সার্টিফিকেট তোলার সময় দ্বিতীয় সমাবর্তনের নামে আবারও রেজিস্ট্রেশন ফি নেওয়া শুরু করেছে প্রশাসন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. জিয়াউর রহমান বলেন, “যেখানে প্রথম কনভোকেশনের কোনো তারিখই নেই, কোনো নোটিশও নেই, সেখানে ২য় কনভোকেশনের নামে কেন টাকা দিতে হবে? এই টাকা কোথায় যাচ্ছে—তা নিয়েও কেউ কিছু বলছে না। এটি সরাসরি প্রতারণা।”

একই ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী ইফতেখার আলম ইভান বলেন, “মূল সার্টিফিকেট তুলতেই আমাদের অনেক টাকা দিতে হয়—ট্রান্সক্রিপ্ট, সার্টিফিকেট, অন্যান্য ফি মিলে প্রায় পাঁচ হাজার টাকার মতো। তার ওপর কনভোকেশনের জন্য বাড়তি ফি দেওয়া অনেকের জন্যই কষ্টসাধ্য। সমাবর্তনের তারিখ না জেনেই ফি নেওয়া একেবারেই অযৌক্তিক।

৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আতিকুর রহমান আতিক বলেন, “দু’বছর আগে প্রথম সমাবর্তনের ফি নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। ওয়েবসাইটে কোনো নোটিশ বা ব্যাখ্যাও নেই। এখন আবার নতুন ফি নেওয়া হচ্ছে—এটা চরম দায়িত্বহীনতা।”

বুটেক্সের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মারজানী তুবন নাহার বলেন, “২০১৮ সালে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ছিল, মূল সার্টিফিকেট তুলতে হলে কনভোকেশনের ফিও দিতে হবে। তবে দীর্ঘ বিলম্বের কারণে এখন শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রেশন করলেই সার্টিফিকেট পাচ্ছেন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জুলহাস উদ্দিন জানান, “রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে গত বছর নির্ধারিত তারিখে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়নি। আমরা নতুন করে মন্ত্রণালয়ে অনুমতির আবেদন করেছি। অনুমতি পেলে এ বছরই প্রথম সমাবর্তন এবং পরের বছর দ্বিতীয় সমাবর্তন আয়োজন করা হবে।”

Please Share This Post in Your Social Media

প্রথম সমাবর্তন অনিশ্চিত, তবু দ্বিতীয় সমাবর্তনের ফি নিচ্ছে বুটেক্স প্রশাসন: শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

নিয়ামুল ইসলাম তামিম, বুটেক্স প্রতিনিধি
Update Time : ০২:৪৯:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) থেকে এখনো প্রথম সমাবর্তনও অনুষ্ঠিত হয়নি, অথচ প্রশাসন শুরু করেছে দ্বিতীয় সমাবর্তনের নামে নতুন করে রেজিস্ট্রেশন ফি সংগ্রহ—এতে ক্ষোভে ফুঁসছেন প্রাক্তন ও সদ্য স্নাতক শিক্ষার্থীরা। এক বছর আগে নির্ধারিত প্রথম সমাবর্তনের তারিখ পেরিয়ে গেলেও এখনো অনুষ্ঠানটি অনিশ্চিত, অথচ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবারও অর্থ নেওয়া হচ্ছে কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই।

২০২৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন হওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও নেওয়া হয়—গাউন, গিফট প্যাক, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টসহ সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা ও উপাচার্য পরিবর্তনের কারণে অনুষ্ঠানটি বাতিল হয়। এরপর থেকে এক বছরেরও বেশি সময় কেটে গেলেও সমাবর্তনের নতুন তারিখ ঘোষণা হয়নি।

এই অবস্থায় মূল সার্টিফিকেট তোলার সময় দ্বিতীয় সমাবর্তনের নামে আবারও রেজিস্ট্রেশন ফি নেওয়া শুরু করেছে প্রশাসন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. জিয়াউর রহমান বলেন, “যেখানে প্রথম কনভোকেশনের কোনো তারিখই নেই, কোনো নোটিশও নেই, সেখানে ২য় কনভোকেশনের নামে কেন টাকা দিতে হবে? এই টাকা কোথায় যাচ্ছে—তা নিয়েও কেউ কিছু বলছে না। এটি সরাসরি প্রতারণা।”

একই ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী ইফতেখার আলম ইভান বলেন, “মূল সার্টিফিকেট তুলতেই আমাদের অনেক টাকা দিতে হয়—ট্রান্সক্রিপ্ট, সার্টিফিকেট, অন্যান্য ফি মিলে প্রায় পাঁচ হাজার টাকার মতো। তার ওপর কনভোকেশনের জন্য বাড়তি ফি দেওয়া অনেকের জন্যই কষ্টসাধ্য। সমাবর্তনের তারিখ না জেনেই ফি নেওয়া একেবারেই অযৌক্তিক।

৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আতিকুর রহমান আতিক বলেন, “দু’বছর আগে প্রথম সমাবর্তনের ফি নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। ওয়েবসাইটে কোনো নোটিশ বা ব্যাখ্যাও নেই। এখন আবার নতুন ফি নেওয়া হচ্ছে—এটা চরম দায়িত্বহীনতা।”

বুটেক্সের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মারজানী তুবন নাহার বলেন, “২০১৮ সালে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ছিল, মূল সার্টিফিকেট তুলতে হলে কনভোকেশনের ফিও দিতে হবে। তবে দীর্ঘ বিলম্বের কারণে এখন শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রেশন করলেই সার্টিফিকেট পাচ্ছেন।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জুলহাস উদ্দিন জানান, “রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে গত বছর নির্ধারিত তারিখে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়নি। আমরা নতুন করে মন্ত্রণালয়ে অনুমতির আবেদন করেছি। অনুমতি পেলে এ বছরই প্রথম সমাবর্তন এবং পরের বছর দ্বিতীয় সমাবর্তন আয়োজন করা হবে।”