ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ
- Update Time : ০৬:২১:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫
- / ৪৫৩ Time View
কলেজ শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বি হত্যায় জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে সাভারের জনপদ। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের সিএনবি এলাকায় নিহত শিক্ষার্থীর পরিবার, স্থানীয় এলাকাবাসী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা বলেন, কলেজপড়ুয়া ফজলে রাব্বিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে একদল দুর্বৃত্ত। হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দি করে জঙ্গলে ফেলে রাখা হয়। ঘটনার ১৪ দিন পর তার মরদেহ উদ্ধার করা হলেও হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আন্দোলনকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, নিহত রাব্বি কলেজ শিক্ষার্থী হওয়া সত্ত্বেও কেউ কেউ ‘অটোরিকশা চালক’ পরিচয়ে অপপ্রচার চালিয়েছে, যা পরিবারকে অপমানের শামিল। তারা দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানান।
ফজলে রাব্বির মা নূরজাহান বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলে গত ১৭ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। আমরা থানায় জিডি করি, কিন্তু কোনো খোঁজ পাইনি। পরে ৩০ অক্টোবর এলাকার লোকজন কলমা উত্তরপাড়ার জঙ্গলে বস্তাবন্দি অবস্থায় আমার ছেলের লাশ দেখতে পায়। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
সাভার সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার আবুল হোসেন বলেন, ফজলে রাব্বি মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে বস্তাবন্দি করে জঙ্গলে ফেলে রাখা হয়েছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
সাভার ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আল মুমিন আকন বলেন, ফজলে রাব্বি সাভার লিজেন্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। অথচ তাকে অটোচালক আখ্যা দিয়ে হত্যাকাণ্ডের গুরুত্ব হালকা করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি বলা হচ্ছে- পরকীয়ার জেরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে এটি ভুল।
ছাত্রদল নেতা আকন আরও বলেন, অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে থানা পুলিশকে এই ঘটনার সত্যতা এবং বিচার নিশ্চিত করতে হবে। নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে একাধিক দুর্বৃত্ত জড়িত রয়েছে।
সাভার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফ হোসেন বলেন, ফজলে রাব্বি ছিল আমাদের এলাকার এক মেধাবী, ভদ্র ও বিনয়ী ছাত্র। সে নিয়মিত কলেজে যেত, সমাজের কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা ছিল না। এমন একজন নিরীহ ছেলেকে যারা হত্যা করেছে, তারা সমাজের শত্রু। এটি নিছক একটি হত্যাকাণ্ড নয়— এটি একটি নির্মম ও পরিকল্পিত হত্যা। তাকে প্রথমে অপহরণ করে, পরে হত্যা করে বস্তাবন্দি অবস্থায় জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এমন পাশবিক ঘটনার ন্যায়বিচার আমরা চাই, কারণ আজ রাব্বি— আগামীকাল হয়তো আমাদের এলাকার আরেক সন্তানও এমন পরিণতির শিকার হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাই— এই হত্যাকাণ্ড যেন কোনোভাবেই ধামাচাপা না পড়ে। পুলিশ যেন নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে প্রকৃত খুনিদের আইনের আওতায় আনে। শুধু গ্রেপ্তার নয়, আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি— ফাঁসি চাই। যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এমন নৃশংসতা করার সাহস না পায়।
সাভার হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালেহ আহমেদ বলেন, গত সপ্তাহে কলমা এলাকা থেকে বস্তাবন্দি এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে তাদের ফাঁসির দাবিতে আজ স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফাইজুল খান বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে সাভার সদর ইউনিয়নের কলমা উত্তরপাড়া এলাকা থেকে ফজলে রাব্বির হাত-পা বাঁধা ও বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়








































































































































































































