মামলা তুলে না নিলে বিবাদীকে ভুয়া মামলায় ফাঁসানোর হুমকি জেলা জজের
রায় ছিড়া কেলেঙ্কারীর নেপথ্যে সাবেক আইন সচিব গোলাম রাব্বানী
- Update Time : ০৭:৪৬:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫
- / ৮৫৪ Time View
সাবেক আইন সচিব ও তৎকালীন রেজিস্ট্রার জেনারেল গোলাম রাব্বানীর আপন খালাতো বোন দেঃ ১৬৭/২১ মামলার বাদী কাজল মাঝির পক্ষে রায় করিয়ে দিতে তড়িঘড়ি করে শরীয়তপুরে পোস্টিং দিয়েছিলেন জেলা জজ সোলায়মানকে।
পাগল সোলায়মান রায় ছিড়ে ফেলেই চোরাবালিতে ফেঁসে গেলেন- চলছে বাঁচার অপচেষ্টা ও তদবীর। নেপথ্যে কারা কলকাঠি নাড়ছেন জেলা জজকে বাঁচাতে।
শুধু ঘুষ, দুর্নীতি আর রায় ছিড়েই ক্ষান্ত হননি, উপরন্ত যে সকল মানবিক গুণাবলি মানুষের মধ্যে থাকার কথা তার লেশ মাত্র নাই শরিয়তপুরের বির্তর্কিত জেলা জজ মো: সোলায়মানের মধ্যে। এমনটি জানালেন খোদ তারই অধীনস্থ একটি আদালতের দায়িত্বে নিযুক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিনিয়র পর্যায়ের এক বিচারক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শরীয়তপুরের সিনিয়র এক আইনজীবী বলেন, দেঃ ১৬৭/২১ মামলার বাদী কাজল মাঝি হচ্ছেন সাবেক আইন সচিব গোলাম রাব্বানীর আপন খালাতো বোন।
ইতঃপূর্বে গোলাম রাব্বানী রেজিস্ট্রার জেনারেল ছিলেন, তিনি এই মামলায় ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করে যাচ্ছেন। ২৪-০৯-২০২৪ইং তারিখে গোলাম রব্বানী আইন সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
গোলাম রব্বানীর এজেন্ডা বাস্তবায়নে অর্থাৎ গোলাম রাব্বানীর আপন খালাতো বোন কাজল মাঝির পক্ষে রায় এনে দিতে সোলায়মানকে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে শরীয়তপুরে পাঠানো হয়।
কাজল মাঝির এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয় নওরোজকে বলেন, বিগত ২০-০৯-২০২৪ খ্রিঃ তারিখে কাজল মাঝির স্বামী বিচারক আরিফুল ইসলামকে গোলাম রাব্বানীর রেফারেন্স দিয়ে ফোন দিয়ে বাদীর পক্ষে রায় দিতে বলেন। তিনি বিচারককে বলেন, “গোলাম রাব্বানীর খালাতো বোন আমার স্ত্রী এবং আইন সচিব সব জানেন, আমার স্ত্রীর পক্ষে রায় না দিলে বিপদে পড়বেন।”
শরীয়তপুরে বদলী হয়ে আসার ০৭ দিনের মাথায় জেলা জজ সোলায়মান গোলাম রাব্বানীর এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়ে ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়ে রায় ছিড়ে ফেলে উক্ত নথি পুনঃবিচারের জন্য সহকারী জজ সাদ্দাম হোসেন এর আদালতে রাতের আধারে প্রেরণ করেন। বিবাদীপক্ষ উক্ত রায়ের নকলের জন্যও প্রার্থনা করেছিলেন, কিন্ত নকলের দরখাস্তও গায়েব করা হয়েছিল।
বিচারক আরিফুল ইসলাম রায়ের ফটোকপি বিগত ২৯-০৯-২০২৪ খ্রিঃ তারিখে শরীয়তপুরের সিনিয়র আইনজীবিদের ও বিচারকদের সবাইকে প্রদান করেন। বিবাদীর পক্ষ উক্ত অবৈধ মিস-৮৯/২৪ এর বিরুদ্ধে বিগত ২০২৪ সালে সিভিল রিভিশন-৫৪৬৯/২৪ দায়ের করলেও জেলা জজ সোলায়মান ফেঁসে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য উক্ত সিভিল রিভিশনের মুল নথি হাইকোর্টে এখনো প্রেরণ করছেন না।
দেঃ ১৬৭/২১ মামলার বিবাদী ফজলুল করিম হাওলাদার নওরোজকে বলেন রায় ছিড়ার ঘটনায় জেলা জজ সোলায়মান তাকে ডেকে নিয়ে বলেন, “এই বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে ভুয়া মামলা, মিথ্যা মার্ডারের মামলায় ফাঁসিয়ে দিবেন ও সারা জীবন জেলে থাকতে হবে। সব জায়গায় সব জেলায় আমার অনেক ভক্ত জজ আছে, তোমার জীবন বরবাদ করে দিবো যদি এই বিষয় নিয়ে আর হাইকোর্টে আগাও, জীবন শেষ হয়ে যাবে, বুঝা গেলো?”
বিবাদী মিথ্যা মামলার ভয়ে সিভিল রিভিশন- ৫৪৬৯/২৪ মামলা নিয়ে আগাতে পারছেন না,মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে এই ভয়ে জেলা জজের হুমকির মুখে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
বিপত্তি বাধে ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুলকে নিষেধ করার পরও কেন রায়ের কপি সবাইকে দিয়েছেন ও জানিয়েছেন এই ক্ষোভ জেলা জজ সোলায়মান সামাল দিতে না পেরে নিজ খাস কামড়ায় আরিফকে ডেকে নিয়ে রাগে-ক্ষোভে চরম খারাপ ব্যবহার করেন, প্ল্যান করেন তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে জেলে পাঠাবেন। জুনিয়ার বিচারকই যদি তার হুমকি ও ক্ষমতার কাছে হার মানে তাহলে অসহায় গরীব বিচার প্রার্থী কোথায় যাবেন।
জনশ্রুতি আছে দেঃ ১৬৭/২১ মামলার বিবাদী প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, এলাকায় যেতে পারছেন না।
বিগত ২৭-১০-২০২৫ খ্রিঃ তারিখে জনাব আরিফুল ইসলাম পাগল জেলা জজ সোলায়মানের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতি ও আইন সচিবের কাছে অভিযোগ দিলে তা নওরোজসহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সোলায়মানের রায় ছিড়ার বিষয় ও খাস কামড়ায় অকথ্য গালিগালাজের রেকর্ডিং ভাইরাল হয়।
উক্ত বিষয় ধামাচাপা দিতে ও ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে জেলা জজ সোলায়মান ও সাবেক আইন সচিব গোলাম রাব্বানী আপন খালাতো বোন কাজল মাঝিকে দিয়ে শরীয়তপুর ফুড পার্ক রেস্টুরেন্টে সোলায়মান ও গোলাম রাব্বানীর ড্রাফট মুখস্ত পড়ে শুনান শুধু ভাইরাল করার উদ্দেশ্যে ও আরিফুল ইসলামকে বিতর্কিত করতে।
কিন্তু তা সৃজিত ও শেখানো হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হওয়ায় একই ব্যানারে একই স্টেজে গত ০৪-১১-২০২৫ খ্রিঃ তারিখে জেলা জজ সোলায়মান ও গোলাম রাব্বানীর কথায় একই কায়দায়, কিছুটা ভিন্নতা নিয়ে একই জায়গায় রাত্রি ৮:৩০ ঘটিকায় আরেকটি ভিডিও বানান উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে। দুইটা ভিডিও নওরোজের কাছে সংরক্ষিত আছে।
প্রেস কনফারেন্স এর নাম করে ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে প্রমাণ ছাড়াই গোলাম রাব্বানীর বোন মিডিয়াতে বলে যাচ্ছেন মায়ের কাহিনী মাসির কাছে।
কাজল মাঝির স্বামী সোনালী ব্যাংকে চাকরি করেন। তারই ঘনিষ্ঠ এক সহকর্মী নওরোজকে বলেন, বিগত ২০-৯-২০২৪ খ্রিঃ তারিখে রাত্রি ৮:০৯ মিনিটে বিচারক আরিফুল ইসলামকে তার স্ত্রীর পক্ষে রায় দিতে ফোন দিয়ে গোলাম রব্বানীর বরাত দিয়ে ব্যাপক চাপ দিয়েছিলেন।
কাজল মাঝির স্বামী উক্ত ব্যাংক কর্মকর্তার কাছে বলেন, আইন সচিব গোলাম রব্বানী জেলা জজ সোলায়মানকে শুধু তাদের মামলার রায় করানোর জন্য শরীয়তপুরের জেলা জজ বানিয়েছেন।
ন্যায় বিচারের কান্ডারী তদবীর না শুনে রায় দিয়েই বিপাকে পড়েছেন বিচারক আরিফুল ইসলাম। আরিফুল ইসলামের সততা নিয়ে মিথ্যাচার করায় এর ক্ষতিপুরণ কি দিতে পারবে বিচার বিভাগ?
রায় ছিড়ার কেলেঙ্কারী ও ঘটনা ভাইরাল হওয়ার ১৫ দিন পরও কেন পাগল জেলা জজ সোলায়মানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না এই প্রশ্ন বিচারপ্রার্থীদের।
এর অন্তরালে কি গোলাম রাব্বানী বিচার বিভাগে প্রভাব বিস্তার করে যাচ্ছেন?
আইন মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কর্মকর্তারা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলের ন্যায় বদলি-পদায়নের ব্যাপারে নিজেদের খেয়াল-খুশিমত কাজ করে যাচ্ছেন এবং সোলায়মানের ব্যাপারেও তাকে রক্ষা করার চেষ্টা যাচ্ছে। রায় ছিড়ার কেলেঙ্কারীর আলামত নষ্ট করা এবং অর্ডার শীট পরিবর্তনেরও অভিযোগ আছে জেলা জজের বিরুদ্ধে।
এই কথাটি কোর্টের পেশকার এই প্রতিনিধিকে জানান এবং পেশকারের সম্মুখেই এটা ঘটানো হয়েছে জেলা জজের নির্দেশে।
শুধু কি ঘুষের বিনিময়েই রায় পক্ষে করিয়ে দেওয়ার শর্তে সোলায়মান জেলা জজ হলেন নাকি পদায়নের বিনিময় পুরষ্কার হিসেবে শরীয়তপুরে পদায়ন পেয়েছেন পাগল জজ সোলায়মান? এটা কি ন্যায় বিচারের আলামত?
সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে সৎ ও নিষ্ঠাবান বিচারকের ইমেজ নষ্ট করার উদ্দেশ্যে ও ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ও সোলায়মান ও গোলাম রব্বানীর ঘটনা ধামাচাপা দিতে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন কাজল মাঝিকে।
দেঃ ১৬৭/২১ মামলার বাদী কাজল মাঝিকে দিয়ে জেলা জজ সোলায়মানের শিখানো বক্তব্যের ভিডিও প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায়, শিখানো বক্তব্য মর্মে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় আরেকটি ভিডিও গত ০৪-১১-২০২৫ইং তারিখে সৃজন করেন।
গত ০১-১১-২০২৫ খ্রিঃ তারিখের শরীয়তপুরের সবচেয়ে বড় রেস্টুরেন্টে বড় আয়োজন করেও সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারলেন না গোলাম রাব্বানীর আপন খালাতো বোন, সোলায়মানের শিখানো মুখস্ত করা লিখিত বক্তব্য ভাল না হওয়ায় গত ০৪-১১-২০২৫ খ্রিঃ তারিখে পুনরায় ট্রায়াল দিয়ে মুখস্ত করে সাঁজানো প্রেস কনফারেন্স দেখিয়ে ভিডিও তৈরী করেন যেন তা ফেসবুকে ভাইরাল করতে পারেন, বিভ্রান্তি ছড়াতে পারেন।
কোন প্রেস কনফারেন্সই হয় নাই, প্রেস কনফারেন্স নামে শুধু রেকর্ডিং করে প্রচারণা চালাচ্ছেন, এই বিতর্কিত বাদী কাজল মাঝি বলেন জেলা জজ ও বিচারকের টেলিফোনের কল রেকর্ড কিভাবে অন্যরা জানলো। পুরো বক্তব্যে তিনি সোলায়মানের গুণগান করেন।
তিনি হয়তো জানে না উক্ত কথপোকথন টেলিফোনের কল রেকর্ড নয় তা জেলা জজের খাস কামড়ায় অনেক স্টাফ তা রেকর্ড করেছেন।
কাজল মাঝি প্রেস কনফারেন্সে বলেন ২০২৫ সালে কেন এ নিয়ে কথা উঠলো। তিনি ভালভাবে জেনেও না জানার ভান করছেন, তিনি জানেন উক্ত দেঃ ১৬৭/২১ মামলার বিবাদী উক্ত অবৈধ মিস-৮৯/২৪ এর বিরুদ্ধে ২০২৪ সালেই সিভিল রিভিশন-৫৪৬৯/২৪ করেছেন যা এখনো বিচারাধীন।
রায় ছিড়ার বিষয়টি গোলাম রাব্বানির একান্ত নিজের হওয়ায় ও তার ফেঁসে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে যেন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম বাড়াবাড়ি না করেন, কাউকে না বলেন সেই বিষয়ে বিশেষ হস্তক্ষেপ করেন এবং মাস্টারপ্লান দেন তৎকালিন সাবেক সচিব গোলাম রাব্বানী।
শুধু গোলাম রাব্বানীই সোলায়মানকে উপহার হিসেবে জেলা জজ বানাননি, এরচেয়ে বড় উপহার দিয়েছেন ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ের জেলা জজ অনুপ কুমার।
অনুপ কুমারকে রংপুরের নারী শিশু জেলা হতে জয়পুরহাটের জেলা জজ বানানো হয় শুধু একটাই কারন আরিফুল ইসলামকে শায়েস্তা করা, জনাব আরিফুল ইসলাম যেন কোন দিন রায় ছিড়ার ঘটনা নিয়ে কোন অভিযোগ না দেয়।
জনাব এনামুল হক শামীম ও সাবেক সচিব গোলাম রাব্বানীর দির্দেশ পালন করতেই জয়পুরহাটের জেলা জজ অনুপ কুমার হাত দেন আরিফুল ইসলামের এসিআর-২০২৪ এ।
জনাব অনুপ কুমার সোলায়মানকেও অনুরোধ করেন যেন আরিফুল ইসলামের এসিআর খারাপ দেওয়া হয়। এসিআর দেওয়ার নাম করে আরিফুল ইসলামকে ফাঁসানোর চেষ্টা ব্যর্থ হলে জুলাই যোদ্ধা আরিফুলকে সোলামান হুমকি দেন, বিএনপির নেতা দেখে নিবেন, রেজিস্ট্রার জেনারেল হারিবুরকে দিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করে দিবেন।
খাস কামড়ায় বিতর্কিত রায় ছিড়া সংক্রান্ত মামলাটি সাবেক সচিব গোলাম রাব্বানীর আপন খালাতো বোনের তাই আইন মন্ত্রণালয় ও হাইকোর্টে কর্মরত নিম্ম আদালতের বিচারকরা বিভিন্ন ভাবে প্রভাবিত হয়ে জেলা জজকে বাঁচানোর পরিকল্পনায় লিপ্ত আছেন। জেলা জজ সোলায়মান নিজেকে বাঁচানোর জন্য মোটা অংকে টাকা উৎকোচ দিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তাকে। ঘুষ নিয়ে বাঁচানোর প্লানে উক্ত জড়িত ব্যক্তিদের নাম বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষায় প্রকাশ করা হলো না।
গোলাম রাব্বানী, সাদ্দাম হোসেনকে আশ্বাস দেন দ্রুত রায় দিতে পারলে তাকে ঢাকায় বদলী করে ভাল পোস্টিং দেওয়া হবে, বিপত্তি বাধে বিবাদী কর্তৃক সিভিল রিভিশন-৫৪৬৯/২৪ দায়ের করার কারনে।
সাদ্দাম হোসেন ঘুষও হজম করতে পারলেন না, রায়ও দিতে পারলেন না আবার পেলেন না কোন বড় উপহার, ভাল পোস্টিং।
যদি পোস্টিং এর বিনিময় নীতিমালা হয় তাহলে নটরডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা মেধাবী বিচারক আরিফুল ইসলাম কোথায় যাবেন। তিনি পাচ্ছেন না কোন বিচার। মহারথীরা চেষ্টা করছেন রাঘব বোয়ালদের বাঁচাতে যেন অন্তরালে লুকিয়ে থাকা আওয়ামী দোসর গোলাম রাব্বানীর নাম না আসে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলা জজ ও যুগ্ম জেলা জজ বলেন, তাদের বদলী সংক্রান্ত সেকশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তা একটা দলের নাম ভাঙ্গিয়ে চলেন এবং এই ক্ষমতায় সিনিয়র জেলা জজদের সাথে খারাপ আচরণ করেন এবং টাকা ছাড়া কোন বদলী তিনি করেন না। তার হাত এতো বিশাল সিনিয়র কর্মকর্তাগণও তার কাছে জিম্মি। পরবর্তী কোন এক সংখ্যায় বিস্তারিত আসার অপেক্ষায় চোখ রাখুন।
ঢাকায় কর্মরত অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, সোলায়মান স্যার মৌলভীবাজারে নারী ও শিশু আদালতে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে স্ত্রীর কাছে বিয়ের অনুমতি চাইলে স্ত্রী দিতে অস্বীকার করেন, স্ত্রীর কাছ থেকে যেন বিয়ের অনুমতি পান তা নিয়ে মৌলভীবাজারের জেলা জজের কাছে, সোলায়মান বিয়ের অনুমতি হাসিল করে দিতে অনুরোধ করেন, তখন মৌলভীবাজারের জেলা জজ বলেন এটা তার কাজ না।
শরীয়তপুর জেলায় কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ বলেন, শরীয়তপুরের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আবুল বাশার মিঞা তার মায়ের অসুস্থতার কথা বলে ০২ দিনের ঐচ্ছিক ছুটি নিয়ে ঢাকায় যান, মায়ের চিকিৎসার কারণে আরও এক দিনের ছুটি বাড়াতে জেলা জজ সোলায়মানকে ফোন দিয়ে অনুরোধ করলে তিনি তা মৌখিকভাবে মঞ্জুর করেন। কিন্তু ছুটি ভোগ শেষে কর্মস্থলে এলে এক দিনের ঐচ্ছিক ছুটি বাড়াতে অনুমোদন দেননি সোলায়মান, বলেছেন একদিনের ছুটির জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখতে হবে, অর্জিত ছুটি নিতে হবে। এ নিয়ে মনঃকষ্টে উক্ত সিজেএম দুই মাস জেলা জজ সোলায়মানের খাস কামড়ায় যাননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শরীয়তপুরের আরেক যুগ্ম জেলা জজ বলেন, জেলা জজ বিচারকদের বিভিন্ন বিল স্বাক্ষর করেন না, ইচ্ছাকৃতভাবে দেরি করান। বিনা কারণে ০৬ মাস ধরে আটকে রেখেছিলেন কয়েকজন বিচারকের বিভিন্ন সময়ের বিল। তিনি জেলা জজ হিসেবে জুনিয়র বিচারকদের মানসিক যন্ত্রণা দেন। জেলা জজ অধীনস্থ বিচারকদের কষ্ট দিতেও এসিআর দেরি করেন দেন এমনও অভিযোগ পাওয়া গেছে। কেউ মুখ খুলে বলতে পারছে না, কার কাছে বলবেন, তিনিই তো জেলার অভিভাবক। শেষে যদি আবার এসিআর এ হাত দেন, এই ভয়ে সবাই জড়সড়। জেলা জজের জুলুমের একমাত্র হাতিয়ার এসিআর।
অমানবিক জেলা জজ সোলায়মানের ব্যাপারে খোঁজ নিতে নওরোজ প্রতিনিধি হবিগঞ্জ এ যায়।
সোলায়মান হবিগঞ্জ জেলায় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকাকালিন সময়ে এক মহিলা বিচারক সন্তান প্রসব বেদনায় অস্থির হয়ে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে বলে সোলায়মানের নিকট অনুনয় বিনয় করে মাইক্রোবাস চাইলে, সোলায়মান উত্তেজিত হয়ে বলেন, “ভ্যানে চড়ে যাও, কোন গাড়ী দেওয়া হবে না”।
উপায়ান্তর না দেখে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক উক্ত মহিলা বিচারক পরে রিকশাযোগে হাসপাতালে পৌঁছান। উক্ত মহিলা বিচারক বর্তমানে কক্সবাজার জেলায় কর্মরত আছেন।
উক্ত ঘটনাটির বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জয়পুরহাটের একজন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নওরোজকে বলেন, ২৮-১০-২৫ খ্রিঃ উক্ত মহিলা বিচারক তার কাছে ফোনে কথা বলার সময় খুশিতে কান্না করে বলেন, “আজ শয়তানের বিচার হয়েছে”।
জেলা জজ সোলায়মানের অফিস সংশ্লিষ্ট সিনিয়র কর্মচারী বলেন, জেলা জজ সোলায়মান স্যার প্রতি শুক্রবার ঢাকা যাওয়ার কথা বলে কোথায় যান কেউ জানে না, তিনি কোনো স্টাফ বা ড্রাইভার সাথে নেন না, বাসে গিয়ে আবার সন্ধ্যায় ফিরে আসেন।
উক্ত কর্মচারী আরও বলেন, তার সন্দেহ জেলা জজ স্যার গোপনে লিভ টুগেদার করেন, বিয়ে করলে তো তাকে নিয়ে আসতেন। শরীয়তপুরেই গোপনে বাসা ভাড়া করে রেখেছেন নাহলে কিভাবে শুক্রবার ঢাকা যাওয়ার কথা বলে অল্প সময়ে আবার সন্ধ্যায় ফিরে আসেন।
উক্ত কর্মচারী আরও বলেন, শরীয়তপুরে জেলা জজ হিসেবে বদলী হয়ে আসার পর স্ত্রী ও সন্তানদের দেখা যায়নি, কোন অনুষ্ঠানেও আসেননি। জেলা জজের স্ত্রী সন্তানদের সাথে স্যারের কোন যোগাযোগও নাই।
কর্মচারী বলেন জেলা জজ স্যার শরীয়তপুরে যুগ্ম জেলা জজ হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে স্যারের স্ত্রী সন্তানদের সর্বশেষ বার দেখেছিলেন, ভাল করে চেহারাও মনে নাই।
শরীয়তপুরের এক বেঞ্চ সহকারী বলেন, জেলা জজ প্রায় ০৭ জন কর্মচারীর ঢাকা বদলীর আবেদন আটকে রেখেছিলেন দীর্ঘ এক বছর কিন্তু গত ০৪-১১-২০২৫ খ্রিঃ তারিখে হঠাৎ করেই ০৭ জন কর্মচারীর বদলীর আবেদন ছেড়ে দেন শুধু তাদের খুশি করার জন্য।
শরীয়তপুরের বারের এক সিনিয়র আইনজীবির মহুরী বলেন, জেলা জজ সোলায়মান কোর্ট বর্জন, মানববন্ধন থামাতে দুই/তিনজন সিনিয়র আইনজীবির সাথে অলিখিত চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছেন যেন তারা তাকে সাপোর্ট দেন এবং বদলীর আগ পর্যন্ত কিছুদিন সময় পান।
একজন সেরেস্তাদার বলেন, রায় ছেড়াকালীন সময়ে ভেদরগঞ্জ আদালতে সেরেস্তাদার হাবিবুর রহমানকে পুরষ্কার স্বরুপ জেলা জজ আদালতের পেশকার হিসেবে এনেছিলেন, আবার গত ০৪-১১-২০২৫ইং তারিখে প্রশাসনিক আদেশে তাকে নকলখানায় বদলী করা হয় যাতে কেঁচো খুড়তে সাপ বেড়িয়ে না আসে। জনশ্রুতি আছে এই কর্মচারীর মাধ্যমেই তিনি ঘুষের অর্থ লেনদেন করেন।
কিন্তু কেউ মুখ খুলে বলতে পারছেন না জেলা জজের বিচার বহিভুর্ত অপকর্ম দুর্নীতি ক্ষমতার অপব্যবহার ও সেচ্ছাচারিতার বিষয়টি উৎঘাটিত হবে, সবাই ভয়ে আছেন, অনেকের কাছে সোলায়মান বলেছেন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন তার অনেক ক্ষমতা তার প্রভাবে মন্ত্রণালয়ের কেউ ব্যবস্থা নিতে সাহস পাচ্ছে না।
ঘুষখোর জেলা জজ সোলায়মানের ঘুষের আলামত দেখে মুখরিত হবেন এ কেমন নিষ্ঠুর ঘুষখোর, মৃত ব্যক্তির আত্মাও মনে হয় কাঁদছে, কাঁদবে কিভাবে মৃত ব্যক্তির তো চোখই উপরে ফেলা হয়েছিল।
জেলা জজ সোলায়মানের আমলে বহুল আলোচিত চোখ উপড়ে ফেলা মামলায় সব আসামিকে অব্যাহতি দেয়া হয়। শরীয়তপুরে ৩২ বছর আগে সংঘটিত হৃদয়বিদারক ‘চোখ উপড়ে ফেলা’ মামলায় সম্প্রতি আদালতের দেওয়া রায়ে জেলা জজ সোলায়মান সকল আসামির অব্যাহতির ঘটনায় চরম ক্ষোভে ফেটে পড়েন ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী।
রায়ের প্রতিবাদে ১২ মে সকালে ভেদরগঞ্জ উপজেলার মোল্লার হাট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
১৯৯২ সালে মোল্লার হাট এলাকায় সংঘটিত ওই নৃশংস ঘটনায় ছয়জন নিরীহ ব্যক্তিকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে তাদের চোখ উপড়ে ফেলা হয়। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই মামলায় ভুক্তভোগী পরিবার বিচার পাওয়ার আশায় দিন গুনছিলেন। কিন্তু সোলায়মানের আদালতের রায়ে সকল আসামি খালাস পাওয়ায় এলাকায় ন্যায়বিচার নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়।
মানববন্ধনে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ, শিক্ষার্থী, মানবাধিকারকর্মী ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বক্তারা বলেন, “এই রায় ন্যায়ের চরম পরাজয়। এটি কেবল একটি পরিবারের ওপর হওয়া জুলুম নয়, এটি গোটা সমাজের ওপর আঘাত। এমন রায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যে, ক্ষমতাবানরা অপরাধ করেও পার পেয়ে যেতে পারে।”
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য জালাল উদ্দীন জুলফিকার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমাদের জীবন আজও থমকে আছে সেই ভয়াল দিনের ঘটনায়। তিন দশক ধরে ন্যায়ের অপেক্ষায় ছিলাম, আজ তা হারিয়ে গেল আদালতের এক রায়ে। এটা কি আমাদের প্রাপ্য ছিল?”
স্থানীয় তরুণ মঈনুল ইসলাম অনিম বলেন, “এটি শুধু ব্যক্তিগত কোনো ক্ষতি নয়, এটি বিচারহীনতার একটি ভয়ঙ্কর দৃষ্টান্ত। দোষীরা শাস্তি না পেলে ভবিষ্যতে এমন অপরাধ আরও বাড়বে।”
মানববন্ধনে বক্তারা মামলাটি পুনরায় তদন্ত ও উচ্চ আদালতে দ্রুত আপিল করার দাবি জানান।
তাঁরা বলেন, “প্রভাবশালীরা যেন বিচারকে প্রভাবিত করতে না পারে, সে বিষয়ে সরকারকে নজর দিতে হবে। এই ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।” একজন আইনজীবী বলেন, শরিয়তপুরের জেলা জজ সোলায়মান বিচার বিভাগের কলঙ্ক।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়



































































































































































































