কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলামকে হেনস্তায় নিজেদের সম্পৃক্ততা পায়নি ছাত্রদল
- Update Time : ০৯:১৫:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
- / ৩৮৮ Time View
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়
জুনিয়র শিক্ষার্থীর হাতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলাম হৃদয়কে হেনস্তার যে অভিযোগ ছাত্রদলের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে তদন্তে সে অভিযোগের প্রমাণ পায়নি সংগঠনটির তদন্ত কমিটির সদস্যরা। মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে ছাত্রদলের গঠিত তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা বলেন, ‘দ্বীন ইসলাম হৃদয়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্তে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। প্রক্টর অফিসে জমা দেওয়া অডিও রেকর্ডে কোনো হুমকিমূলক শব্দচয়ন বা ছাত্রদল-সংক্রান্ত প্রমাণও মেলেনি। আমাদের তদন্তে জানা গেছে, অভিযোগটি আগেই হাউস টিউটরদের উপস্থিতিতে মীমাংসা করা হয়েছিল।’ এছাড়া কিছু বিপথগামী শিক্ষার্থী ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল জানায়, একটি মহল রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার উদ্দেশ্যে দ্বীন ইসলামের ভিডিও ব্যবহার করছে। প্রশাসনের কাছে ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায় ছাত্রদল।
আইসিটি বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের দ্বীন ইসলাম হৃদয়ের ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ২৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল বাশারকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ছাত্রদল। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন যুগ্ম আহ্বায়ক সাইদুল ইসলাম শাওন ও রিয়াজ উদ্দিন অন্তর। এ কমিটিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগেও দেখা গেছে, কোনো ঘটনায় ছাত্রদলের নাম জড়িয়ে দায় চাপানোর প্রবণতা ছিল। আমরা এই অপরাজনীতির তীব্র নিন্দা জানাই। দ্বীন ইসলাম যে অভিযোগ তুলেছেন, তা সম্পূর্ণ হলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তারা সবাই আবাসিক শিক্ষার্থী, দ্বীন ইসলামও তাই। কে কোন সিটে উঠবে বা বদলাবে এটা হল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের বিষয়। এখানে ছাত্রদলের সম্পৃক্ততা নেই। তাহলে কেন ছাত্রদলের নাম টেনে আনা হলো, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।’
তিনি আরও বলেন, ‘হলের সমস্যাটি ইতোমধ্যে প্রভোস্ট ও হাউস টিউটররা সমাধান করেছেন। অভিযুক্তরা মুচলেকা দিয়ে সব কিছু মেনেও নিয়েছে। এরপরও দ্বীন ইসলাম কেন মীমাংসিত বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রোপাগান্ডা চালালো, তা স্পষ্ট নয়। আমরা মনে করি, তিনি কারও প্ররোচনায় অথবা কেউ তার এই ভিডিও ব্যবহার করে ছাত্রদলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করেছে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে আমাদের দূরত্ব সৃষ্টি করতে চাচ্ছে।’
ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সম্প্রতি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কুচক্রী গোষ্ঠী ছাত্রদলের নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, আমরা তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে নিশ্চিত হয়েছি এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এ ঘটনায় ছাত্রদলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। শুধুমাত্র সংগঠনটিকে ব্লেম দেওয়ার জন্য একটি মহল এটি ব্যবহার করেছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই প্রতিটি শিক্ষার্থী নৈতিক অবস্থান থেকে পড়াশোনা, গবেষণা, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করুক। আমাদের প্রত্যাশা বিশ্ববিদ্যালয় যেন সঠিকভাবে ও সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়।’
উল্লেখ্য, গত ২৫ অক্টোবর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলাম হৃদয় ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রকাশ করে অভিযোগ করেন, ছাত্রদলের কয়েকজন তার কক্ষে এসে হুমকি এবং আগ্রাসী আচরণ করেন। ভিডিওতে তিনি আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি এখন আতঙ্কিত, শুধু নিশ্চিত করুন—ছাত্রদল আমার ক্ষতি করবে না। আমি কারও বিচার চাই না, শুধু স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে চাই।’






































































































































































































