ঢাকা ০১:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুদক বিচারক ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি মামলা করতে পারবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১২:৫৭:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৫৩৭ Time View

বিচারক ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার আগে সরকারের অনুমতি বাধ্যতামূলক ধারা (৩২(ক)) বাতিলের প্রস্তাব নিয়ে দুদক অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া তৈরি করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অধ্যাদেশটির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, দুদক এখন সরাসরি মামলা করতে পারবে।

দুদক সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে খসড়া প্রস্তুত হয়েছে। কমিশন গত ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন।

২০১৩ সালে যুক্ত ৩২(ক) ধারা ২০১৪ সালে উচ্চ আদালতের নির্দেশে কার্যত বাতিল হয়ে যায়।

দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম বলেন, ‘উচ্চ আদালতের রায়ের পর থেকে ধারা কার্যত নিষ্ক্রিয় ছিল। সরকার যদি আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করে, সেটি প্রশংসনীয় সিদ্ধান্ত হবে।’

খসড়া অধ্যাদেশে কমিশনের কাঠামোগত সংস্কারের প্রস্তাবও আছে। কমিশনারদের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে চার বছরে কমানো হবে, তিন সদস্যের মধ্যে অন্তত একজন নারী থাকবেন। সাত সদস্যের নির্বাচনী কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যার নেতৃত্বে থাকবেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারক।

অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে থাকবেন নারী বিচারক, মহাহিসাব নিরীক্ষক, নিয়ন্ত্রক, সরকারি/বিচার কমিশনের চেয়ারম্যান, স্পিকারের মনোনীত সরকার ও বিরোধী দলের একজন করে সংসদ সদস্য এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত সুশাসন বিশেষজ্ঞ।

দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান খসড়া অধ্যাদেশকে ‘উন্নত সংস্করণ’ উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি জানান, ‘কিছু কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব বাদ গেছে’, যেমন সিলেকশন অ্যান্ড রিভিউ কমিটি গঠন, শর্টলিস্ট প্রার্থীদের নাম প্রকাশ এবং কমিশনারদের কর্মদক্ষতা মূল্যায়ন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকার নিজেই সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, আবার নিজেই মূল প্রস্তাবগুলো উপেক্ষা করেছে, এটি সংস্কারবিরোধী দৃষ্টান্ত।’

খসড়ায় বলা হয়েছে, যেখানে দুদকের জেলা কার্যালয় থাকবে, সেখানে বিশেষ জজ আদালত স্থাপন করা হবে। জেলা কার্যালয়গুলো প্রাথমিকভাবে অভিযোগ যাচাই করতে পারবে।

এছাড়া দুদকের এখতিয়ার বাড়িয়ে দেশের বাইরে থাকা বাংলাদেশি নাগরিক এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশিদের দুর্নীতিও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। ‘জ্ঞাত আয়’ বলতে বৈধ আয় বোঝানো হয়েছে এবং মামলা, তদন্ত ও অনুসন্ধানের ক্ষমতা আরও বিস্তৃত করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

দুদক বিচারক ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি মামলা করতে পারবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ১২:৫৭:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫

বিচারক ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার আগে সরকারের অনুমতি বাধ্যতামূলক ধারা (৩২(ক)) বাতিলের প্রস্তাব নিয়ে দুদক অধ্যাদেশ ২০২৫-এর খসড়া তৈরি করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অধ্যাদেশটির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, দুদক এখন সরাসরি মামলা করতে পারবে।

দুদক সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে খসড়া প্রস্তুত হয়েছে। কমিশন গত ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন।

২০১৩ সালে যুক্ত ৩২(ক) ধারা ২০১৪ সালে উচ্চ আদালতের নির্দেশে কার্যত বাতিল হয়ে যায়।

দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম বলেন, ‘উচ্চ আদালতের রায়ের পর থেকে ধারা কার্যত নিষ্ক্রিয় ছিল। সরকার যদি আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করে, সেটি প্রশংসনীয় সিদ্ধান্ত হবে।’

খসড়া অধ্যাদেশে কমিশনের কাঠামোগত সংস্কারের প্রস্তাবও আছে। কমিশনারদের মেয়াদ পাঁচ বছর থেকে চার বছরে কমানো হবে, তিন সদস্যের মধ্যে অন্তত একজন নারী থাকবেন। সাত সদস্যের নির্বাচনী কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যার নেতৃত্বে থাকবেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারক।

অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে থাকবেন নারী বিচারক, মহাহিসাব নিরীক্ষক, নিয়ন্ত্রক, সরকারি/বিচার কমিশনের চেয়ারম্যান, স্পিকারের মনোনীত সরকার ও বিরোধী দলের একজন করে সংসদ সদস্য এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত সুশাসন বিশেষজ্ঞ।

দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান খসড়া অধ্যাদেশকে ‘উন্নত সংস্করণ’ উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি জানান, ‘কিছু কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব বাদ গেছে’, যেমন সিলেকশন অ্যান্ড রিভিউ কমিটি গঠন, শর্টলিস্ট প্রার্থীদের নাম প্রকাশ এবং কমিশনারদের কর্মদক্ষতা মূল্যায়ন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকার নিজেই সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, আবার নিজেই মূল প্রস্তাবগুলো উপেক্ষা করেছে, এটি সংস্কারবিরোধী দৃষ্টান্ত।’

খসড়ায় বলা হয়েছে, যেখানে দুদকের জেলা কার্যালয় থাকবে, সেখানে বিশেষ জজ আদালত স্থাপন করা হবে। জেলা কার্যালয়গুলো প্রাথমিকভাবে অভিযোগ যাচাই করতে পারবে।

এছাড়া দুদকের এখতিয়ার বাড়িয়ে দেশের বাইরে থাকা বাংলাদেশি নাগরিক এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশিদের দুর্নীতিও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। ‘জ্ঞাত আয়’ বলতে বৈধ আয় বোঝানো হয়েছে এবং মামলা, তদন্ত ও অনুসন্ধানের ক্ষমতা আরও বিস্তৃত করা হয়েছে।