ঢাকা ০৫:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক থেকে একমাত্র শেয়ারধারী পরিচালকের পদত্যাগ ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গঠনে ছয় দফা প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার : ‘তিন-শূন্য বিশ্ব’ গড়ার আহ্বান বাংলাদেশ ও বিএনপি : আগামী নির্বাচনে সম্ভাবনার দিগন্ত প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সুইডেন ও নরওয়ের ৯ তরুণ রাজনীতিবিদের সাক্ষাৎ নভেম্বরে গণভোট চায় জামায়াত লুটপাট করে সার কারখানা ধ্বংস করে দিয়েছে আ.লীগ সরকার – মঈন খাঁন রাস্তায় ফেলে শিক্ষক পেটানো কোনো সভ্য রাষ্ট্রের চরিত্র নয়: হাসনাত আব্দুল্লাহ সৌদি আরব ও কাতারের মধ্যস্থতায় আফগান-পাকিস্তান সংঘর্ষ স্থগিত: কাবুল প্রেমিকাকে আবাসিক হোটেলে নিয়ে ‘ধর্ষণ’, রক্তক্ষরণে মৃত্যু ডিবি পরিচয়ে বাসর ঘরে ডাকাতি, স্বর্ণালংকার লুট

নভেম্বর থেকে মোবাইল-ব্যাংক হিসাবে লেনদেন আরও সহজ হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১১:৫৭:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১৩৬ Time View

মোবাইল-ব্যাংক হিসাবের লেনদেন আরও সহজ হচ্ছে

নভেম্বর থেকে দেশে অর্থ লেনদেন আরও সহজ হতে যাচ্ছে। গ্রাহকেরা বিকাশ, নগদ ও রকেটের মতো বিভিন্ন মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) থেকে নিজেদের মধ্যে সহজেই অর্থ পাঠানোর পাশাপাশি তুলতেও পারবেন। এ ছাড়া, এমএফএস অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি ব্যাংক বা পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) অ্যাকাউন্টেও অর্থ স্থানান্তর করা যাবে।

ক্যাশলেস অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে গতকাল সোমবার একটি সার্কুলার জারি করেছে। নতুন এই নির্দেশনা আগামী ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে।সার্কুলার অনুযায়ী, ভ্যাটসহ সর্বোচ্চ লেনদেন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে— ব্যাংকের জন্য ০.১৫ শতাংশ, পিএসপির জন্য ০.২০ শতাংশ এবং এমএফএস প্রতিষ্ঠানের জন্য ০.৮৫ শতাংশ। অর্থাৎ, বিকাশ, রকেট বা নগদের মতো কোনো এমএফএস অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য এমএফএস, ব্যাংক বা পিএসপি অ্যাকাউন্টে এক হাজার টাকা পাঠাতে খরচ হবে ৮ টাকা ৫০ পয়সা। একজন গ্রাহক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য কোনো ব্যাংক, এমএফএস বা পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) অ্যাকাউন্টে এক হাজার টাকা পাঠালে ফি দিতে হবে ১ টাকা ৫০ পয়সা। একই পরিমাণ টাকা কোনো পিএসপি অ্যাকাউন্ট থেকে ব্যাংক বা এমএফএসে পাঠালে খরচ হবে ২ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, লেনদেন শুরুর আগে গ্রাহককে সংশ্লিষ্ট চার্জের তথ্য দেখাতে হবে, এবং এই ফি কেবল প্রেরকের কাছ থেকেই নেওয়া যাবে। সার্কুলার অনুযায়ী, অর্থগ্রহণকারীর কাছ থেকে কোনো চার্জ নেওয়া যাবে না। নতুন এই আন্তঃসংযোগযোগ্য ব্যবস্থায় প্রতিটি অ্যাকাউন্টের বর্তমান লেনদেন সীমা অপরিবর্তিত থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সাম্প্রতিক উদ্যোগের ফলে ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (এনপিএসবি) প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যাংক, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ও পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে আন্তঃসংযোগযোগ্য ব্যবস্থায় ডিজিটাল লেনদেন আবার শুরু হবে। এর আগে ২০২০ সালে এনপিএসবি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে একই ধরনের সেবা চালু করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, তৎকালীন সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ সে সময় এই সেবা স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছিল।

দুই বছর পর আইসিটি বিভাগ ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে “বিনিময়” নামে একটি নতুন আন্তঃসংযুক্ত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে তা পরিচালনার দায়িত্ব দেয়। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক অনিয়ম ও চুক্তিভঙ্গের অভিযোগে প্ল্যাটফর্মটি বাতিল করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সম্প্রতি বলেন, আমরা এই প্ল্যাটফর্মের সেবা স্থগিত করেছি, কারণ তা চালু করতে আমাদের বাধ্য করা হয়েছিল। তার কারণ পূর্ববর্তী সরকার বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি প্রস্তুত সিস্টেম হস্তান্তর করেছিল এবং এর শর্তগুলো সঠিকভাবে যাচাই না করেই একটি চুক্তি সইয়ের জন্য চাপ দিয়েছিল।

শিল্প বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভারতের ইউনিফায়েড পেমেন্টস ইন্টারফেসের (ইউপিআই) মডেলে তৈরি ‘বিনিময়’ ব্যবহারকারীদের কাছে জনপ্রিয় হয়নি। এর কারণ ছিল খারাপ ইন্টারফেস, সীমিত প্রচারণা এবং ব্যাংকগুলোর অংশগ্রহণে অনীহা।

এবার নভেম্বর থেকে এনপিএসবির মাধ্যমে নতুন আন্তঃসংযোগযোগ্য ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা চালু করার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও একটি নতুন আন্তঃসংযোগযোগ্য ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম চালু করার পরিকল্পনা করছে। এটি তৈরি করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওপেন-সোর্স উদ্যোগ মোজালুপের সহযোগিতায়। এই উদ্যোগ গেটস ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত। কর্মকর্তারা আশা করছেন, বছরের শেষের দিকে এটি চালু হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

নভেম্বর থেকে মোবাইল-ব্যাংক হিসাবে লেনদেন আরও সহজ হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ১১:৫৭:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

নভেম্বর থেকে দেশে অর্থ লেনদেন আরও সহজ হতে যাচ্ছে। গ্রাহকেরা বিকাশ, নগদ ও রকেটের মতো বিভিন্ন মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) থেকে নিজেদের মধ্যে সহজেই অর্থ পাঠানোর পাশাপাশি তুলতেও পারবেন। এ ছাড়া, এমএফএস অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি ব্যাংক বা পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) অ্যাকাউন্টেও অর্থ স্থানান্তর করা যাবে।

ক্যাশলেস অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে গতকাল সোমবার একটি সার্কুলার জারি করেছে। নতুন এই নির্দেশনা আগামী ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে।সার্কুলার অনুযায়ী, ভ্যাটসহ সর্বোচ্চ লেনদেন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে— ব্যাংকের জন্য ০.১৫ শতাংশ, পিএসপির জন্য ০.২০ শতাংশ এবং এমএফএস প্রতিষ্ঠানের জন্য ০.৮৫ শতাংশ। অর্থাৎ, বিকাশ, রকেট বা নগদের মতো কোনো এমএফএস অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য এমএফএস, ব্যাংক বা পিএসপি অ্যাকাউন্টে এক হাজার টাকা পাঠাতে খরচ হবে ৮ টাকা ৫০ পয়সা। একজন গ্রাহক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য কোনো ব্যাংক, এমএফএস বা পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) অ্যাকাউন্টে এক হাজার টাকা পাঠালে ফি দিতে হবে ১ টাকা ৫০ পয়সা। একই পরিমাণ টাকা কোনো পিএসপি অ্যাকাউন্ট থেকে ব্যাংক বা এমএফএসে পাঠালে খরচ হবে ২ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, লেনদেন শুরুর আগে গ্রাহককে সংশ্লিষ্ট চার্জের তথ্য দেখাতে হবে, এবং এই ফি কেবল প্রেরকের কাছ থেকেই নেওয়া যাবে। সার্কুলার অনুযায়ী, অর্থগ্রহণকারীর কাছ থেকে কোনো চার্জ নেওয়া যাবে না। নতুন এই আন্তঃসংযোগযোগ্য ব্যবস্থায় প্রতিটি অ্যাকাউন্টের বর্তমান লেনদেন সীমা অপরিবর্তিত থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সাম্প্রতিক উদ্যোগের ফলে ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (এনপিএসবি) প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যাংক, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ও পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে আন্তঃসংযোগযোগ্য ব্যবস্থায় ডিজিটাল লেনদেন আবার শুরু হবে। এর আগে ২০২০ সালে এনপিএসবি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে একই ধরনের সেবা চালু করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, তৎকালীন সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ সে সময় এই সেবা স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছিল।

দুই বছর পর আইসিটি বিভাগ ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে “বিনিময়” নামে একটি নতুন আন্তঃসংযুক্ত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে তা পরিচালনার দায়িত্ব দেয়। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক অনিয়ম ও চুক্তিভঙ্গের অভিযোগে প্ল্যাটফর্মটি বাতিল করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সম্প্রতি বলেন, আমরা এই প্ল্যাটফর্মের সেবা স্থগিত করেছি, কারণ তা চালু করতে আমাদের বাধ্য করা হয়েছিল। তার কারণ পূর্ববর্তী সরকার বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি প্রস্তুত সিস্টেম হস্তান্তর করেছিল এবং এর শর্তগুলো সঠিকভাবে যাচাই না করেই একটি চুক্তি সইয়ের জন্য চাপ দিয়েছিল।

শিল্প বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভারতের ইউনিফায়েড পেমেন্টস ইন্টারফেসের (ইউপিআই) মডেলে তৈরি ‘বিনিময়’ ব্যবহারকারীদের কাছে জনপ্রিয় হয়নি। এর কারণ ছিল খারাপ ইন্টারফেস, সীমিত প্রচারণা এবং ব্যাংকগুলোর অংশগ্রহণে অনীহা।

এবার নভেম্বর থেকে এনপিএসবির মাধ্যমে নতুন আন্তঃসংযোগযোগ্য ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা চালু করার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও একটি নতুন আন্তঃসংযোগযোগ্য ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম চালু করার পরিকল্পনা করছে। এটি তৈরি করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওপেন-সোর্স উদ্যোগ মোজালুপের সহযোগিতায়। এই উদ্যোগ গেটস ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত। কর্মকর্তারা আশা করছেন, বছরের শেষের দিকে এটি চালু হবে।