টঙ্গীর তৈরী পোশাক শিল্প এলাকায় কমিউনিটি ও যুবা ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের বৈঠক

- Update Time : ০৯:২৯:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
- / ১৭৬ Time View
টঙ্গীর তৈরী পোশাকশিল্প এলাকায় পরিবেশগত ও সামাজিক মানদণ্ড নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ লেবার স্টাডিজ-বিলস এর উদ্যোগে এবং কানাডা ফান্ড ফর লোকাল ইনিশিয়েটিভ (সিএফএলআই) এর সহায়তায় যুবা ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠক ও স্থানীয় কমিউনিটি প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ১১ অক্টোবর, ২০২৫, শনিবার সকালে পৌরসভা কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিলস উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশ এর সাধারণ সম্পাদক নইমুল আহসান জুয়েল।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সমাজ কর্মী সখিনা আক্তার, সিটি কর্পোরেশন কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন, সাংবাদিক উন্নয়ন কেন্দ্রের সভাপতি অলিদুর রহমান অলি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুপারভাইজার নাসির ইসলাম শাওন, তৈরী পোশাক শিল্পের নিয়োগকারী শাহনূর আলম, আইনজীবি জেবুন্নেসা চুমকি, খইলকুর মসজিদের ইমাম আব্দুস সালাম, স্কুল শিক্ষক রানী আক্তার, উদ্যোক্তা মৌসুমী কবির, স্কুল শিক্ষক মাহবুব রশীদ ও বদিউজ্জামান, তৃতীয় লিঙ্গ প্রতিনিধি অরোভি, কমিউনিটি লিডার আতাউর রহমান, টিভি সাংবাদিক ফয়জুর রহমান, সমাজকর্মী তানজিলুর রহমান সৌমিক, টঙ্গী রিপোর্টাস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান সাহা, শামসুদ্দিন জুয়েল প্রমুখ। টঙ্গী এলাকায় তৈরী পোশাক শিল্পের কারণে সৃষ্ট পরিবেশ ও জলবায়ূ বিষয়ক সমস্যাগুলো তুলে ধরেন বিলস উপ-পরিচালক ও প্রকল্প সমন্বয়কারী মোঃ ইউসুফ আল-মামুন।
বক্তারা বলেন, গাজীপুরার কারখানার কারণে পানিতে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিক ও সমন্বিত না হওয়ার কারণে মানুষের হয়রানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারণে কাজে যেতে সমস্যা হচ্ছে, শিক্ষাজীবন ব্যহত হচ্ছে। এলাকায় ছাদে বৃক্ষরোপন করলে সবুজায়ন বৃদ্ধি পাবে। ময়লা জমে থাকার কারনে জলাবদ্ধতা হয়। এটি দূরীকরণে উদ্যোগ নিতে হবে। শিশু-কিশোরদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে প্রশিক্ষিত করতে হবে। এলাকাভিত্তিক দল বা কমিটি গঠন করে কার্যক্রম এগিয়ে নিতে হবে। স্কুলভিত্তিক বৃক্ষরোপন কর্মসুচি চালু করতে হবে। ঘরের নারীদের সচেতন করতে পারলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দ্রুত অগ্রগতি সম্ভব। তুরাগ নদীকে দূষণমুক্ত করতে জরুরীভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। ড্রেন পরিস্কারে সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নিতে হবে।
বক্তারা উল্লেখ করেন, জলবায়ূ পরিবর্তন কারও একার কাজ নয়, এটি সম্মিলিতভাবে করতে হবে। আমাদের অন্যের সমালোচনা না করে নিজেদের কাজে উদ্যোগী হতে হবে। মহাসড়কের পাশে রাস্তায় বৃক্ষরোপনের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন এবং এ কাজে সকলকে যুক্ত করতে হবে। মানুষের মনস্তাত্বিক সমস্যা হচ্ছে ব্যক্তিগত পর্যায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ না নেয়া। এ ব্যাপারে তাদের সচেতন করতে হবে। কার্যকরভাবে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। রাস্তা নির্মাণ সংক্রান্ত সমস্যাগুলো ঠিকাদার ও পৌরসভার সাথে যৌথভাবে আলোচনা করতে হবে। টঙ্গী এলাকার বস্তি এলাকায় পথনাটকের মাধ্যমে সচেতনতা জোরদার করতে হবে। কমিউনিটি পর্যায়ে সকল পক্ষকে নিয়ে সচেতনতামূলক উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এলাকায় কমিটি গঠন করা যেতে পারে। মসজিদ, হাসপাতাল সহ বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় প্রচারনা চালাতে হবে। ব্র্যান্ডগুলোকে এ বিষয়ে সচেতন করলে কারখানায় পরিবেশ উন্নয়নে মালিকপক্ষ বাধ্য হবে। কারখানাগুলো নিয়মিত পরিদর্শন ও সেখানে কাজ শুরু করতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ও থানায় বৈঠক করে কমিটি গঠন করে দিতে হবে।নাসির ইসলাম শাওন বলেন, টঙ্গীতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য শিগগীরই বিন বিতরণ করা হবে। বর্জ্য ফেলার জন্য ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে।
আব্দুল বাতেন বলেন, কল কারখানা অধিপ্তর যদি তাদের অবস্থান থেকে কারখানাগুলোকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিলে এবং সঠিকভাবে মনিটরিং করে তাহলে পরিবেশগত সমস্যা কমে আসবে। এ ক্ষেত্রে ভ্রাম্যমান আদালতও করা যেতে পারে। বর্জ্য বিন কার্যকর করতে সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
নইমুল আহসান জুয়েল বলেন, কমিউনিটির মধ্যে যদি নেতৃবৃন্দ সঠিক নির্দেশনা দিতে পারেন তবে পরিবেশ উন্নয়নে তা সহায়ক হবে। এ ক্ষেত্রে ট্রেড ইউনিয়ন ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ একত্রে কাজ করতে পারেন। ত্রিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি এগিয়ে নিতে হবে। টঙ্গীকে সবুজায়নের লক্ষ্যে যে সমস্ত ট্রেড ইউনিয়ন কমিটি আছে তাদের সাথে কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের সমন্বয় করে প্রধান কাজগুলো এগিয়ে নিতে হবে। প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, স্থানীয় ও জাতীয় মিডিয়ার সাংবাদিক, আইনজীবি, ব্যবসায়ী, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, বাড়ির মালিক, পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।