ঢাকা ০১:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ২২ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ

পলাশে উৎপাদিত সবজি হাত বদলে পলাশেই দাম চড়া

বোরহান মেহেদী, পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৭:৪২:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৬০ Time View

গত কয়েকদিনের লাগাতার বৃষ্টিতে সবজির ভরা মৌসুমেও উৎপাদন সরবরাহ কম তাই হাট বাজারে থাকা সবজির দাম চড়া।

সবজির জন্য বিখ্যাত উপজেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম পলাশ। শীতকালীন সবজির ভরা মৌসুমেও উৎপাদন সরবরাহ কম থাকায় এখনো সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে। চাহিদার তুলনায় সবজির সরবরাহ কম থাকায় এখানকার বাজার গুলোতেও উর্ধমুখী দামে চড়া।

উপজেলার চরসিন্দুর, গজারিয়া ইউনিয়ানের তালতলী, কালিরবাজার অপরদিকে পন্ডিতপাড়া ও ডাংগার পুবালী মার্কেটে সাপ্তাহিক হাট জমে।

দাম বাড়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে পাইকারি হাট বাজার গুলো ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণার মুখর। পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা কৃষকের কাছ থেকে সবজি কিনতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন। এদিকে দাম ভালো পাওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মুখে কিছুটা হাসি ফুটেছে।

চাষীরা বলছেন, কিছুদিন পূর্বে টানা বৃষ্টির কারণে সবজির খেত ব্যাপক বিনষ্টে উৎপাদন কমে যায়। উৎপাদন কম থাকায় বাজারে সরবরাহ কম। খরচ উঠাতেই হিমশিম খাচ্ছেন তারা। তবে এই মুহূর্তে সন্তুষ্ট কৃষকেরা।

সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম চাহিদা বেশি থাকায় সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। তারা আরও বলছেন, এভাবে চড়া দামে সবজি বিক্রি হওয়ায় মধ্যবিত্ত ও নিন্ম আয়ের মানুষের কষ্টের সীমা নেই। সবজির দাম মাঝে কমলেও আবার কবে কমবে তাও জানে না। পাশাপাশি প্রশাসনের তদারকির অভাবে এক শ্রেণীর মধ্যসত্বভোগী ফায়দা লুটছে।

জানা যায়, উপজেলায় সমতল ও উঁচু জমিতে সারা বছর সবজি চাষ হয়ে থাকে। কৃষকরা সারা বছর সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করেন। এসব উৎপাদিত সবজি দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা চাহিদা পূরণে সরবরাহে বিদেশেও রপ্তানি হয়ে থাকে। বাধ্য হয়েই সবজি, কৃষকরা স্থানীয় বাজারে বিক্রিতে ভালো দাম পাচ্ছে।

উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে, ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, সব ধরনের সবজি পাইকারী এবং খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রির হচ্ছে। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি আলু ৭০ টাকা, পেঁয়াজ ১শ থেকে ১৩০ টাকা, সিম ৭০ টাকা, বেগুন ৫০-৭০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০-৯০ টাকা, পাকা টমেটো ৬০-৬৫ টাকা, শসা ৪০ টাকা কেজি, করলা ৯০, গাজর ৪০ টাকা, পেপে ৪০ টাকা কেজি, প্রতি পিচ লেবু মাঝারি ৫-৭ টাকা, মিস্টিলাউ ৫০-৬৫ টাকা, লাউ ৪০-৭০ টাকা ফুলকপি ৩০-৪০ টাকা, ফুলকপি ৩০-৪০ টাকা, পাতাকপি ৪০-৫০ টাকা পিচ, লালসাক ৪০ টাকা, ধনেপাতা ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আবার কৃষকরা জানান, ‘আমরা ক্ষুদ্র চাষীরা বড় বিপাকে। কিছুদিন পূর্বে টানা বৃষ্টির কারণে সবজির খেত ব্যাপক বিনষ্টে উৎপাদন সরবরাহ কম। পাশাপাশি ফসল উৎপাদনে খরচ বেড়ে গেছে। কৃষি যন্ত্রপাতি, ডিজেল, সার, কীটনাশকের দাম বেশি। এ সবের দাম কমাতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করি।’

কাশেম আলী নামে এক কৃষক জানান, ‘প্রতি হাটবার বাজার থেকে সারাদেশে ট্রাকযোগে সবজি সরবরাহ হয়। পাইকারী সবজি বাজারেও এখন ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে উৎপাদনের তুলনায় চাহিদা বেশি। উর্ধ্বমুখী বাজার হলেও খরচ উঠাতেই হিমশিম খাচ্ছি।’ কেবলই লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছিলাম। হঠাৎ বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় খরচ পোষাতে হিমশিম খাচ্ছি। দামে বিক্রি করলেও শ্রমিক কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে খরচ উঠা নিয়ে চিন্তিত।’

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছরের তুলনায়, এলাকায় সবজির আবাদ বেড়েছে। বর্তমানে সবজির দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকে মুখে হাসি ফুটেছে। বিদেশে সবজি রপ্তানির পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রপ্তানি বৃদ্ধিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

পলাশে উৎপাদিত সবজি হাত বদলে পলাশেই দাম চড়া

বোরহান মেহেদী, পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি
Update Time : ০৭:৪২:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫

গত কয়েকদিনের লাগাতার বৃষ্টিতে সবজির ভরা মৌসুমেও উৎপাদন সরবরাহ কম তাই হাট বাজারে থাকা সবজির দাম চড়া।

সবজির জন্য বিখ্যাত উপজেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম পলাশ। শীতকালীন সবজির ভরা মৌসুমেও উৎপাদন সরবরাহ কম থাকায় এখনো সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে। চাহিদার তুলনায় সবজির সরবরাহ কম থাকায় এখানকার বাজার গুলোতেও উর্ধমুখী দামে চড়া।

উপজেলার চরসিন্দুর, গজারিয়া ইউনিয়ানের তালতলী, কালিরবাজার অপরদিকে পন্ডিতপাড়া ও ডাংগার পুবালী মার্কেটে সাপ্তাহিক হাট জমে।

দাম বাড়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে পাইকারি হাট বাজার গুলো ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণার মুখর। পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা কৃষকের কাছ থেকে সবজি কিনতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন। এদিকে দাম ভালো পাওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মুখে কিছুটা হাসি ফুটেছে।

চাষীরা বলছেন, কিছুদিন পূর্বে টানা বৃষ্টির কারণে সবজির খেত ব্যাপক বিনষ্টে উৎপাদন কমে যায়। উৎপাদন কম থাকায় বাজারে সরবরাহ কম। খরচ উঠাতেই হিমশিম খাচ্ছেন তারা। তবে এই মুহূর্তে সন্তুষ্ট কৃষকেরা।

সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম চাহিদা বেশি থাকায় সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। তারা আরও বলছেন, এভাবে চড়া দামে সবজি বিক্রি হওয়ায় মধ্যবিত্ত ও নিন্ম আয়ের মানুষের কষ্টের সীমা নেই। সবজির দাম মাঝে কমলেও আবার কবে কমবে তাও জানে না। পাশাপাশি প্রশাসনের তদারকির অভাবে এক শ্রেণীর মধ্যসত্বভোগী ফায়দা লুটছে।

জানা যায়, উপজেলায় সমতল ও উঁচু জমিতে সারা বছর সবজি চাষ হয়ে থাকে। কৃষকরা সারা বছর সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করেন। এসব উৎপাদিত সবজি দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা চাহিদা পূরণে সরবরাহে বিদেশেও রপ্তানি হয়ে থাকে। বাধ্য হয়েই সবজি, কৃষকরা স্থানীয় বাজারে বিক্রিতে ভালো দাম পাচ্ছে।

উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে, ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, সব ধরনের সবজি পাইকারী এবং খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রির হচ্ছে। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি আলু ৭০ টাকা, পেঁয়াজ ১শ থেকে ১৩০ টাকা, সিম ৭০ টাকা, বেগুন ৫০-৭০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০-৯০ টাকা, পাকা টমেটো ৬০-৬৫ টাকা, শসা ৪০ টাকা কেজি, করলা ৯০, গাজর ৪০ টাকা, পেপে ৪০ টাকা কেজি, প্রতি পিচ লেবু মাঝারি ৫-৭ টাকা, মিস্টিলাউ ৫০-৬৫ টাকা, লাউ ৪০-৭০ টাকা ফুলকপি ৩০-৪০ টাকা, ফুলকপি ৩০-৪০ টাকা, পাতাকপি ৪০-৫০ টাকা পিচ, লালসাক ৪০ টাকা, ধনেপাতা ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আবার কৃষকরা জানান, ‘আমরা ক্ষুদ্র চাষীরা বড় বিপাকে। কিছুদিন পূর্বে টানা বৃষ্টির কারণে সবজির খেত ব্যাপক বিনষ্টে উৎপাদন সরবরাহ কম। পাশাপাশি ফসল উৎপাদনে খরচ বেড়ে গেছে। কৃষি যন্ত্রপাতি, ডিজেল, সার, কীটনাশকের দাম বেশি। এ সবের দাম কমাতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করি।’

কাশেম আলী নামে এক কৃষক জানান, ‘প্রতি হাটবার বাজার থেকে সারাদেশে ট্রাকযোগে সবজি সরবরাহ হয়। পাইকারী সবজি বাজারেও এখন ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে উৎপাদনের তুলনায় চাহিদা বেশি। উর্ধ্বমুখী বাজার হলেও খরচ উঠাতেই হিমশিম খাচ্ছি।’ কেবলই লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছিলাম। হঠাৎ বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় খরচ পোষাতে হিমশিম খাচ্ছি। দামে বিক্রি করলেও শ্রমিক কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে খরচ উঠা নিয়ে চিন্তিত।’

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছরের তুলনায়, এলাকায় সবজির আবাদ বেড়েছে। বর্তমানে সবজির দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকে মুখে হাসি ফুটেছে। বিদেশে সবজি রপ্তানির পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রপ্তানি বৃদ্ধিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে।