ঢাকা ১২:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ২২ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ-মিশর সর্বোচ্চ আদালতের মধ্যে বিচারিক সহযোগিতা প্রটোকল স্বাক্ষর

আইন-আদালত ডেস্ক
  • Update Time : ০৭:০০:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৫১ Time View

মিশরের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালত এর প্রেসিডেন্ট বিচারপতি বুলোস ফাহমি এর আমন্ত্রণে মিশর অবস্থান করছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

মিশরের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালত এর প্রেসিডেন্ট বিচারপতি বুলোস ফাহমি এর আমন্ত্রণে মিশর অবস্থান করছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

উক্ত সফরের অংশ হিসেবে মাননীয় প্রধান বিচারপতি আজ মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর ২০২৫) সারাদিনব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।

এরই অংশ হিসেবে প্রধান বিচারপতি আজ (০৭ অক্টোবর ২০২৫ ) কায়রোতে অবস্থিত মিশরের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালত এ উক্ত আদালতের প্রেসিডেন্ট বিচারপতি বুলোস ফাহমি’র সাথে স্থানীয় সময় বেলা ১২টায় এক পারস্পরিক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এর আপীল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম এর পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে উভয় দেশের বিচার বিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং বিচার প্রশাসনকে আরও দক্ষ ও স্বচ্ছ করার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এরই ফলশ্রুতিতে দুই দেশের সর্বোচ্চ আদালতের মধ্যে পারস্পরিক বিচার বিভাগীয় সহযোগিতা সংক্রান্ত “আরব প্রজাতন্ত্রের মিশরের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালত এবং বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে বিচারিক সহযোগিতা প্রোটোকল” শীর্ষক একটি সমঝোতা স্মারক (Protocol) স্বাক্ষরিত হয়েছে যা দুই দেশের বিচার বিভাগের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। প্রটোকলে বিচার ব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতকরণ, এবং কারিগরি সহযোগিতা সম্প্রসারণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ এবং মিশরের সুপ্রিম সাংবিধানিক আদালত এর প্রেসিডেন্ট বিচারপতি বুলোস ফাহমি উক্ত প্রটোকলে স্বাক্ষর করেন।

প্রটোকল স্বাক্ষরকালে সেখানে মিশরের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালত এর সকল বিচারকবৃন্দ এবং কায়রোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন।

প্রটোকলের মূল বিষয়বস্তু

স্বাক্ষরিত প্রটোকলে উভয় দেশের সাংবিধানিক, আইনি ও বিচারিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।

প্রটোকল অনুযায়ী দুই দেশের আদালত যৌথ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, সেমিনার, গবেষণা এবং বিচারিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের উদ্যোগ নেবে।

বিশেষজ্ঞ আইনবিদদের মাধ্যমে নির্দিষ্ট বিষয়ে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং যৌথ গবেষণা পরিচালনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

বিচার প্রশাসনের স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতকরণে কারিগরি সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

সহযোগিতা কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য উভয় দেশ লিয়াজোঁ অফিসার নিয়োগ করবে, যারা যোগাযোগ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।

এই প্রটোকল স্বাক্ষরের মাধ্যমে দুই দেশের বিচার বিভাগীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। এটি বিচার ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি, ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে শ্রেষ্ঠ বিচারিক চর্চা বিনিময়ের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রধান বিচারপতি গতকাল (০৬ অক্টোবর ২০২৫ খ্রিঃ) স্থানীয় সময় বেলা ১১ ঘটিকায় আলেকজান্দ্রিয়ায় অবস্থিত মিশরের আপিল আদালত পরিদর্শন করেন এবং উক্ত আদালতের প্রেসিডেন্ট আহমেদ থারয়াতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।

প্রধান বিচারপতির এ সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আরও দৃঢ় অবস্থান অর্জন করেছে। এই সফর বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় একাগ্রতা এবং এ লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতি বিচার বিভাগের অঙ্গীকারকে পুনর্ব্যক্ত করে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগের আধুনিকায়ন ও সংস্কারের ধারাবাহিকতা রক্ষায় এই সফর একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

এর আগে, রোববার (৫ অক্টোবর) ভোরে মিশরের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন তিনি। সফর শেষে ১১ অক্টোবর দেশে ফিরবেন প্রধান বিচারপতি।

এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি সংবিধানে ১৭ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের মিশর যাতায়াত ও অবস্থানকালে ৫ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত অথবা যাত্রার তারিখ থেকে পুনরায় স্বীয় কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত আপিল বিভাগের বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালন অনুমোদন করেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

বাংলাদেশ-মিশর সর্বোচ্চ আদালতের মধ্যে বিচারিক সহযোগিতা প্রটোকল স্বাক্ষর

আইন-আদালত ডেস্ক
Update Time : ০৭:০০:৪১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫

মিশরের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালত এর প্রেসিডেন্ট বিচারপতি বুলোস ফাহমি এর আমন্ত্রণে মিশর অবস্থান করছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

উক্ত সফরের অংশ হিসেবে মাননীয় প্রধান বিচারপতি আজ মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর ২০২৫) সারাদিনব্যাপী বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।

এরই অংশ হিসেবে প্রধান বিচারপতি আজ (০৭ অক্টোবর ২০২৫ ) কায়রোতে অবস্থিত মিশরের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালত এ উক্ত আদালতের প্রেসিডেন্ট বিচারপতি বুলোস ফাহমি’র সাথে স্থানীয় সময় বেলা ১২টায় এক পারস্পরিক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এর আপীল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম এর পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে উভয় দেশের বিচার বিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং বিচার প্রশাসনকে আরও দক্ষ ও স্বচ্ছ করার উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এরই ফলশ্রুতিতে দুই দেশের সর্বোচ্চ আদালতের মধ্যে পারস্পরিক বিচার বিভাগীয় সহযোগিতা সংক্রান্ত “আরব প্রজাতন্ত্রের মিশরের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালত এবং বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে বিচারিক সহযোগিতা প্রোটোকল” শীর্ষক একটি সমঝোতা স্মারক (Protocol) স্বাক্ষরিত হয়েছে যা দুই দেশের বিচার বিভাগের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। প্রটোকলে বিচার ব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতকরণ, এবং কারিগরি সহযোগিতা সম্প্রসারণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ এবং মিশরের সুপ্রিম সাংবিধানিক আদালত এর প্রেসিডেন্ট বিচারপতি বুলোস ফাহমি উক্ত প্রটোকলে স্বাক্ষর করেন।

প্রটোকল স্বাক্ষরকালে সেখানে মিশরের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালত এর সকল বিচারকবৃন্দ এবং কায়রোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন।

প্রটোকলের মূল বিষয়বস্তু

স্বাক্ষরিত প্রটোকলে উভয় দেশের সাংবিধানিক, আইনি ও বিচারিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।

প্রটোকল অনুযায়ী দুই দেশের আদালত যৌথ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, সেমিনার, গবেষণা এবং বিচারিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের উদ্যোগ নেবে।

বিশেষজ্ঞ আইনবিদদের মাধ্যমে নির্দিষ্ট বিষয়ে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং যৌথ গবেষণা পরিচালনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

বিচার প্রশাসনের স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতকরণে কারিগরি সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

সহযোগিতা কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য উভয় দেশ লিয়াজোঁ অফিসার নিয়োগ করবে, যারা যোগাযোগ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।

এই প্রটোকল স্বাক্ষরের মাধ্যমে দুই দেশের বিচার বিভাগীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। এটি বিচার ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি, ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে শ্রেষ্ঠ বিচারিক চর্চা বিনিময়ের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রধান বিচারপতি গতকাল (০৬ অক্টোবর ২০২৫ খ্রিঃ) স্থানীয় সময় বেলা ১১ ঘটিকায় আলেকজান্দ্রিয়ায় অবস্থিত মিশরের আপিল আদালত পরিদর্শন করেন এবং উক্ত আদালতের প্রেসিডেন্ট আহমেদ থারয়াতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।

প্রধান বিচারপতির এ সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আরও দৃঢ় অবস্থান অর্জন করেছে। এই সফর বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় একাগ্রতা এবং এ লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতি বিচার বিভাগের অঙ্গীকারকে পুনর্ব্যক্ত করে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগের আধুনিকায়ন ও সংস্কারের ধারাবাহিকতা রক্ষায় এই সফর একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

এর আগে, রোববার (৫ অক্টোবর) ভোরে মিশরের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন তিনি। সফর শেষে ১১ অক্টোবর দেশে ফিরবেন প্রধান বিচারপতি।

এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি সংবিধানে ১৭ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের মিশর যাতায়াত ও অবস্থানকালে ৫ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত অথবা যাত্রার তারিখ থেকে পুনরায় স্বীয় কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত আপিল বিভাগের বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালন অনুমোদন করেছেন।