ঢাকা ১০:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠল সিলেট নীতিমালা ছাড়াই চলছে জবির প্রক্টরিয়াল বডির কাজ সিঙ্গাপুরে বসে চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ন্ত্রণ করছে হাসিনার দোসর কুখ্যাত মাফিয়া মিজান রূপগঞ্জের আলোচিত প্রধান শিক্ষক হরিকান্তকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন মিশরে ক্লিওপেট্রা আমলের সমুদ্রবন্দরের সন্ধান রিসালাত ইসলাম সজীব দিনাজপুরের গর্ব, ভবিষ্যতের রোল মডেল বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক মুখ্য অঞ্চলের ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের ব্যবসায়ী উন্নয়ন সম্মেলন অনুষ্ঠিত চুরির অভিযোগে কুকুর দিয়ে যুবককে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ৩ প্রধান বিচারপতির রোডম্যাপ ঘোষণার একবছর আরডিজেএ’র সভাপতি বাতেন বিপ্লব, সম্পাদক ইমন
এ ভূমিকম্প সিলেটের জন্য ‘সতর্কসংকেত’, বলছেন বিশেষজ্ঞরা

এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠল সিলেট

মো.মুহিবুর রহমান, সিলেট
  • Update Time : ০৬:৫৮:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ২৪৫ Time View

এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠল সিলেট। আজ রোববার বেলা ১২ টা ১৯মিনিটে এ ভূকম্পন অনুভূত হয়।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে সিলেট অঞ্চলে। সুনামগঞ্জের ছাতকেই এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪। মাত্রা কম হলেও উৎপত্তিস্থলের কারণে এই ভূমিকম্পকে সতর্ক সংকেত হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল অবশ্য ছিল ভারতের আসাম রাজ্যে। এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৯।

এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর সিলেট কেঁপে উঠে ভূমিকম্পে। ওইদিন বিকাল ৫টা ১১ মিনিটে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট থেকে ১৩১ মাইল দূরে ভারতের আসামে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৯। তারও আগে গত ৫ মার্চ সকালে সিলেটে ভূমিকম্প হয়। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকা। উৎপত্তিস্থলে এর মাত্রা ছিলো রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৬। এছাড়া ২৬ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ২টা ৫৫ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডে সিলেটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ভারতের আসাম রাজ্যের মরিগাঁও। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৩।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রুবাইয়াত কবীর জানান, ‘আজ ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে বলে আমাদের কাছে রেকর্ড আছে। এটি স্বল্পমাত্রার ভূমিকম্প। কিন্তু আজকের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল সিলেটের ছাতক। আজ দুপুর ১২টা ১৯ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল রাজধানী ঢাকা থেকে ১৮৫ কিলোমিটার উত্তর–পূর্বে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। ১৪ সেপ্টেম্বরের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের আসামের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে দূরে আসাম ভ্যালি ও হিমালয়ের মাঝামাঝি। এটি মাঝারি থেকে ভারী মাত্রার ভূমিকম্প ছিল।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার জানান, আজ যেখানে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছে, সেটি ডাউকি ফল্ট (ডাউকি চ্যুতি) অঞ্চলে। বাংলাদেশের ভূমিকম্পের দুটি উৎস আছে। একটি উত্তরের দিকে, আরেকটি পূর্ব দিকে। উত্তরের দিকটি হলো ডাউকি ফল্ট। এটি বাংলাদেশের জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। তাই আজ স্বল্পমাত্রার ভূমিকম্প হলেও এটি একটি সতর্কসংকেত দিচ্ছে।

অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, আজ যেখানে ভূমিকম্প উৎপত্তি হয়েছে, সেখানে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দু–তিনটি ৪ বা এর চেয়ে কিছু বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এলাকাটি ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এই ডাউকি ফল্টে ১৭৮৭ সালের ভূমিকম্পে ব্রহ্মপুত্রের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যায়। আবার এর ১১০ বছর পর ১৮৯৭ সালে ‘গ্রেট ইন্ডিয়া আর্থকোয়েক’ নামে পরিচিতি ভূমিকম্পও এখানে হয়। এর ফলে শুধু আসাম ও মেঘালয় নয়, ঢাকা শহরও ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার।

তিনি বলেন, রিখটার স্কেলে তখন ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৮ দশমিক ২। ভূমিকম্পে তখন ঢাকায় পাঁচজন নিহত হন। সে সময় ঢাকায় থাকা ইংরেজ কর্মকর্তারা এখনকার রমনায় তাঁবু করে থাকতেন ভূমিকম্পের পরের কয়েক মাস। কেউ কেউ বুড়িগঙ্গায় বজরায় থাকতেন বলেও ঐতিহাসিক তথ্য ঘেঁটে জানা যায়।

Please Share This Post in Your Social Media

এ ভূমিকম্প সিলেটের জন্য ‘সতর্কসংকেত’, বলছেন বিশেষজ্ঞরা

এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠল সিলেট

মো.মুহিবুর রহমান, সিলেট
Update Time : ০৬:৫৮:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠল সিলেট। আজ রোববার বেলা ১২ টা ১৯মিনিটে এ ভূকম্পন অনুভূত হয়।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে সিলেট অঞ্চলে। সুনামগঞ্জের ছাতকেই এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪। মাত্রা কম হলেও উৎপত্তিস্থলের কারণে এই ভূমিকম্পকে সতর্ক সংকেত হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আগে ১৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল অবশ্য ছিল ভারতের আসাম রাজ্যে। এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৯।

এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর সিলেট কেঁপে উঠে ভূমিকম্পে। ওইদিন বিকাল ৫টা ১১ মিনিটে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট থেকে ১৩১ মাইল দূরে ভারতের আসামে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৯। তারও আগে গত ৫ মার্চ সকালে সিলেটে ভূমিকম্প হয়। এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকা। উৎপত্তিস্থলে এর মাত্রা ছিলো রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৬। এছাড়া ২৬ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ২টা ৫৫ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডে সিলেটে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ভারতের আসাম রাজ্যের মরিগাঁও। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৩।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রুবাইয়াত কবীর জানান, ‘আজ ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে বলে আমাদের কাছে রেকর্ড আছে। এটি স্বল্পমাত্রার ভূমিকম্প। কিন্তু আজকের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল সিলেটের ছাতক। আজ দুপুর ১২টা ১৯ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল রাজধানী ঢাকা থেকে ১৮৫ কিলোমিটার উত্তর–পূর্বে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। ১৪ সেপ্টেম্বরের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের আসামের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে দূরে আসাম ভ্যালি ও হিমালয়ের মাঝামাঝি। এটি মাঝারি থেকে ভারী মাত্রার ভূমিকম্প ছিল।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার জানান, আজ যেখানে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছে, সেটি ডাউকি ফল্ট (ডাউকি চ্যুতি) অঞ্চলে। বাংলাদেশের ভূমিকম্পের দুটি উৎস আছে। একটি উত্তরের দিকে, আরেকটি পূর্ব দিকে। উত্তরের দিকটি হলো ডাউকি ফল্ট। এটি বাংলাদেশের জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। তাই আজ স্বল্পমাত্রার ভূমিকম্প হলেও এটি একটি সতর্কসংকেত দিচ্ছে।

অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার আরও বলেন, আজ যেখানে ভূমিকম্প উৎপত্তি হয়েছে, সেখানে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দু–তিনটি ৪ বা এর চেয়ে কিছু বেশি মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এলাকাটি ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এই ডাউকি ফল্টে ১৭৮৭ সালের ভূমিকম্পে ব্রহ্মপুত্রের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যায়। আবার এর ১১০ বছর পর ১৮৯৭ সালে ‘গ্রেট ইন্ডিয়া আর্থকোয়েক’ নামে পরিচিতি ভূমিকম্পও এখানে হয়। এর ফলে শুধু আসাম ও মেঘালয় নয়, ঢাকা শহরও ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার।

তিনি বলেন, রিখটার স্কেলে তখন ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৮ দশমিক ২। ভূমিকম্পে তখন ঢাকায় পাঁচজন নিহত হন। সে সময় ঢাকায় থাকা ইংরেজ কর্মকর্তারা এখনকার রমনায় তাঁবু করে থাকতেন ভূমিকম্পের পরের কয়েক মাস। কেউ কেউ বুড়িগঙ্গায় বজরায় থাকতেন বলেও ঐতিহাসিক তথ্য ঘেঁটে জানা যায়।