ঢাকা ০৩:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
সিঙ্গাপুরে বসে চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ন্ত্রণ করছে হাসিনার দোসর কুখ্যাত মাফিয়া মিজান রূপগঞ্জের আলোচিত প্রধান শিক্ষক হরিকান্তকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন মিশরে ক্লিওপেট্রা আমলের সমুদ্রবন্দরের সন্ধান রিসালাত ইসলাম সজীব দিনাজপুরের গর্ব, ভবিষ্যতের রোল মডেল বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক মুখ্য অঞ্চলের ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের ব্যবসায়ী উন্নয়ন সম্মেলন অনুষ্ঠিত চুরির অভিযোগে কুকুর দিয়ে যুবককে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ৩ প্রধান বিচারপতির রোডম্যাপ ঘোষণার একবছর আরডিজেএ’র সভাপতি বাতেন বিপ্লব, সম্পাদক ইমন রূপগঞ্জে আলোচিত মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের রহস্য উদ্ঘাটন ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইস্পাত কঠিন ঐক্য ধরে রাখুন: তারেক রহমান

সরকারকে সোজা করতে রাজপথে নেমেছি: গোলাম পরওয়ার

রংপুর ব্যুরো
  • Update Time : ০৭:৫২:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ২০৯ Time View

রংপুর নগরীতে জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর প্রধান উপদেষ্টার ডাকে আমরা সাড়া দিয়ে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করে আসছি। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পরও আবারো কেন আন্দোলনের নামতে হচ্ছে। কারণ সরকার চাপের মুখে মাথা নত করেছে। তাই সরকারকে সোজা করার জন্য দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাজপথে আন্দোলনে নেমেছি।

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রংপুর নগরীর টাউনহল চত্বরে পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলপূর্ব আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, যারা কোটি কোটি টাকা দিয়ে মনোনয়ন বাণিজ্য করতে পারবে না তারাই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় না। যারা কর্তৃত্ববাদী সরকার চালাতে চায় তারাই পিআর পদ্ধতি চায় না। এই পিআর নিয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থা পিআর নিয়ে সার্ভে করেছে। ৭০ শতাংশ মানুষ পিআর এর পক্ষে আছে। শুধু তাই নয় ঐক্যবদ্ধ কমিশনে যে ৩১ টি দল রয়েছে, তার মধ্যে ২৫টি দলই পিআর পদ্ধতি চায়। অথচ বিএনপির কিছু নেতা বলছে পিআর বাংলাদেশের মানুষ বোঝে না। তারা পিআরের সঙ্গে ইভিএমের তুলনা করছে। ইভিএম আর পিআর এক নয়। তাই দেশের মানুষকে আর হাইকোর্ট দেখাবেন না। অনেক নেতা বলছেন পিআর খায় না মাথায় দেয়। কী আজব ব্যাপার! পলিটিক্যালি কেউ এমন মন্তব্য করতে পারে না।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সাংবিধানিক পদে থেকে একদিন হঠাৎ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলে বসলেন, সংবিধানে পিআর পদ্ধতি নেই। তাই আগের নিয়মেই নির্বাচন হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিএনপির সুরে কথা বলছেন। আপনি সাংবিধানিক পদে থেকে এটা বলতে পারেন না। আমাদের কাছেও সংবিধান রয়েছে। সংবিধানের কোথায় নির্বাচন পদ্ধতি উল্লেখ নেই। তাই আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, আপনারা পিআরের পক্ষে গণভোটের ব্যবস্থা করুন। এই গণভোটের মাধ্যমে পিআর নিয়ে মতামত নিন। অধিকাংশ জনগণ যদি পিআর মানে তাহলে আপনাদেরও পিআর মানতে হবে। আর জনগণ যদি পিআর না মানে, তাহলে আমরা সেটা মেনে নেবো। গায়ের জোরে দেশ শাষনের সময় শেষ হয়ে গেছে। এই বাংলাদেশ এখন আর সেই বাংলাদেশ নাই। বিরোধী দলকে দমন নিপীড়ন, আইন আদালতে মামলা দিয়ে দাবিয়ে রেখে আজীবন ক্ষমতায় থাকার দিন শেষ হয়ে গেছে।

প্রধান উপদেষ্টা প্রসঙ্গে জামায়াতের এই নেতা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা লন্ডনে গিয়ে একটি পার্টির দলের প্রধানের সঙ্গে মিটিং করেছেন। লন্ডনে বসে যুক্ত প্রেসব্রিফিং করেছেন। সেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হয়নি। নির্বাচনের ঘোষণা লন্ডনে বসে দিয়েছেন। দেশে ফিরে ঘোষণা দিতে পারতেন। তাছাড়া জুলাই সনদ ঘোষণার সময় আপনি বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেননি। যার কারণে বিএনপি এই জুলাই সনদ ঘোষণায় খুশি।

গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা বুঝতে পারছি, রহস্যজনকভাবে একটি শক্তি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বাস্তবায়নে বাধা দিচ্ছে। সরকার লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় রাখতে পারছে না। তাই আমরা দাবি, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে তার ভিত্তিতেই জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। এখন একটি দল প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বলছে, এই সংস্কারের আইনি ভিত্তি দেওয়ার কী প্রয়োজন। যত আইন সংস্কার করেন আমরা ক্ষমতায় গেলে তা মুছে দেব। তারা এখনই যদি এসব বলতে পারে তবে তাদের ইচ্ছার মধ্যে দুরভিসন্ধি আছে।

বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামোতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়ন না করে অবস্থায় আগের মতো নির্বাচন দিলে আর একটি হাসিনার জন্ম নিবে। ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে। কিন্ত বাংলার মানুষ তা মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল।

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে রংপুর নগরীতে বড় শোডাউন করেছে জামায়াতে ইসলামী। টাউনহল মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এতে রংপুর জেলার বিভিন্ন থানা ও নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। এ সময় নেতাকর্মীরা স্লোগান দেন— এই মুহূর্তে দরকার, পিআর আর সংস্কার; সংসদের উভয় কক্ষে, পিআর চালু করতে হবে; আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ; ১৪ দলের কার্যক্রম, নিষিদ্ধ কর করতে হবে। বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর শাপলা চত্বরে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।

রংপুর মহানগর জামায়াতে ইসলামীর মহানগর আমীর এটিএম আজম খানের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও জেলা এবং মহানগরের নেতারা।

Please Share This Post in Your Social Media

সরকারকে সোজা করতে রাজপথে নেমেছি: গোলাম পরওয়ার

রংপুর ব্যুরো
Update Time : ০৭:৫২:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর প্রধান উপদেষ্টার ডাকে আমরা সাড়া দিয়ে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করে আসছি। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পরও আবারো কেন আন্দোলনের নামতে হচ্ছে। কারণ সরকার চাপের মুখে মাথা নত করেছে। তাই সরকারকে সোজা করার জন্য দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাজপথে আন্দোলনে নেমেছি।

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রংপুর নগরীর টাউনহল চত্বরে পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলপূর্ব আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, যারা কোটি কোটি টাকা দিয়ে মনোনয়ন বাণিজ্য করতে পারবে না তারাই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় না। যারা কর্তৃত্ববাদী সরকার চালাতে চায় তারাই পিআর পদ্ধতি চায় না। এই পিআর নিয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থা পিআর নিয়ে সার্ভে করেছে। ৭০ শতাংশ মানুষ পিআর এর পক্ষে আছে। শুধু তাই নয় ঐক্যবদ্ধ কমিশনে যে ৩১ টি দল রয়েছে, তার মধ্যে ২৫টি দলই পিআর পদ্ধতি চায়। অথচ বিএনপির কিছু নেতা বলছে পিআর বাংলাদেশের মানুষ বোঝে না। তারা পিআরের সঙ্গে ইভিএমের তুলনা করছে। ইভিএম আর পিআর এক নয়। তাই দেশের মানুষকে আর হাইকোর্ট দেখাবেন না। অনেক নেতা বলছেন পিআর খায় না মাথায় দেয়। কী আজব ব্যাপার! পলিটিক্যালি কেউ এমন মন্তব্য করতে পারে না।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সাংবিধানিক পদে থেকে একদিন হঠাৎ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলে বসলেন, সংবিধানে পিআর পদ্ধতি নেই। তাই আগের নিয়মেই নির্বাচন হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিএনপির সুরে কথা বলছেন। আপনি সাংবিধানিক পদে থেকে এটা বলতে পারেন না। আমাদের কাছেও সংবিধান রয়েছে। সংবিধানের কোথায় নির্বাচন পদ্ধতি উল্লেখ নেই। তাই আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, আপনারা পিআরের পক্ষে গণভোটের ব্যবস্থা করুন। এই গণভোটের মাধ্যমে পিআর নিয়ে মতামত নিন। অধিকাংশ জনগণ যদি পিআর মানে তাহলে আপনাদেরও পিআর মানতে হবে। আর জনগণ যদি পিআর না মানে, তাহলে আমরা সেটা মেনে নেবো। গায়ের জোরে দেশ শাষনের সময় শেষ হয়ে গেছে। এই বাংলাদেশ এখন আর সেই বাংলাদেশ নাই। বিরোধী দলকে দমন নিপীড়ন, আইন আদালতে মামলা দিয়ে দাবিয়ে রেখে আজীবন ক্ষমতায় থাকার দিন শেষ হয়ে গেছে।

প্রধান উপদেষ্টা প্রসঙ্গে জামায়াতের এই নেতা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা লন্ডনে গিয়ে একটি পার্টির দলের প্রধানের সঙ্গে মিটিং করেছেন। লন্ডনে বসে যুক্ত প্রেসব্রিফিং করেছেন। সেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হয়নি। নির্বাচনের ঘোষণা লন্ডনে বসে দিয়েছেন। দেশে ফিরে ঘোষণা দিতে পারতেন। তাছাড়া জুলাই সনদ ঘোষণার সময় আপনি বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেননি। যার কারণে বিএনপি এই জুলাই সনদ ঘোষণায় খুশি।

গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা বুঝতে পারছি, রহস্যজনকভাবে একটি শক্তি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বাস্তবায়নে বাধা দিচ্ছে। সরকার লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় রাখতে পারছে না। তাই আমরা দাবি, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়ে তার ভিত্তিতেই জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। এখন একটি দল প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বলছে, এই সংস্কারের আইনি ভিত্তি দেওয়ার কী প্রয়োজন। যত আইন সংস্কার করেন আমরা ক্ষমতায় গেলে তা মুছে দেব। তারা এখনই যদি এসব বলতে পারে তবে তাদের ইচ্ছার মধ্যে দুরভিসন্ধি আছে।

বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামোতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়ন না করে অবস্থায় আগের মতো নির্বাচন দিলে আর একটি হাসিনার জন্ম নিবে। ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে। কিন্ত বাংলার মানুষ তা মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল।

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে রংপুর নগরীতে বড় শোডাউন করেছে জামায়াতে ইসলামী। টাউনহল মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এতে রংপুর জেলার বিভিন্ন থানা ও নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। এ সময় নেতাকর্মীরা স্লোগান দেন— এই মুহূর্তে দরকার, পিআর আর সংস্কার; সংসদের উভয় কক্ষে, পিআর চালু করতে হবে; আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ; ১৪ দলের কার্যক্রম, নিষিদ্ধ কর করতে হবে। বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর শাপলা চত্বরে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।

রংপুর মহানগর জামায়াতে ইসলামীর মহানগর আমীর এটিএম আজম খানের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও জেলা এবং মহানগরের নেতারা।