ঢাকা ১২:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টঙ্গীতে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত কমপক্ষে ১০

মোঃ হানিফ হোসেন, টঙ্গী
  • Update Time : ০৪:০৩:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ২০৩১ Time View

গাজীপুরের টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার আন্তর্জাতিক  স্টেডিয়ামে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল প্রায় ১১টার দিকে বিসিক শিল্প নগরীর এ এম ফ্যাশন ও কালার কার্টুন ফ্যাক্টরি—এই দুই প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা প্রীতি ম্যাচ খেলতে নামে। খেলার শুরু থেকেই ছোটখাটো বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা চলতে থাকে, একপর্যায়ে তা ছড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষে। আধা ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষে লাঠি, রডসহ দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় তিনজনকে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. এনি জানান, আহতদের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম রয়েছে, কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের দ্রুত রেফার করা হয়েছে। স্টেডিয়াম ব্যবহারের অনুমতি নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। আনসার একাডেমির প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আইনুল হক বলেন, তিনি দায়িত্বে থাকলেও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ডা. নাজিমের বড় ছেলে প্রিন্স মৌখিকভাবে শ্রমিকদের খেলার অনুমতি দেন। এলাকাবাসীও দাবি করেছেন, টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহমেদ সুমনের ভাই প্রিন্স তার প্রভাব খাটিয়ে মাঠ ব্যবহারের সুযোগ দেন। প্রিন্স নিজেও স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, এলাকাবাসী তার কাছে গেলে তিনি মৌখিকভাবে খেলতে অনুমতি দেন। তবে প্রশ্ন উঠেছে—আন্তর্জাতিক মানের একটি সরকারি স্টেডিয়ামে যেখানে জাতীয় দলের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প চলছে এবং আনসার একাডেমি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বে আছে, সেখানে কিভাবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মৌখিক অনুমতি দেওয়া হলো।

আনসার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংঘর্ষের সময় স্টেডিয়ামে চলমান নির্মাণকাজের কিছু সামগ্রীও লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, খেলা নিয়ে সংঘর্ষের খবর পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংঘর্ষের পর স্টেডিয়াম চত্বর ও আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং সরকারি স্থাপনা ব্যবহারে রাজনৈতিক প্রভাবের ঘটনায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

টঙ্গীতে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত কমপক্ষে ১০

মোঃ হানিফ হোসেন, টঙ্গী
Update Time : ০৪:০৩:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গাজীপুরের টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার আন্তর্জাতিক  স্টেডিয়ামে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল প্রায় ১১টার দিকে বিসিক শিল্প নগরীর এ এম ফ্যাশন ও কালার কার্টুন ফ্যাক্টরি—এই দুই প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা প্রীতি ম্যাচ খেলতে নামে। খেলার শুরু থেকেই ছোটখাটো বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা চলতে থাকে, একপর্যায়ে তা ছড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষে। আধা ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষে লাঠি, রডসহ দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় তিনজনকে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. এনি জানান, আহতদের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম রয়েছে, কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের দ্রুত রেফার করা হয়েছে। স্টেডিয়াম ব্যবহারের অনুমতি নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। আনসার একাডেমির প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আইনুল হক বলেন, তিনি দায়িত্বে থাকলেও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ডা. নাজিমের বড় ছেলে প্রিন্স মৌখিকভাবে শ্রমিকদের খেলার অনুমতি দেন। এলাকাবাসীও দাবি করেছেন, টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহমেদ সুমনের ভাই প্রিন্স তার প্রভাব খাটিয়ে মাঠ ব্যবহারের সুযোগ দেন। প্রিন্স নিজেও স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, এলাকাবাসী তার কাছে গেলে তিনি মৌখিকভাবে খেলতে অনুমতি দেন। তবে প্রশ্ন উঠেছে—আন্তর্জাতিক মানের একটি সরকারি স্টেডিয়ামে যেখানে জাতীয় দলের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প চলছে এবং আনসার একাডেমি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বে আছে, সেখানে কিভাবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মৌখিক অনুমতি দেওয়া হলো।

আনসার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংঘর্ষের সময় স্টেডিয়ামে চলমান নির্মাণকাজের কিছু সামগ্রীও লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, খেলা নিয়ে সংঘর্ষের খবর পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংঘর্ষের পর স্টেডিয়াম চত্বর ও আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং সরকারি স্থাপনা ব্যবহারে রাজনৈতিক প্রভাবের ঘটনায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।