বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানকে শোকজ

- Update Time : ০৬:১২:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫
- / ১৭৭ Time View
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান নিয়ে ক্রমাগত বিতর্কিত ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করার কারণে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৪ আগস্ট) বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে তাকে এই কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর সূত্র জানায়, কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে- আপনি জুলাই-আগস্ট ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান নিয়ে ক্রমাগত কুরুচিপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে আসছেন এবং আত্মদানকারী শহীদদের নিয়ে যে বক্তব্য দিচ্ছেন তা সম্পূর্ণরূপে দলীয় আদর্শ ও গণঅভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থী। মহিমান্বিত এই গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন নিয়ে আপনার বক্তব্য জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। আপনার বক্তব্য দলের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার সুপরিকল্পিত চক্রান্তের প্রয়াস বলে অনেকেই মনে করে। এমনকি আপনি জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতেও আঘাত দিয়ে কথা বলছেন। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে বিএনপি’র সাড়ে ৪০০-এর অধিক নেতাকর্মীসহ ছাত্র-জনতার প্রায় দেড় হাজারের অধিক মানুষ শহীদ হয়েছেন এবং ৩০ হাজারেরও অধিক মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার এ ধরণের বীরোচিত ভূমিকাকে আপনি প্রতিনিয়ত অপমান ও অমর্যাদা করছেন। সুতরাং এ ধরণের উদ্ভট ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী বক্তব্যের কারণে কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার যথাযথ কারণ দর্শীয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লিখিত জবাব দলের নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য আপনাকে নির্দেশ প্রদান করা হলো।
সম্প্রতি একটি টেলিভিশন টকশোতে অংশ নিয়ে ফজলুর রহমান বলেন, ৫ আগস্টের আন্দোলন পরিচালনায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। তিনি দাবি করেন, এই সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করার জন্য ষড়যন্ত্র করে আসছে।
৫ আগস্ট ঘটিয়েছে ‘কালো শক্তি’ জামায়াত: ফজলুর রহমান
তিনি বলেন, ‘যারা ৫ আগস্ট ঘটাইছে, কালো শক্তি, সেই কালো শক্তির নাম হলো জামায়াতে ইসলাম, তাদের যে অগ্রগামী শক্তি তার নাম হইলো ইসলামি ছাত্রশিবির। সারজিস আলমরা, যারা ওই এইটার (অভ্যুত্থানের) অভিনয় করছে, ৫ আগস্টের অভিনেতা যারা, আমি তাদেরকে নেতা বলতে আর চাই না, তাদের আমি অভিনেতা বলব। সেই আলবদর, আল শামস, জামায়াতে ইসলাম আমরা মনে করেছিলাম ৫৪ বছর পর পূর্বপুরুষের পরাজয়ের গ্লানি তারা ভুলে গেছে। কিন্তু না, সেই পরাজয়ের গ্লানি দ্বিগুণ আকারে তাদের মধ্যে এসেছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, জামায়াত ‘চক্রান্ত করে’ দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এবং তাদের পেছনে ‘আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রও’ আছে। তিনি বলেন, ‘তারা চক্রান্ত করে নিজেদের এই দেশে প্রতিষ্ঠিত করেছে, সেই প্রতিষ্ঠার পেছনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র আছে। সে ষড়যন্ত্রের বহিপ্রকাশে তারা এমন একটা শক্তি হয়ে দাঁড়াইছে যে, তাদের এখন অর্থ-বিত্ত সবকিছু আছে।’
তিনি মনে করেন, অনানুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের ক্ষমতাতেও এখন জামায়াতই আছে। তবে দলটি এটাও জানে তারা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। জামায়াতের প্রধান প্রতিবন্ধক হচ্ছে বিএনপি।
তিনি বলেন, ‘তারা টাকা পয়সার মাধ্যমে তরুণ সমাজের যে কোনো একটা অংশকে কনভিন্স করে একটা শক্তি নিয়া সামনে আসছে। এবং সারা বাংলাদেশের এসিল্যান্ড, ইউএনও, পুলিশ, যা আছে ওপরের সচিব পর্যন্ত, বাংলাদেশের সব প্রশাসন তারা দখল করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক, শেয়ার কোম্পানি, মার্কেট, হসপিটাল, বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানের ছাত্রসংগঠন সবকিছু তারা দখল করে তারা এখন মনে করছে আমরা তো এখন আনঅফিশিয়াল ক্ষমতায় আছি, অফিসিয়াল ক্ষমতায় আমরা জীবনেও যেতে পারব না। কারণ ভোটের গোণায় আমরা আগে ছিলাম ৭%, এখন গেলে আরও ১% কমবে, কারণ, মানুষ বুঝে ফেলেছে যে তারা হলো রাজাকারের বাচ্চা, এরা ৫৪ বছর পরেও তারা রাজাকারের কুকীর্তি ভুলে নাই, তারা প্রতিশোধ নিতে চায়।’
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়