ঢাকা ১০:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
পাকিস্তানকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিপাকে বিসিবি সচিবালয়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, আহত ৪০ জন হাসপাতালে সরকার দায়িত্বশীল হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতো না: নাহিদ এবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত: পালিত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় শোক চোরের মানসিকতা নিয়ে রাজনীতিতে আসবেন না : জামায়াত আমির সিলেটে কোন কোন নেতা আসছেন, কোন কোন সড়ক দিয়ে যাবে ‘জুলাই পদযাত্রা’ জানাল এনসিপি মাইলস্টোন স্কুলে ভয়াবহ বিমান বিধ্বংসের ঘটনায় এএসএপিএফ’র শোক জনবহুল এলাকায় যুদ্ধবিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রিট শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে আবার ফিরে গেলেন দুই উপদেষ্টা ও প্রেস সচিব

শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে না পারলে সেটা হবে সরকারের বড় ব্যর্থতা: ইউজিসি চেয়ারম্যান

অনিন্দ্য বিশ্বাস অর্ঘ্য, শেকৃবি প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৯:২১:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫
  • / ৮৮ Time View

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এ দেশে শিক্ষকদের বেতন সবচেয়ে কম উল্লেখ করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, “শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে না পারলে সেটা হবে এই সরকারের বিশাল বড় ফেইলর (ব্যর্থতা)।”

সোমবার (২১ জুলাই) শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) শহীদ ও আহতদের স্মরণে আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, “প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ১৭ হাজার টাকা। এই টাকায় সংসার চালানো অসম্ভব। তাই শিক্ষাখাতে বাজেট না বাড়ালে এটি জাতীয় দুর্যোগে পরিণত হবে।”

অধ্যাপক ড. ফায়েজ বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণ করছি, আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। আবু সাঈদের মতো সাহসী তরুণের পোস্টে লেখা ছিল—‘তুমি যদি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি রুখে দাঁড়াও তবে তুমি বাংলাদেশ।’ এই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পুরো জাতি আজ তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।”

তিনি দেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবদান স্মরণ করে বলেন, “জমি কমে যাচ্ছে, মানুষ বাড়ছে, কিন্তু খাদ্যে ঘাটতি নেই। এটা সম্ভব হয়েছে কৃষিবিদদের জন্য।” এছাড়াও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বহুল কাঙ্ক্ষিত দাবি ‘ইন্টার্নশিপ চালু’র বিষয়ে কাজ করার আশ্বাস দেন তিনি।

আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. এইচ. এম. এম. তারিক হোসেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন, ট্রেজারার অধ্যাপক আবুল বাশার এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. আরফান আলী।

আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জুলাই শহীদ ফারহান ফাইজারের পিতা আলহাজ্ব শহিদুল ইসলাম এবং শহীদ ইয়ামিনের পিতা মো. মহিউদ্দীন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. আশাবুল হক।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরার পাশাপাশি ছাত্রদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়াও উপস্থাপন করেন।

শেকৃবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. আসাদুল্লাহ বলেন, “জুলাই কোনো না কোনোভাবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জড়িত। আমাদের আশাবাদ ছিল এই জুলাই বৈষম্য ও দুর্নীতির অবসান ঘটাবে, কিন্তু এখনো বাস্তবায়ন দেখতে পাচ্ছি না।”

জুলাইয়ের আন্দোলন ছিল গণমানুষের উল্লেখ করে শেকৃবি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি আহমেদুল কবীর তাপস বলেন, “এক বছর পরেও আমরা জুলাইয়ে শহীদ এবং আহতদের তালিকা পাইনি।” শহীদদের মর্যাদায় যেন কোনো বৈষম্য না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জুলাই ৩৬ দিনে তৈরি হয়নি উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সভাপতি আবুল হাসান বলেন, “২০২৪ এর নির্বাচন ছিল শেখ হাসিনার জন্য কাল।” তিনি ইউজিসি চেয়ারম্যানের প্রতি গবেষণা খাতে বাজেট বৃদ্ধির অনুরোধ জানান।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ বলেন, “যেকোনো অন্যায় পতনের জন্য কিছু মানুষ আত্মত্যাগ করে। তেমনি এই ফ্যাসিস্টের পতনের জন্য আমাদের ছোট ছোট বাচ্চারা নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছে।”

তিনি আরও জানান, পূর্বে সার্কভুক্ত দেশগুলোতে শিক্ষার্থীদের ট্যুরের ব্যবস্থা থাকলেও গত পাঁচ বছর তা বন্ধ রয়েছে। এই ব্যবস্থা পুনরায় চালুর জন্য ইউজিসি চেয়ারম্যানের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে না পারলে সেটা হবে সরকারের বড় ব্যর্থতা: ইউজিসি চেয়ারম্যান

অনিন্দ্য বিশ্বাস অর্ঘ্য, শেকৃবি প্রতিনিধি
Update Time : ০৯:২১:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এ দেশে শিক্ষকদের বেতন সবচেয়ে কম উল্লেখ করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেন, “শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে না পারলে সেটা হবে এই সরকারের বিশাল বড় ফেইলর (ব্যর্থতা)।”

সোমবার (২১ জুলাই) শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) শহীদ ও আহতদের স্মরণে আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, “প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ১৭ হাজার টাকা। এই টাকায় সংসার চালানো অসম্ভব। তাই শিক্ষাখাতে বাজেট না বাড়ালে এটি জাতীয় দুর্যোগে পরিণত হবে।”

অধ্যাপক ড. ফায়েজ বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণ করছি, আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। আবু সাঈদের মতো সাহসী তরুণের পোস্টে লেখা ছিল—‘তুমি যদি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি রুখে দাঁড়াও তবে তুমি বাংলাদেশ।’ এই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পুরো জাতি আজ তোমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।”

তিনি দেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবদান স্মরণ করে বলেন, “জমি কমে যাচ্ছে, মানুষ বাড়ছে, কিন্তু খাদ্যে ঘাটতি নেই। এটা সম্ভব হয়েছে কৃষিবিদদের জন্য।” এছাড়াও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বহুল কাঙ্ক্ষিত দাবি ‘ইন্টার্নশিপ চালু’র বিষয়ে কাজ করার আশ্বাস দেন তিনি।

আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. এইচ. এম. এম. তারিক হোসেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন, ট্রেজারার অধ্যাপক আবুল বাশার এবং প্রক্টর অধ্যাপক ড. আরফান আলী।

আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জুলাই শহীদ ফারহান ফাইজারের পিতা আলহাজ্ব শহিদুল ইসলাম এবং শহীদ ইয়ামিনের পিতা মো. মহিউদ্দীন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. আশাবুল হক।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরার পাশাপাশি ছাত্রদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়াও উপস্থাপন করেন।

শেকৃবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মো. আসাদুল্লাহ বলেন, “জুলাই কোনো না কোনোভাবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জড়িত। আমাদের আশাবাদ ছিল এই জুলাই বৈষম্য ও দুর্নীতির অবসান ঘটাবে, কিন্তু এখনো বাস্তবায়ন দেখতে পাচ্ছি না।”

জুলাইয়ের আন্দোলন ছিল গণমানুষের উল্লেখ করে শেকৃবি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি আহমেদুল কবীর তাপস বলেন, “এক বছর পরেও আমরা জুলাইয়ে শহীদ এবং আহতদের তালিকা পাইনি।” শহীদদের মর্যাদায় যেন কোনো বৈষম্য না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জুলাই ৩৬ দিনে তৈরি হয়নি উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সভাপতি আবুল হাসান বলেন, “২০২৪ এর নির্বাচন ছিল শেখ হাসিনার জন্য কাল।” তিনি ইউজিসি চেয়ারম্যানের প্রতি গবেষণা খাতে বাজেট বৃদ্ধির অনুরোধ জানান।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ বলেন, “যেকোনো অন্যায় পতনের জন্য কিছু মানুষ আত্মত্যাগ করে। তেমনি এই ফ্যাসিস্টের পতনের জন্য আমাদের ছোট ছোট বাচ্চারা নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছে।”

তিনি আরও জানান, পূর্বে সার্কভুক্ত দেশগুলোতে শিক্ষার্থীদের ট্যুরের ব্যবস্থা থাকলেও গত পাঁচ বছর তা বন্ধ রয়েছে। এই ব্যবস্থা পুনরায় চালুর জন্য ইউজিসি চেয়ারম্যানের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।