ঢাকা ১০:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টেলিগ্রাম অ্যাপে ‘বিনিয়োগের ফাঁদ’ লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া দুই প্রতারক গ্রেপ্তার

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব্যুরো
  • Update Time : ০৯:৩৯:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
  • / ১১৯ Time View

মনোলোভা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মোটা অংকের মুনাফা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্যরা। এই চক্রের ফাঁদে পড়ে রংপুরের উপজেলার এক যুবকের খোয়া গেছে প্রায় ছয় লাখ টাকা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মামলা করার পর সুনামগঞ্জ থেকে দুই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে তাদের দুজনকে আদালতের মাধ্যমে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আজাদ মিয়া (২৪) ও মারুফ আহমেদ পারভেজ (২১)। তাদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত মোবাইল ফোনসহ একাধিক ডিজিটাল ডিভাইস জব্দ করেছে পুলিশ।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, পীরগঞ্জ উপজেলার কেশবপুর অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য লাবলু মণ্ডলের ছেলে নাহিদ হাসান বাপ্পী টেলিগ্রাম অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে HTTPS://findpenguinTour.Com নামক একটি অনলাইন কোম্পানীর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের সাথে পরিচিত হয়। ওই কোম্পানীতে টাকা বিনিয়োগ করলে মোটা অংকের কমিশন দেয়ার আশ্বাস দেয় নাহিদকে। প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে নাহিদ গত ২১ এপ্রিল নগদ এবং ডাচ্ বাংলা ব্যাংক একাউন্টে ৫ লাখ ৪১ হাজার ৭৬৭ টাকা প্রদান করেন।

এরপর নাহিদ লভ্যাংশসহ টাকা দাবি করলে প্রতারক চক্রটি আরও ৫ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা দাবি করে। এই টাকা দিলে কোম্পানী নাহিদকে ১৬ লাখ টাকা কমিশন প্রদান করবে বলে জানায়। নাহিদ পুনরায় টাকা না দেয়ায় প্রতারক চক্রটি কমিশন না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকে। সেইসাথে ৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা না দিলে কমিশন দিবে না বলে তাকে জানানো হয়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নাহিদের বাবা বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় গত ১৪ মে প্রতারনার মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলাম তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রতারকদের পরিচয় ও অবস্থান সনাক্ত করেন।

এরপর গত ১৮ জুলাই পীরগঞ্জ থানার একটি টিম সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাজপুর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে আজাদ মিয়া এবং বানারশিপুর গ্রামের সাঈদ মিয়ার ছেলে মারুফ আহমদ পারভেজকে গ্রেপ্তার করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলাম বলেন, টেলিগ্রাম অ্যাপ দিয়ে প্রতারণা করে ১০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় মূলহোতাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আসামিরা টেলিগ্রাম অ্যাপ ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া অনলাইন কোম্পানী খুলে মানুষদেরকে বোকা বানিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রতারণামূলকভাবে টাকা নিচ্ছে। চক্রটির সাথে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের সনাক্তসহ গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান পীরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম।

ওসি আরও জানান, দেশে অনলাইন অ্যাপস্ এবং ক্যাসিনোর সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের পাতানো ফাঁদে পড়ে অনেকেই নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন। আমরা প্রতারকদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। প্রতারণা করে যেসব টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, সেগুলোর উৎস ও গন্তব্যও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

টেলিগ্রাম অ্যাপে ‘বিনিয়োগের ফাঁদ’ লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া দুই প্রতারক গ্রেপ্তার

কামরুল হাসান টিটু, রংপুর ব্যুরো
Update Time : ০৯:৩৯:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

মনোলোভা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মোটা অংকের মুনাফা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্যরা। এই চক্রের ফাঁদে পড়ে রংপুরের উপজেলার এক যুবকের খোয়া গেছে প্রায় ছয় লাখ টাকা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মামলা করার পর সুনামগঞ্জ থেকে দুই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে তাদের দুজনকে আদালতের মাধ্যমে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আজাদ মিয়া (২৪) ও মারুফ আহমেদ পারভেজ (২১)। তাদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত মোবাইল ফোনসহ একাধিক ডিজিটাল ডিভাইস জব্দ করেছে পুলিশ।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, পীরগঞ্জ উপজেলার কেশবপুর অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য লাবলু মণ্ডলের ছেলে নাহিদ হাসান বাপ্পী টেলিগ্রাম অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে HTTPS://findpenguinTour.Com নামক একটি অনলাইন কোম্পানীর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের সাথে পরিচিত হয়। ওই কোম্পানীতে টাকা বিনিয়োগ করলে মোটা অংকের কমিশন দেয়ার আশ্বাস দেয় নাহিদকে। প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে নাহিদ গত ২১ এপ্রিল নগদ এবং ডাচ্ বাংলা ব্যাংক একাউন্টে ৫ লাখ ৪১ হাজার ৭৬৭ টাকা প্রদান করেন।

এরপর নাহিদ লভ্যাংশসহ টাকা দাবি করলে প্রতারক চক্রটি আরও ৫ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা দাবি করে। এই টাকা দিলে কোম্পানী নাহিদকে ১৬ লাখ টাকা কমিশন প্রদান করবে বলে জানায়। নাহিদ পুনরায় টাকা না দেয়ায় প্রতারক চক্রটি কমিশন না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকে। সেইসাথে ৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা না দিলে কমিশন দিবে না বলে তাকে জানানো হয়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নাহিদের বাবা বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় গত ১৪ মে প্রতারনার মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলাম তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রতারকদের পরিচয় ও অবস্থান সনাক্ত করেন।

এরপর গত ১৮ জুলাই পীরগঞ্জ থানার একটি টিম সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাজপুর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে আজাদ মিয়া এবং বানারশিপুর গ্রামের সাঈদ মিয়ার ছেলে মারুফ আহমদ পারভেজকে গ্রেপ্তার করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলাম বলেন, টেলিগ্রাম অ্যাপ দিয়ে প্রতারণা করে ১০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় মূলহোতাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আসামিরা টেলিগ্রাম অ্যাপ ব্যবহার করে বিভিন্ন ভুয়া অনলাইন কোম্পানী খুলে মানুষদেরকে বোকা বানিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রতারণামূলকভাবে টাকা নিচ্ছে। চক্রটির সাথে জড়িত অন্যান্য ব্যক্তিদের সনাক্তসহ গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান পীরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম।

ওসি আরও জানান, দেশে অনলাইন অ্যাপস্ এবং ক্যাসিনোর সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের পাতানো ফাঁদে পড়ে অনেকেই নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন। আমরা প্রতারকদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। প্রতারণা করে যেসব টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, সেগুলোর উৎস ও গন্তব্যও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।