ঢাকা ০৯:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
মামলা জট কমানো, ন্যায় বিচার নিশ্চিত ও পরিবেশ সুরক্ষায় এগিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত আমেরিকা শুল্ক না কমালে দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব প্রভাব পড়বে: বাণিজ্য সচিব  টানা দুই বছর ইসরায়েলে হামলা চালাতে সক্ষম ইরান নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে ইসি এখনো অবগত নয়: সিইসি ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ এর নির্মাতা ও অভিনেতাসহ ৬ জনকে লিগ্যাল নোটিশ সাপের কামড়ে চিকিৎসার অভাবে বাড়ছে প্রাণহানি; দেশে নেই নিজস্ব অ্যান্টিভেনম উৎপাদন স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি,কমপ্লিট শাটডাউনের হুঁশিয়ারি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র চিকিৎসাকেন্দ্রে সেবার সংকট স্বেচ্ছাসেবক দলের বহিস্কৃত নেতা সিরাজুল ইসলাম সাথী চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় বাংলাদেশ কংগ্রেস

টঙ্গীর তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসায় মারধর ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ৫ শিক্ষার্থীকে টিসি

মোঃ হানিফ হোসেন, টঙ্গী
  • Update Time : ০৩:৫৫:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
  • / ৬২ Time View

গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় সহপাঠীকে মারধরের অভিযোগে নবম শ্রেণির বিজ্ঞান শাখার ৫ শিক্ষার্থীকে প্রতিষ্ঠান থেকে টিসি (প্রত্যাহারপত্র) দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় মাদ্রাসার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে অধ্যক্ষ ড. হিফজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, গত ২৫ মে ক্লাস চলাকালীন ঘুমিয়ে পড়া শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলামকে তার অপর সহপাঠী সিফাত ডিস্টার্ব করলে মাজহারুল ক্ষিপ্ত হন। ক্লাস বিরতির সময় তিনি ও তার কয়েকজন সহপাঠী মিলে সিফাতকে মারধরের চেষ্টা করেন। এ সময় সিফাতের পক্ষে থেকে  ইফতেখার ইসলাম মারধরে বাধা দিলে তাকেও পরবর্তীতে টার্গেট করা হয়।

অনুসন্ধান করে জানা গেছে, ক্লাস শেষে বিকেলে মাজহারুল ও তার সহযোগীরা সিফাতকে বালাদিল আমিন মসজিদের সামনে থেকে ধরে নিয়ে সিএনজি পাম্পের পাশে একটি মাঠে মারধর করেন। একই জায়গায় ইফতেখারকেও হোস্টেল থেকে তুলে এনে দ্বিতীয় দফায় মারধর করা হয়। আহত ইফতেখার পরে টঙ্গী মেডিকেল হসপিটালে চিকিৎসা নিয়ে ঘটনাটি মাদ্রাসা প্রশাসনকে জানান।

ঘটনার তদন্ত শেষে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ৫ শিক্ষার্থীকে টিসি প্রদান করে। টিসিপ্রাপ্তরা হলেন, মাজহারুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ বিন ফয়সাল, জুবায়ের বিন আলতাফ, মাহির খান ও নাসিমুল হাসান রোহান। সকলেই দাখিল নবম শ্রেণির ছাত্র।

ঘটনা সম্পর্কে জানতে ফোন করা হলে মাজহারুল ইসলাম জানান, “ঘটনাটা অনেক আগে হয়েছে, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে। আমার অভিভাবক মাদ্রাসায় গিয়েছিলেন ঈদের আগে। আমি ২৮ জুন শুরু হওয়া পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৩টি পরীক্ষাও দিয়েছি। কিন্তু হঠাৎ করে আজ জানানো হলো আমাদের ৫ জনকে টিসি দেওয়া হয়েছে। আরেক টিসি প্রাপ্ত শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ বিন ফয়সাল জানান, তিনি মারামারিতে অংশ নেননি, তবে মাঠে উপস্থিত ছিলেন বলে তাকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। তার মা মইরম আক্তার মিনা বলেন, “এটা তদন্ত না, সরাসরি একটি শিক্ষার্থীকে তার ভবিষ্যত থেকে বঞ্চিত করার মতো অন্যায়। আমার ছেলে পরীক্ষাও দিয়েছে, হঠাৎ করে আজকে টিসি দেওয়া হলো। টিসি কি সমাধান? তারা অভিযোগের প্রমাণ আমাদেরকে দেননি।

টিসিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী জুবায়ের বিন আলতাফ জানান, “আমি দূর থেকে মারামারি দেখেছি, কিন্তু কাউকে মারিনি। তার মাও দাবি করেন, ঈদের ছুটির আগে শিক্ষক গোলাম মোস্তফা মাদ্রাসায় যেতে বলেন, পরে জানানো হয় তার ছেলে মারামারির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু ঈদের পর আবার ক্লাসে অংশ নিতে বলা হয় এবং পরীক্ষায়ও অংশ নেয় সে। “এখন হঠাৎ করে টিসির নোটিশ—বিষয়টি আমাদের জন্য বিস্ময়কর,” বলেন তিনি। তবে টিসিপ্রাপ্ত মাহির খান ও নাসিমুল হাসান রোহানের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (জিএস)  সাইদুল ইসলাম জানান, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অনিয়মের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. হিফজুর রহমানের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে ফোন করা হলে তিনি কল রিসিভ করলেও টিসির বিষয়ে প্রশ্ন করা মাত্রই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

টঙ্গীর তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসায় মারধর ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ৫ শিক্ষার্থীকে টিসি

মোঃ হানিফ হোসেন, টঙ্গী
Update Time : ০৩:৫৫:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫

গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় সহপাঠীকে মারধরের অভিযোগে নবম শ্রেণির বিজ্ঞান শাখার ৫ শিক্ষার্থীকে প্রতিষ্ঠান থেকে টিসি (প্রত্যাহারপত্র) দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় মাদ্রাসার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে অধ্যক্ষ ড. হিফজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, গত ২৫ মে ক্লাস চলাকালীন ঘুমিয়ে পড়া শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলামকে তার অপর সহপাঠী সিফাত ডিস্টার্ব করলে মাজহারুল ক্ষিপ্ত হন। ক্লাস বিরতির সময় তিনি ও তার কয়েকজন সহপাঠী মিলে সিফাতকে মারধরের চেষ্টা করেন। এ সময় সিফাতের পক্ষে থেকে  ইফতেখার ইসলাম মারধরে বাধা দিলে তাকেও পরবর্তীতে টার্গেট করা হয়।

অনুসন্ধান করে জানা গেছে, ক্লাস শেষে বিকেলে মাজহারুল ও তার সহযোগীরা সিফাতকে বালাদিল আমিন মসজিদের সামনে থেকে ধরে নিয়ে সিএনজি পাম্পের পাশে একটি মাঠে মারধর করেন। একই জায়গায় ইফতেখারকেও হোস্টেল থেকে তুলে এনে দ্বিতীয় দফায় মারধর করা হয়। আহত ইফতেখার পরে টঙ্গী মেডিকেল হসপিটালে চিকিৎসা নিয়ে ঘটনাটি মাদ্রাসা প্রশাসনকে জানান।

ঘটনার তদন্ত শেষে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ৫ শিক্ষার্থীকে টিসি প্রদান করে। টিসিপ্রাপ্তরা হলেন, মাজহারুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ বিন ফয়সাল, জুবায়ের বিন আলতাফ, মাহির খান ও নাসিমুল হাসান রোহান। সকলেই দাখিল নবম শ্রেণির ছাত্র।

ঘটনা সম্পর্কে জানতে ফোন করা হলে মাজহারুল ইসলাম জানান, “ঘটনাটা অনেক আগে হয়েছে, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে। আমার অভিভাবক মাদ্রাসায় গিয়েছিলেন ঈদের আগে। আমি ২৮ জুন শুরু হওয়া পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৩টি পরীক্ষাও দিয়েছি। কিন্তু হঠাৎ করে আজ জানানো হলো আমাদের ৫ জনকে টিসি দেওয়া হয়েছে। আরেক টিসি প্রাপ্ত শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ বিন ফয়সাল জানান, তিনি মারামারিতে অংশ নেননি, তবে মাঠে উপস্থিত ছিলেন বলে তাকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। তার মা মইরম আক্তার মিনা বলেন, “এটা তদন্ত না, সরাসরি একটি শিক্ষার্থীকে তার ভবিষ্যত থেকে বঞ্চিত করার মতো অন্যায়। আমার ছেলে পরীক্ষাও দিয়েছে, হঠাৎ করে আজকে টিসি দেওয়া হলো। টিসি কি সমাধান? তারা অভিযোগের প্রমাণ আমাদেরকে দেননি।

টিসিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী জুবায়ের বিন আলতাফ জানান, “আমি দূর থেকে মারামারি দেখেছি, কিন্তু কাউকে মারিনি। তার মাও দাবি করেন, ঈদের ছুটির আগে শিক্ষক গোলাম মোস্তফা মাদ্রাসায় যেতে বলেন, পরে জানানো হয় তার ছেলে মারামারির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু ঈদের পর আবার ক্লাসে অংশ নিতে বলা হয় এবং পরীক্ষায়ও অংশ নেয় সে। “এখন হঠাৎ করে টিসির নোটিশ—বিষয়টি আমাদের জন্য বিস্ময়কর,” বলেন তিনি। তবে টিসিপ্রাপ্ত মাহির খান ও নাসিমুল হাসান রোহানের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (জিএস)  সাইদুল ইসলাম জানান, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অনিয়মের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. হিফজুর রহমানের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে ফোন করা হলে তিনি কল রিসিভ করলেও টিসির বিষয়ে প্রশ্ন করা মাত্রই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।