হত্যাচেষ্টা মামলা
জবির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনোয়ারা বেগম কারাগারে

- Update Time : ০৭:০৭:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
- / ১৫৬ Time View
জুলাই আন্দোলনে হত্যাচেষ্টা মামলায় মুক্তিযোদ্ধা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক এসএম আনোয়ারা বেগমের জামিন নামঞ্জুর করা হয়েছে। সেইসাথে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন।
আনোয়ারা বেগমের জামিন আবেদন করেন আসামি পক্ষের আইনজীবী ওবাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন, তিনি এই ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন না এবং কেবল তাকে হয়রানির জন্যই তাকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাই মানবিক কারণে তাকে জামিন দেয়া উচিত।
উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে ম্যাজিস্ট্রেট আসামিপক্ষের আবেদন খারিজ করে দেন এবং তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে তাকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সূত্রাপুর থানার উপ-পরিদর্শক একেএম হাসান মাহমুদুল কবীর কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। জামিন আবেদন করেন আসামি পক্ষের আইনজীবী ওবাইদুল ইসলাম।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে আনোয়ারা বেগমকে আটক করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সূত্রাপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে থানায় নিয়ে আসে।
সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় একটি মামলা করেন। এই মামলার ৪৩ নম্বর আসামি আনোয়ারা বেগম।
উল্লেখ্য, বুধবার (২৮ মে) সন্ধ্যায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে আনোয়ারা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। গত বছরের ১৯ জুলাই বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় স্টার হোটেলের সামনে সুজন মোল্লার চোখে গুলি লাগে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সুজন মোল্লা বাদী হয়ে ১৯২ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।
মামলার বাদী সুজন মোল্লা বলেন, এদের মতো দলকানা শিক্ষকদের জন্য স্বৈরাচারী আমলে শিক্ষক সমাজ কলঙ্কিত হয়েছে। উনি বলতেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যারা কাজ করে, তারা রাজাকার। আর যেহেতু ছাত্রদল-শিবির আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাই এরা রাজাকার। এদের গুলি করে মারা উচিৎ।
সুজন আরও জানান, তিনি পিএসসির সদস্য থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগ ছাড়া কাউকে বিসিএসের জন্য উত্তীর্ণ করতেন না। উনার মতো আওয়ামী দোসরদের সঠিক বিচার দাবি করছি। কারণ উনারা ছাত্রলীগের মাফিয়াদের পুলিশ প্রশাসনে নিযুক্ত করেছেন এবং ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকে টাকা দিয়ে ছাত্রদলসহ অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন করিয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সুজন মোল্লার চোখে গুলি লাগে। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগের ৯৪ জনসহ মোট ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে তিনি মামলা দায়ের করেন। মামলায় শেখ হাসিনাকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের বাকি উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক তথ্যমন্ত্রী আরাফাত রহমান ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।