সচিবালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক, আপাতত কর্মসূচি স্থগিত

- Update Time : ০৫:১৫:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
- / ৯৩ Time View
কর্মসূচি স্থগিত করে নিজ নিজ দপ্তরে কাজে যোগ দিয়েছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বন্ধ করে দেয়া গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার আবারও বিক্ষোভ করবেন বলে ঘোষণা দেন কর্মচারীদের নেতারা। আজকের মধ্যে অধ্যাদেশ বাতিল না হলে সরকারকে অসহযোগিতার ঘোষণা তারা।
সোমবার সচিবালয়ে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বেলা ১১ টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
গত শনিবার থেকে তারা এ আন্দোলন শুরু করেন। আজ সোমবার নিজ নিজ দাপ্তরিক কাজ রেখে বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সচিবালয়ে নতুন ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তারা সচিবালয়ের গেটগুলো বন্ধ করে দেয়।
সমাবেশে সচিবালয়ে কর্মচারীদের নেতা বাদিউল কবীর বলেছেন, অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে সচিবালয়ে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হবে। সরকারকে অসহযোগিতারও হুংকার দেন কর্মচারীদের এ নেতা।
নতুন ভবনের সামনের সমাবেশ শেষে কর্মচারীরা সচিবালয়ের ভেতরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। কর্মচারীরা জনপ্রশাসন সচিবসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সচিবদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে কর্মচারীরা সচিবালয়ের সব গেইট বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করেন। তবে সচিবালকর্মরত ১৫ হাজার কর্মচারীর মধ্যে কয়েকশ কর্মচারী আন্দোলনে অংশ নেন।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ সংশোধন করে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। গতকাল সোমবার রাষ্ট্রপতি এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেন।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারী যদি এমন কোনো কাজে লিপ্ত হন, যা অনানুগত্যের শামিল বা যা অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে অনানুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে; অন্যান্য কর্মচারীর সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া নিজ কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হন; অন্য যেকোনো কর্মচারীকে তাঁর কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তাঁর কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন; এবং যেকোনো সরকারি কর্মচারীকে তাঁর কর্মে উপস্থিত হতে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন, তাহলে তিনি অসদাচরণের দায়ে দণ্ডিত হবেন।’
এসব অপরাধের শাস্তি হিসেবে বলা হয়েছিল, দোষী কর্মচারীকে নিম্নপদ বা নিম্ন বেতন গ্রেডে নামিয়ে দেওয়া, চাকরি হতে অপসারণ বা চাকরি থেকে বরখাস্ত করার দণ্ড দেওয়া যাবে।
অধ্যাদেশে আরও বলা হয়, অভিযোগ গঠনের সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। আর অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে তাঁকে কেন দণ্ড আরোপ করা হবে না, সে বিষয়ে আরও সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। তার ভিত্তিতে দণ্ড আরোপ করা যাবে। এভাবে দণ্ড আরোপ করা হলে দোষী কর্মচারী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। তবে, রাষ্ট্রপতির দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না। যদিও আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে পারবেন।
সরকারের এ অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদনের পর থেকে আন্দোলন করছেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা। তাদের দাবি এ অধ্যাদেশ নিবর্তনমূলক। তারা গত দুদিন সচিবালয়ে সভা-সমাবেশ করে অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। সরকারি কর্মচারীরা এ অধ্যাদেশকে কালো আইন উল্লেখ করে এটি বাতিলের দাবি জানান।