ঢাকা ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
সালাহ উদ্দিন আহমেদ দেশের সম্পদ, তার বিরুদ্ধে কটুক্তি পরিহার করুন স্বৈরাচারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে আইন মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা : কিসের ভিত্তিতে এই নিয়োগ বিচারপতি নিয়োগের সিদ্ধান্তে নিয়োগ পাচ্ছেন বিতর্কিতরাও নিম্ন আদালতে নিয়োগ কেন্দ্রীয়ভাবে জেলা পর্যায়ে ক্ষমতা থাকছে না শালবন বাঁচাতে পরিবেশ উপদেষ্টার একগুচ্ছ ঘোষণা নতুন প্রজন্মকে প্রকৃতিবান্ধব উন্নয়নে সম্পৃক্ত করতে হবে : সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান লিবিয়ায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান আফ্রিকান ইউনিয়নের যুক্তরাষ্ট্র প্রচুর হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন করছে: ট্রাম্প চট্টগ্রাম বন্দর কাউকে দিচ্ছি না, সংস্কার করতে চাচ্ছি: প্রেস সচিব সালাহউদ্দিনের গুম হওয়া নিয়ে যা জানালেন প্রেস সচিব

নিম্ন আদালতে নিয়োগ কেন্দ্রীয়ভাবে জেলা পর্যায়ে ক্ষমতা থাকছে না

আরিফুল হক নভেল
  • Update Time : ১০:২২:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
  • / ৭৬ Time View

সারাদেশের ৬৪টি জেলায় প্রায় ১৭শত নিম্ন আদালতে এবার কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হবে কেন্দ্রীয়ভাবে। এতে করে স্থানীয় পর্যায়ে দীর্ঘকাল থেকে চলে আসা নিয়মের ব্যত্যয় ঘটবে। ফলে জেলা পর্যায়ের জেলা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সমপর্যায়ের বিচারক, চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে নিয়োগদানের কোন ক্ষমতা থাকছে না।

আইন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, এই নিয়োগের ব্যাপারে বিধিও সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আপীল বিভাগের একটি রায় রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, যে জেলার লোক নিয়োগ হবে, সেই জেলার প্রার্থী অগ্রাধিকার পাবে। ওই জেলায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে অন্য জেলার প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। বর্তমান অর্ন্তবর্তী সরকার আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে এই নিয়োগ দান করবেন। এটি কার্যকর হলে আপীল বিভাগের রায় লংঘিত হবে। এছাড়া এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে নিম্ন আদালতের বিচারকদের ভূমিকা খাটো করার শামিল বলে মনে করা হচ্ছে। এতে বিচারকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হবে।

নিম্ন আদালতের বিচারকগণ যেভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করছেন এবং রায় দিচ্ছেন সেক্ষেত্রে যদি নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের পাশ কাটানো হয়, তাহলে জনমনে ভুল ধারণা জন্ম হবে। এক্ষেত্রে যদি বিচারকগণের বিচার কার্যে অস্বচ্ছতার ধারণা করা হয়, তাহলে নিয়োগের বিষয়টিও প্রশ্নের সম্মুখীন হবে। এছাড়া বিধি সংশোধন করে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়োগ দানের বিষয়টি নীতিনির্ধারনী বিষয়। তড়িঘড়ি করে বিধি সংশোধন করে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়োগ দানের বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে সচেতন মহল মনে করেন।

বিগত ১৫ বছর ধরে শুধুমাত্র মন্ত্রী ও সচিবের নির্দেশেই বিভিন্ন স্থানে লোক নিয়োগ দেয়া হতো। শোনা যায়, প্রতি পদের বিপরীতে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়া হতো। শুধু তাই নয়, মন্ত্রী ও আইন সচিব গোলাম সরোয়ারের বাড়ী কসবা এলাকা হওয়ায় ওই এলাকার লোকজনই অধিকাংশ পদে নিয়োগ পেতেন। এমনকি কর্মচারীদের একটি কেন্দ্রীয় সমিতি থাকা সত্বেও কসবা নাম দিয়ে একটি সমিতি করা হয়। এনিয়ে সমালোচনা শুরু হলে মন্ত্রীর নির্দেশে ওই সমিতির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

স্বৈরাচারের আমলে বহু অযোগ্য লোক নিয়োগ পেলেও এ বিষয়টি দেখার কোন উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার গ্রহণ করেননি। এতে প্রতীয়মান হচ্ছে, স্বৈরাচারের দোসর সাবেক আইন সচিব গোলাম সরোয়ারের অনুগতরাই এখন আইন মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করছেন।
এদিকে স্বৈরাচারের দোসর মন্ত্রী জেলে থাকলেও সচিব এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। তিনি যথারীতি অবসর ভাতা নিয়ে আরাম আয়েশেই দিন কাটাচ্ছেন। এখনও তিনি রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। সচিবের নির্ধারিত গাড়ী, বাড়ী, সিকিউরিটি, গাড়ীর তেল, প্রসাধনী সামগ্রীসহ সব কিছুই উপভোগ করছেন।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, মাঠ পর্যায়ে বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে প্রেষণে সার্ভিস কমিশনের সচিবসহ অধীনস্থ সকল পদের নিয়োগ দেয়া হয়। এরাই সার্ভিস কমিশনের কর্মচারীদের নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। প্রশ্ন হচ্ছে মাঠ পর্যায় থেকে বিচারক নিয়ে গঠিত জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের যদি নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে, সেক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে বিচারকদের ক্ষমতা কেন খর্ব করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

নিম্ন আদালতে নিয়োগ কেন্দ্রীয়ভাবে জেলা পর্যায়ে ক্ষমতা থাকছে না

আরিফুল হক নভেল
Update Time : ১০:২২:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

সারাদেশের ৬৪টি জেলায় প্রায় ১৭শত নিম্ন আদালতে এবার কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হবে কেন্দ্রীয়ভাবে। এতে করে স্থানীয় পর্যায়ে দীর্ঘকাল থেকে চলে আসা নিয়মের ব্যত্যয় ঘটবে। ফলে জেলা পর্যায়ের জেলা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সমপর্যায়ের বিচারক, চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে নিয়োগদানের কোন ক্ষমতা থাকছে না।

আইন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, এই নিয়োগের ব্যাপারে বিধিও সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আপীল বিভাগের একটি রায় রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, যে জেলার লোক নিয়োগ হবে, সেই জেলার প্রার্থী অগ্রাধিকার পাবে। ওই জেলায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে অন্য জেলার প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। বর্তমান অর্ন্তবর্তী সরকার আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে এই নিয়োগ দান করবেন। এটি কার্যকর হলে আপীল বিভাগের রায় লংঘিত হবে। এছাড়া এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে নিম্ন আদালতের বিচারকদের ভূমিকা খাটো করার শামিল বলে মনে করা হচ্ছে। এতে বিচারকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হবে।

নিম্ন আদালতের বিচারকগণ যেভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করছেন এবং রায় দিচ্ছেন সেক্ষেত্রে যদি নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের পাশ কাটানো হয়, তাহলে জনমনে ভুল ধারণা জন্ম হবে। এক্ষেত্রে যদি বিচারকগণের বিচার কার্যে অস্বচ্ছতার ধারণা করা হয়, তাহলে নিয়োগের বিষয়টিও প্রশ্নের সম্মুখীন হবে। এছাড়া বিধি সংশোধন করে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়োগ দানের বিষয়টি নীতিনির্ধারনী বিষয়। তড়িঘড়ি করে বিধি সংশোধন করে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়োগ দানের বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে সচেতন মহল মনে করেন।

বিগত ১৫ বছর ধরে শুধুমাত্র মন্ত্রী ও সচিবের নির্দেশেই বিভিন্ন স্থানে লোক নিয়োগ দেয়া হতো। শোনা যায়, প্রতি পদের বিপরীতে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়া হতো। শুধু তাই নয়, মন্ত্রী ও আইন সচিব গোলাম সরোয়ারের বাড়ী কসবা এলাকা হওয়ায় ওই এলাকার লোকজনই অধিকাংশ পদে নিয়োগ পেতেন। এমনকি কর্মচারীদের একটি কেন্দ্রীয় সমিতি থাকা সত্বেও কসবা নাম দিয়ে একটি সমিতি করা হয়। এনিয়ে সমালোচনা শুরু হলে মন্ত্রীর নির্দেশে ওই সমিতির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

স্বৈরাচারের আমলে বহু অযোগ্য লোক নিয়োগ পেলেও এ বিষয়টি দেখার কোন উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার গ্রহণ করেননি। এতে প্রতীয়মান হচ্ছে, স্বৈরাচারের দোসর সাবেক আইন সচিব গোলাম সরোয়ারের অনুগতরাই এখন আইন মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করছেন।
এদিকে স্বৈরাচারের দোসর মন্ত্রী জেলে থাকলেও সচিব এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। তিনি যথারীতি অবসর ভাতা নিয়ে আরাম আয়েশেই দিন কাটাচ্ছেন। এখনও তিনি রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। সচিবের নির্ধারিত গাড়ী, বাড়ী, সিকিউরিটি, গাড়ীর তেল, প্রসাধনী সামগ্রীসহ সব কিছুই উপভোগ করছেন।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, মাঠ পর্যায়ে বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে প্রেষণে সার্ভিস কমিশনের সচিবসহ অধীনস্থ সকল পদের নিয়োগ দেয়া হয়। এরাই সার্ভিস কমিশনের কর্মচারীদের নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। প্রশ্ন হচ্ছে মাঠ পর্যায় থেকে বিচারক নিয়ে গঠিত জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের যদি নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে, সেক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে বিচারকদের ক্ষমতা কেন খর্ব করা হচ্ছে।