ঢাকা ০৪:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে সরকার কুবি শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টায় দুটি বাস সহ গ্রেফতার ২ নোয়াখালীতে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা সাগর-রুনির সন্তান মেঘের হাতে পূর্বাচলের প্লটের দলিল হস্তান্তর করলেন প্রধান উপদেষ্টা অ্যাকশনে নেমেছেন সিলেটের নতুন ডিসি মো. সারওয়ার আলম সম্পত্তির জন‍্য পিতাকে কোপালো দুই ছেলে মহাদেবপুরে ধর্ষককে ছেড়ে দিয়ে নির্যাতিতাকে তালাক দেওয়ালেন মাতব্বররা নোয়াখালীতে জামায়াতের ৭ নেতাকর্মি হত্যা মামলায় আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার প্রতিজ্ঞা ভেঙে হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কি পটুয়াখালীতে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের বুথ ডাকাতির মূলহোতা গ্রেপ্তার

টাঙ্গাইলে মহাসড়কে বাস ডাকাতি, লুট, নারীর শ্লীলতাহানি

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
  • Update Time : ১০:২০:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
  • / ২০৫ Time View

‘আল ইমরান’ পরিবহণ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে মঙ্গলবার রাতে ‘আল ইমরান’ পরিবহণের একটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সকালে বাসটি উদ্ধার করে টাঙ্গাইল সদর থানায় নেওয়া হয়।

রাত সাড়ে ১১টা থেকে বুধবার ভোর ৫টা পর্যন্ত যাত্রীবাহী বাসটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডাকাত দল যাত্রীদের সব লুটে নেয়। লুটপাটের সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।

বাসচালক, সুপারভাইজার ও যাত্রীরা জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে আল ইমরান পরিবহণের যাত্রীবাহী বাসটি রংপুরের উদ্দেশে যাত্রা করে।

বাসের সহকারী আতিকুর রহমান জানান, পথে সাভারের নরসিংহপুর, বাইপাইল, আশুলিয়া থেকে কয়েকজন যাত্রী ওঠেন। ১০ নারীসহ ৪৫ যাত্রী নিয়ে বাসটি রাত সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা অতিক্রম করে।

যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্তের সংযোগ সড়কের কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পর যাত্রীবেশী ৮-১০ জন ডাকাত ছুরি, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্রের মুখে চালকের কাছ থেকে বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়।

পরে তারা যাত্রী, বাসের চালকসহ সবার চোখ–মুখ বেঁধে ফেলে। যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্তের গোলচত্বর এলাকায় গিয়ে বাসটি ঘুরিয়ে আবার ঢাকার দিকে চলতে থাকে। চলাচলের সময় প্রত্যেক যাত্রীকে তল্লাশি করে মুঠোফোন, নগদ টাকা, সোনা ও অন্য মালামাল লুটে নেয়। তারা বাসটি নিয়ে সাভারের চন্দ্রা-আশুলিয়া পর্যন্ত যায়। পরে রাতভর কয়েকবার বাসটি নিয়ে ওই এলাকা থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত চক্কর দেয়।

বাসের চালক আবেদ আলী জানান, সারা রাত বাস নিয়ে ডাকাতরা চার–পাঁচবার টাঙ্গাইল ও চন্দ্রা-আশুলিয়া যাওয়া-আসা করে। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে টাঙ্গাইল শহরের বাইপাস সড়কের শিবপুর এলাকায় বাসটি রেখে ডাকাত দল চলে যায়। পরে তারা যাত্রীদের নিয়ে সকালে টাঙ্গাইল সদর থানায় যান।

সকালে সদর থানায় গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা বাসের স্টাফ ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছেন।

বাস যাত্রী বগুড়ার আদমদীঘির জুয়েল মিয়া জানান, টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য নারী যাত্রীদের তল্লাশির সময় শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। তার চোখ–মুখ বাঁধা ছিল। তবে তিনি নারী যাত্রীদের কান্নাকাটি ও কাকুতি-মিনতি শুনতে পান।

অপর যাত্রী রংপুরের কাউনিয়া এলাকার আকাশ মিয়া জানান, হাত-পা, চোখ-মুখ বেঁধে ডাকাতরা প্রত্যেক যাত্রীর দেহ কয়েকবার তল্লাশি করে। যার যা কিছু ছিল সব নিয়ে যায়।

সদর থানার ওসি তানবীর আহমদ বলেন, মামলার প্রক্রিয়া চলছে। ডাকাত দলকে চিহ্নিত করতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এ মহাসড়কে ইউনিক রয়েলসের একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। ২০২২ সালের ২ আগস্ট একই কায়দায় কুষ্টিয়াগামী একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

Please Share This Post in Your Social Media

টাঙ্গাইলে মহাসড়কে বাস ডাকাতি, লুট, নারীর শ্লীলতাহানি

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
Update Time : ১০:২০:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে মঙ্গলবার রাতে ‘আল ইমরান’ পরিবহণের একটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সকালে বাসটি উদ্ধার করে টাঙ্গাইল সদর থানায় নেওয়া হয়।

রাত সাড়ে ১১টা থেকে বুধবার ভোর ৫টা পর্যন্ত যাত্রীবাহী বাসটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডাকাত দল যাত্রীদের সব লুটে নেয়। লুটপাটের সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।

বাসচালক, সুপারভাইজার ও যাত্রীরা জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে আল ইমরান পরিবহণের যাত্রীবাহী বাসটি রংপুরের উদ্দেশে যাত্রা করে।

বাসের সহকারী আতিকুর রহমান জানান, পথে সাভারের নরসিংহপুর, বাইপাইল, আশুলিয়া থেকে কয়েকজন যাত্রী ওঠেন। ১০ নারীসহ ৪৫ যাত্রী নিয়ে বাসটি রাত সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা অতিক্রম করে।

যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্তের সংযোগ সড়কের কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পর যাত্রীবেশী ৮-১০ জন ডাকাত ছুরি, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্রের মুখে চালকের কাছ থেকে বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়।

পরে তারা যাত্রী, বাসের চালকসহ সবার চোখ–মুখ বেঁধে ফেলে। যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্তের গোলচত্বর এলাকায় গিয়ে বাসটি ঘুরিয়ে আবার ঢাকার দিকে চলতে থাকে। চলাচলের সময় প্রত্যেক যাত্রীকে তল্লাশি করে মুঠোফোন, নগদ টাকা, সোনা ও অন্য মালামাল লুটে নেয়। তারা বাসটি নিয়ে সাভারের চন্দ্রা-আশুলিয়া পর্যন্ত যায়। পরে রাতভর কয়েকবার বাসটি নিয়ে ওই এলাকা থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত চক্কর দেয়।

বাসের চালক আবেদ আলী জানান, সারা রাত বাস নিয়ে ডাকাতরা চার–পাঁচবার টাঙ্গাইল ও চন্দ্রা-আশুলিয়া যাওয়া-আসা করে। ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে টাঙ্গাইল শহরের বাইপাস সড়কের শিবপুর এলাকায় বাসটি রেখে ডাকাত দল চলে যায়। পরে তারা যাত্রীদের নিয়ে সকালে টাঙ্গাইল সদর থানায় যান।

সকালে সদর থানায় গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা বাসের স্টাফ ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছেন।

বাস যাত্রী বগুড়ার আদমদীঘির জুয়েল মিয়া জানান, টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য নারী যাত্রীদের তল্লাশির সময় শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। তার চোখ–মুখ বাঁধা ছিল। তবে তিনি নারী যাত্রীদের কান্নাকাটি ও কাকুতি-মিনতি শুনতে পান।

অপর যাত্রী রংপুরের কাউনিয়া এলাকার আকাশ মিয়া জানান, হাত-পা, চোখ-মুখ বেঁধে ডাকাতরা প্রত্যেক যাত্রীর দেহ কয়েকবার তল্লাশি করে। যার যা কিছু ছিল সব নিয়ে যায়।

সদর থানার ওসি তানবীর আহমদ বলেন, মামলার প্রক্রিয়া চলছে। ডাকাত দলকে চিহ্নিত করতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এ মহাসড়কে ইউনিক রয়েলসের একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। ২০২২ সালের ২ আগস্ট একই কায়দায় কুষ্টিয়াগামী একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।