ঢাকা ০৬:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ

ল্যাবএইডের এমডি-চিকিৎসকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার
  • Update Time : ০৭:৫০:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ জুন ২০২৩
  • / ৯৮ Time View

রাজধানীর ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালে তাহসিন হোসেইন (১৭) নামে এক কিশোরের মৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা গ্রহণে ধানমন্ডি থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার সিএমএম আদালত।

সোমবার (২৬ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারাহ দিবা ছন্দার আদালতে ভুক্তভোগীর বাবা মনির হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। পরে ধানমন্ডি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বাদীপক্ষের আইনজীবী তানভীর আহমেদ সজীব সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন: স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের সার্জন ডা. মো. সাইফুল্লাহ, সহকারী সার্জন ডা. মাকসুদ, ডা. সাব্বির আহমেদ, ডা. মোশাররফ, ডা. কনক ও হাসপাতালের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মো. শাহজাহান।

মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেন, তার ছেলে তাহসিন কিছুদিন থেকে অসুস্থ বোধ করায় গত ২৭ মার্চ তাকে ল্যাবএইডের ডা. সাইফুল্লাহকে দেখানো হয়। তিনি তাৎক্ষণিক তার ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, তার অবস্ট্রাকটিভ স্মল গাট বা নাড়ির প্যাঁচ রয়েছে। যার কারণে তার পেটে ব্যথা এবং সে মলত্যাগ করতে পারছে না। দ্রুত অস্ত্রোপচার করতে হবে। পরে গত ২৮ মার্চ অস্ত্রোপচার করা হয়।

এরপর তাহসিনের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. মাকসুদ বাদীকে জানান অস্ত্রোপচার সফল হয়নি। রোগীকে সুস্থ করতে হলে আবার অপারেশন করতে হবে। এরপর ৬ এপ্রিল দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপচার করেন ডা. সাইফুল্লাহ। দ্বিতীয়বার অপারেশনের পরও রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। দীর্ঘ তিন মাস চিকিৎসা চলার পর গত ২৩ জুন ভিকটিমের মৃত্যু হয়। তিন মাসে তাকে ১৪৪ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়। চিকিৎসাব্যয় হিসেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রায় ২৭ লাখ টাকা বিল করে। এর মধ্যে ১০ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে হাসপাতাল থেকে তার সন্তানের লাশ গ্রহণ করে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।

তাহসিনের বাবা মনির হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ডা. সাইফুল্লাহকে অনেকবার জিজ্ঞেস করেছি আমার ছেলের সমস্যা কী? কিন্তু উনি কোনোবারই সঠিক করে কিছু বলতে পারেননি। অথচ তার দুবার অপারেশন করা হয়েছে। তিনি যে আমার ছেলের ভুল চিকিৎসা করেছেন, তা একশ ভাগ নিশ্চিত। এ সময়ে আমার ছেলেকে ১৪৪ ব্যাগ রক্ত দিতে হয়েছে। আমি প্রথম অপারেশনের পর এখান থেকে রিলিজ নিয়ে ভারতে চিকিৎসা করাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ রোগীকে ছাড়পত্রও প্রদান করেনি। এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, চিকিৎসার নামে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ ও এই চিকিৎসকরা আমার ছেলেকে তিলে তিলে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়।’

Please Share This Post in Your Social Media

ল্যাবএইডের এমডি-চিকিৎসকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

Update Time : ০৭:৫০:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ জুন ২০২৩

রাজধানীর ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালে তাহসিন হোসেইন (১৭) নামে এক কিশোরের মৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা গ্রহণে ধানমন্ডি থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার সিএমএম আদালত।

সোমবার (২৬ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ফারাহ দিবা ছন্দার আদালতে ভুক্তভোগীর বাবা মনির হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। পরে ধানমন্ডি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বাদীপক্ষের আইনজীবী তানভীর আহমেদ সজীব সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন: স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের সার্জন ডা. মো. সাইফুল্লাহ, সহকারী সার্জন ডা. মাকসুদ, ডা. সাব্বির আহমেদ, ডা. মোশাররফ, ডা. কনক ও হাসপাতালের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মো. শাহজাহান।

মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেন, তার ছেলে তাহসিন কিছুদিন থেকে অসুস্থ বোধ করায় গত ২৭ মার্চ তাকে ল্যাবএইডের ডা. সাইফুল্লাহকে দেখানো হয়। তিনি তাৎক্ষণিক তার ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, তার অবস্ট্রাকটিভ স্মল গাট বা নাড়ির প্যাঁচ রয়েছে। যার কারণে তার পেটে ব্যথা এবং সে মলত্যাগ করতে পারছে না। দ্রুত অস্ত্রোপচার করতে হবে। পরে গত ২৮ মার্চ অস্ত্রোপচার করা হয়।

এরপর তাহসিনের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. মাকসুদ বাদীকে জানান অস্ত্রোপচার সফল হয়নি। রোগীকে সুস্থ করতে হলে আবার অপারেশন করতে হবে। এরপর ৬ এপ্রিল দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপচার করেন ডা. সাইফুল্লাহ। দ্বিতীয়বার অপারেশনের পরও রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। দীর্ঘ তিন মাস চিকিৎসা চলার পর গত ২৩ জুন ভিকটিমের মৃত্যু হয়। তিন মাসে তাকে ১৪৪ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়। চিকিৎসাব্যয় হিসেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রায় ২৭ লাখ টাকা বিল করে। এর মধ্যে ১০ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পরিশোধ করে হাসপাতাল থেকে তার সন্তানের লাশ গ্রহণ করে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়।

তাহসিনের বাবা মনির হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ডা. সাইফুল্লাহকে অনেকবার জিজ্ঞেস করেছি আমার ছেলের সমস্যা কী? কিন্তু উনি কোনোবারই সঠিক করে কিছু বলতে পারেননি। অথচ তার দুবার অপারেশন করা হয়েছে। তিনি যে আমার ছেলের ভুল চিকিৎসা করেছেন, তা একশ ভাগ নিশ্চিত। এ সময়ে আমার ছেলেকে ১৪৪ ব্যাগ রক্ত দিতে হয়েছে। আমি প্রথম অপারেশনের পর এখান থেকে রিলিজ নিয়ে ভারতে চিকিৎসা করাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ রোগীকে ছাড়পত্রও প্রদান করেনি। এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, চিকিৎসার নামে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ ও এই চিকিৎসকরা আমার ছেলেকে তিলে তিলে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়।’