ঢাকা ১১:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৫ বছরে সাংবাদিকতার ব্যর্থতা তদন্তে জাতিসংঘকে চিঠি দেবে সরকার: প্রেস সচিব

জাতীয় ডেস্ক
  • Update Time : ০২:১৬:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
  • / ৯ Time View

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের শাসনামল অর্থাৎ ১৫ বছরে বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ভূমিকা পর্যালোচনার জন্য সরকার জাতিসংঘের কাছে চিঠি দেবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

সোমবার (১২ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

প্রেস সচিব বলেন, জাতিসংঘ অফিসকে আমরা একটি চিঠি দিচ্ছি। এটা আজ-কালকের মধ্যে যাবে। চিঠিতে আমরা বলছি, তারা যেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট এক্সপার্ট নিয়ে এসে দেখে বাংলাদেশের জার্নালিজম কীভাবে ব্যর্থ হয়েছে গত ১৫ বছরে। আমরা চাই এটা নিয়ে রিভিউ করতে।

‘হাসিনার কু-প্ররোচনায় কীভাবে সাংবাদিকরা মানুষকে জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে তাকে কিলিংয়ের (হত্যাকাণ্ডের) বৈধতা দিয়েছেন। এ কাজগুলো কারা করেছে? অনেক ক্ষেত্রে একটা ভালো লোক বা আমি জানি তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই, তাকে জঙ্গি ট্যাগ করে দিলেন। এটা মানে কী, আমি রাষ্ট্রকে প্ররোচনা দিচ্ছি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে, তাকে মেরে ফেলতে। এ কাজগুলো তো হয়েছে। আমাদের জার্নালিজমের ফেইলিওর তো অনেকগুলো ছিল।’

শফিকুল আলম বলেন, আপনাদের গণতন্ত্র চলে গেল, তিনটা ভয়াবহ রকমের ভুয়া নির্বাচন হলো। সমাজে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সাংবাদিকদের ভূমিকা কিন্তু সামনে আসে। অনেকেই এখন সুশীল সাজেন। তো এই ফেইলিওরগুলো আমরা জানতে চাই যে, কোথায় কোথায় জার্নালিজমের ফেইলিওর হয়েছে, সেটা নিয়ে ইউএনকে আমরা চিঠি দেব। ’

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমার মনে হয় যে, আমাদের পুরো সোসাইটি, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো সবাই কিন্তু এটা গ্রহণ করে নিয়েছে। আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটা ইউনিভার্সালি অ্যাকসেপ্ট হয়েছে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় পুরো বাংলাদেশ একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে। কোথাও কিছু দেখেছেন? পুরো দেশের মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে। ’

সাংবাদিক সংগঠনগুলোর কঠোর সমালোচনা করে শফিকুল আলম বলেন, ‘সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ে তাদের ইউনিয়নগুলোর সোচ্চার হওয়া উচিত। আপনাদের ইউনিয়নগুলোর ব্যাপারে বলা উচিত। সরকারই আপনাদের হয়ে সব করে দেবে, এটার চেয়েও আমার মনে হয় ইউনিয়নেই আলাপটা তোলা উচিত। নেগোসিয়েশনটা হচ্ছে ইউনিয়নের সঙ্গে মালিকদের। ’

তিনি আরও বলে করেন, ‘আমাদের ইউনিয়ন তো গত ১৫ বছর প্লট নিয়ে ব্যস্ত ছিল, ডিজিএফআইয়ের দালালি নিয়ে ব্যস্ত ছিল। একটা ঠান্ডা মাথার খুনি মনিরুল, তার সঙ্গে সবাই ছবি দিচ্ছে, মনিরুল ভাই আপনি না আসলে দেশ উদ্ধার হতো না, এ সমস্ত মেসেজ দিত। আমার মনে হয় ইউনিয়নের এ আওয়াজগুলো তোলা উচিত। আমাদের সাংবাদিকদের ভয়াবহ রকমের ঠকানো হয়। ’

শফিকুল আলম সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন ৩০ হাজার টাকা নির্ধারণের পক্ষে মত দেন এবং যারা তা দিতে পারবে না তাদের গণমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি ডিএফপির কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশের সাতটি ইউটিউব চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইন্ডিয়ার এটা খুবই ন্যক্কারজনক ঘটনা। এটাতে বোঝা যায় ইন্ডিয়ার কর্তৃপক্ষ ফ্রিডম অব স্পিচে কতটা বিশ্বাস করেন। আমরা এটা দেখছি, যাদের বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তারা বাংলাদেশে খুবই রেসপেক্টেড নিউজপেপার বা ওয়েবসাইট বা টিভি স্টেশন। এটাতে বোঝা যায় তারা (ইন্ডিয়া) সত্যকে নিতে পারছে না, সত্য কথাকে নিতে পারছে না। ’

পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কোনো ইচ্ছা নেই পাল্টা অ্যাকশনে যাওয়ার। তাতে হবে কী, তাদের অ্যাকশনটাকে লেজিটিমাইজ করা হবে। তাদের অ্যাকশনটাকে বৈধতা দেওয়া হবে। আমাদের কোনো ইচ্ছা নাই। আমরা জানি ইন্ডিয়ান মিডিয়া কী তামাশা করে। সত্যিকার অর্থে তারা তামাশা বিক্রি করে প্রতিদিন। ’

Please Share This Post in Your Social Media

১৫ বছরে সাংবাদিকতার ব্যর্থতা তদন্তে জাতিসংঘকে চিঠি দেবে সরকার: প্রেস সচিব

জাতীয় ডেস্ক
Update Time : ০২:১৬:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের শাসনামল অর্থাৎ ১৫ বছরে বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ভূমিকা পর্যালোচনার জন্য সরকার জাতিসংঘের কাছে চিঠি দেবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

সোমবার (১২ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

প্রেস সচিব বলেন, জাতিসংঘ অফিসকে আমরা একটি চিঠি দিচ্ছি। এটা আজ-কালকের মধ্যে যাবে। চিঠিতে আমরা বলছি, তারা যেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট এক্সপার্ট নিয়ে এসে দেখে বাংলাদেশের জার্নালিজম কীভাবে ব্যর্থ হয়েছে গত ১৫ বছরে। আমরা চাই এটা নিয়ে রিভিউ করতে।

‘হাসিনার কু-প্ররোচনায় কীভাবে সাংবাদিকরা মানুষকে জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে তাকে কিলিংয়ের (হত্যাকাণ্ডের) বৈধতা দিয়েছেন। এ কাজগুলো কারা করেছে? অনেক ক্ষেত্রে একটা ভালো লোক বা আমি জানি তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই, তাকে জঙ্গি ট্যাগ করে দিলেন। এটা মানে কী, আমি রাষ্ট্রকে প্ররোচনা দিচ্ছি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে, তাকে মেরে ফেলতে। এ কাজগুলো তো হয়েছে। আমাদের জার্নালিজমের ফেইলিওর তো অনেকগুলো ছিল।’

শফিকুল আলম বলেন, আপনাদের গণতন্ত্র চলে গেল, তিনটা ভয়াবহ রকমের ভুয়া নির্বাচন হলো। সমাজে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সাংবাদিকদের ভূমিকা কিন্তু সামনে আসে। অনেকেই এখন সুশীল সাজেন। তো এই ফেইলিওরগুলো আমরা জানতে চাই যে, কোথায় কোথায় জার্নালিজমের ফেইলিওর হয়েছে, সেটা নিয়ে ইউএনকে আমরা চিঠি দেব। ’

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমার মনে হয় যে, আমাদের পুরো সোসাইটি, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো সবাই কিন্তু এটা গ্রহণ করে নিয়েছে। আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটা ইউনিভার্সালি অ্যাকসেপ্ট হয়েছে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় পুরো বাংলাদেশ একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে। কোথাও কিছু দেখেছেন? পুরো দেশের মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে। ’

সাংবাদিক সংগঠনগুলোর কঠোর সমালোচনা করে শফিকুল আলম বলেন, ‘সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ে তাদের ইউনিয়নগুলোর সোচ্চার হওয়া উচিত। আপনাদের ইউনিয়নগুলোর ব্যাপারে বলা উচিত। সরকারই আপনাদের হয়ে সব করে দেবে, এটার চেয়েও আমার মনে হয় ইউনিয়নেই আলাপটা তোলা উচিত। নেগোসিয়েশনটা হচ্ছে ইউনিয়নের সঙ্গে মালিকদের। ’

তিনি আরও বলে করেন, ‘আমাদের ইউনিয়ন তো গত ১৫ বছর প্লট নিয়ে ব্যস্ত ছিল, ডিজিএফআইয়ের দালালি নিয়ে ব্যস্ত ছিল। একটা ঠান্ডা মাথার খুনি মনিরুল, তার সঙ্গে সবাই ছবি দিচ্ছে, মনিরুল ভাই আপনি না আসলে দেশ উদ্ধার হতো না, এ সমস্ত মেসেজ দিত। আমার মনে হয় ইউনিয়নের এ আওয়াজগুলো তোলা উচিত। আমাদের সাংবাদিকদের ভয়াবহ রকমের ঠকানো হয়। ’

শফিকুল আলম সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন ৩০ হাজার টাকা নির্ধারণের পক্ষে মত দেন এবং যারা তা দিতে পারবে না তাদের গণমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি ডিএফপির কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশের সাতটি ইউটিউব চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইন্ডিয়ার এটা খুবই ন্যক্কারজনক ঘটনা। এটাতে বোঝা যায় ইন্ডিয়ার কর্তৃপক্ষ ফ্রিডম অব স্পিচে কতটা বিশ্বাস করেন। আমরা এটা দেখছি, যাদের বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তারা বাংলাদেশে খুবই রেসপেক্টেড নিউজপেপার বা ওয়েবসাইট বা টিভি স্টেশন। এটাতে বোঝা যায় তারা (ইন্ডিয়া) সত্যকে নিতে পারছে না, সত্য কথাকে নিতে পারছে না। ’

পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কোনো ইচ্ছা নেই পাল্টা অ্যাকশনে যাওয়ার। তাতে হবে কী, তাদের অ্যাকশনটাকে লেজিটিমাইজ করা হবে। তাদের অ্যাকশনটাকে বৈধতা দেওয়া হবে। আমাদের কোনো ইচ্ছা নাই। আমরা জানি ইন্ডিয়ান মিডিয়া কী তামাশা করে। সত্যিকার অর্থে তারা তামাশা বিক্রি করে প্রতিদিন। ’