কুবিতে প্রশ্নফাঁস কাণ্ডে সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে অব্যাহতির দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি

- Update Time : ০৪:৩৫:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
- / ৫ Time View
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) উত্তরপত্রসহ প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে অব্যাহতির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ‘বিপ্লবী ঐক্যজোট’ ব্যানারে একদল শিক্ষার্থী। মানববন্ধন শেষে উপাচার্য বরাবর একটি স্বারকলিপিও প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত সেই শিক্ষক হলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী এম. আনিছুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুর ১ টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘বিচার চাই বিচার চাই, প্রশ্ন ফাঁসের বিচার চাই’, ‘প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তা চাই’, ‘প্রশ্ন ফাঁসে জড়িতদের বিচার চাই’, ‘প্রশ্ন ফাঁসে জড়িতদের চিরস্থায়ী অব্যহতি চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
লোকপ্রশাসন বিভাগের ১৩ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘এসব অসৎ উপায় অবলম্বন করে যারা বিভাগে ফার্স্ট, সেকেন্ড, থার্ড হচ্ছে এবং তারাই দিনশেষে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছে। বর্তমানের এই অথর্ব শিক্ষাব্যবস্থা এসব শিক্ষকদের জন্যই তৈরি হয়েছে। তাই আমরা সবাইকে হুশিয়ার করে দিতে চাই এবং এই ঘটনার দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চাই।’
নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১৫ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী শিব্বির আহমেদ বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁসকে না বলুন, শিক্ষার মানকে এগিয়ে নিয়ে যান। আমরা দেখতে পাচ্ছি প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে ৩.৯৪ সিজিপিএ উঠতেছে এবং শিক্ষকই সেখানে তাকে উত্তরপত্রসহ প্রদান করছেন। এই শিক্ষা ব্যবস্থা বাঙালি জাতিকে কী দেবে? শিক্ষার সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে। যারা প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জড়িত তাদের পদত্যাগ চাই। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের ছবিসহ পোস্টার করে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটে যেন ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।’
গণিত ১২ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ হান্নান রাহিম বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে সবসময় একটা পজেটিভ ব্রেন্ডিংয়ের মধ্য দিয়ে নিয়ে যেতে চাই। কিন্তু এরকম উত্তরপত্রসহ প্রশ্ন ফাঁসের সংবাদগুলো যখন আসে তখন সেই পজিটিভ ব্রেন্ডিংটা আর থাকে না। আমরা অনেকের থেকে জেনেছি প্রশ্ন ফাঁস, নাম্বার টেম্পারিংয়ের সাথে অনেকে জড়িত। আমরা প্রশাসনের কাছে তার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চাই। আমরা অভিযুক্ত শিক্ষককের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে চিরস্থায়ী বহিষ্কার চাই।’
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগে প্রশ্ন ফাঁসের মতো জঘন্য ঘটনার প্রমাণ সাপেক্ষে অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্নফাঁস, নাম্বার টেম্পারিং ও মেযে শিক্ষার্থীদের কুপ্রস্তাবের অনেক অভিযোগ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এসে থাকে; এ বিষয়গুলো কেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করতে হবে। উক্ত ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। প্রশ্ন ফাঁসের মতো জঘন্য কাজে যদি কোন শিক্ষক জড়িত থাকেন তাহলে তিনি তার শিক্ষকতার যোগ্যতাই হারিযেছেন, এমন কাউকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী শিক্ষক হিসেবে আর দেখতে চায় না।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দিবাগত রাতে একটি বেনামি মেইল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো চিঠিতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের চলমান তৃতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় প্রতিটি কোর্সের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে দাবি করা হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আগামীকাল (১৩ মার্চ) অনুষ্ঠিতব্য উক্ত ব্যাচের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই শিক্ষককে তদন্ত চলাকালীন বাধ্যতামূলক ছুটি এবং ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়