জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের
শিশু পুত্র হত্যার বিচার চেয়ে নিরাপত্তাহীনতায় পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

- Update Time : ১১:০৬:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
- / ৭৭ Time View
জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ৮ বছরের শিশু মো. আবু বকরকে শ্বাসরোধে হত্যা করে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ করেছেন তার বাবা মো. জালাল আকন।
হত্যার বিচার চেয়ে মামলা করার পর এখন তিনি ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রতিপক্ষের লোকজন মামলা তুলে নিতে তাদের মারধর, মিথ্যা মামলা ও বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৬’মার্চ) বেলা সাড়ে ১১ টায় পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জালাল আকন ও তার স্ত্রী মিনারা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে তাদের সন্তানের হত্যার বিচার দাবি করেন। জালাল আকন এর বাড়ি পটুয়াখালীর সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের মিঠাপুর গ্রামে। তিনি একজন ঝালমুড়ি বিক্রেতা। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, তার দাদার জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চাচাতো ভাই নিজামুল আকনের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। এই বিষয়ে অন্তত ১৪ বার সালিস হয়েছে এবং সর্বশেষ ২০২২ সালের ১৩ মার্চের সালিসে রায় তার পক্ষে আসে।
সেদিন সন্ধ্যায় সালিস শেষে বাড়িতে ফিরে তিনি দেখেন, তার ছেলে আবু বকর গলায় রশি পেঁচিয়ে গাছের সঙ্গে ঝুলছে। এরপর প্রচার করা হয়, আবু বকর আত্মহত্যা করেছে। তবে তিনি অভিযোগ করেন, চাচাতো ভাই নিজামুল আকন, তার স্ত্রী ফাতিমা বেগম ও ছেলে সাইদুল আকন শিশুটিকে হত্যা করে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে এবং পরে তার গলার রশি খুলে লাশ মাটিতে শুইয়ে রাখে। খবর পেয়ে পটুয়াখালী সদর থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে এবং মৃত্যুর কারণ উদঘাটনের জন্য তা মর্গে পাঠায়।
জালাল আকন আরো বলেন, “৮ বছরের শিশু কীভাবে আত্মহত্যা করতে পারে? আমার ছেলের পা মাটিতে লাগানো ছিল। এটা স্পষ্ট যে, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।”
তিনি থানায় হত্যা মামলা করতে গেলে পুলিশ তা না নিয়ে অপমৃত্যুর মামলা করে এবং তাকে মেডিকেল রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে বলে।
তিন মাস অপেক্ষার পরও রিপোর্ট না পেয়ে তিনি ২০২২ সালের ১৩ জুন পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন। মামলায় চাচাতো ভাই নিজামুল আকন (৪৫), তার স্ত্রী ফাতিমা বেগম (৩৮) ও ছেলে সাইদুল আকনকে (১৪) আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিকে দায়িত্ব দেন।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত শিশুর মা মিনারা বেগম বলেন, মামলার পর আসামিরা মামলা তুলে নিতে নানা ভাবে হয়রানি করছে। তার স্বামী ও তাকেও একাধিকবার মারধর করা হয়েছে এবং দুটি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। বাড়িতে গেলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।এই পরিস্থিতিতে তারা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে থাকতে বাধ্য হয়েছেন। বড় ছেলে ওমর ফারুককে মামার বাড়ি ঢাকায় পাঠিয়েছেন। ছোট ছেলে আবু তালেবকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পার্শ্ববর্তী হকতুল্লাহ গ্রামে মেয়ের জামাইয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তার জন্য প্রশাসন এর নিকট সহযোগিতা চেয়েছেন।
সিআইডির পটুয়াখালী উপপরিদর্শক মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, শিশুটির মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তদন্ত চলছে, প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলে তিনি আশা করেন।