ঢাকা ০১:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
কেরানীগঞ্জে অবৈধ ব্যাটারী কারখানা সিলগালা, ৭ দিনের মধ্যে দস্তা বর্জ্য অপসারণের নির্দেশ স্ত্রীর সাথে অভিমান: চিরকুট লিখে যুবকের আত্মহত্যা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে: গণ অধিকার পরিষদ কাফনের কাপড় পরে সচিবালয় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি ইনকিলাব মঞ্চের নিয়মের মধ্যে না এলে রেস্টুরেন্টগুলোর বিদ্যুৎ ও পানি বিচ্ছিন্ন করা হবে সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগে জড়িতদের শাস্তি দিতে না পারলে আমি চলে যাবো: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে স্নিগ্ধর পদত্যাগ লালদিয়ায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে : বিডা চেয়ারম্যান আ.লীগের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিরা বিএনপিতে আসার বক্তব্য নিয়ে রিজভীর প্রতিবাদ দেশ ছাড়লেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

বিএনপি-জামায়াতকে নিষিদ্ধ আখ্যা দিয়ে পত্র দেয়া পতিত হাসিনার সেবক সেই হেলাল এখনো ঢাকার জেলা জজ

আবদুল গাফফার মাহমুদ
  • Update Time : ১২:৪৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫
  • / ১১৪ Time View

স্বৈরাচারের বেনিফিসিয়ারী দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সব জায়গা থেকে অপসারণ করা হলেও তিনি রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিচার বিভাগকে পচানোর কাজে তিনি এখন মহাব্যস্ত। আছেন রাজকীয় হালে।

কিশোরগঞ্জ জেলার বাসিন্দা হবার সুযোগে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ভাগিনা পরিচয়ে সাবেক আইনমন্ত্রীর বান্ধবী তৌফিকা করিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগি ঢাকার জেলা জজ হেলাল উদ্দিন পুরো জজ কোর্টকে ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের রাজত্বে পরিণত করেছেন মর্মে বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ততথ্যে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্বৈরাচারের আমলে বড় বড় পোষ্টিং ছিল তার হাতের নাগালে। তেল মর্দনে ওস্তাদ এই জেলা জজ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সহস্রাধিক ছাত্র জনতা শহীদ হওয়ার পরও তিনি ফ্যাসিবাদের পক্ষ অবলম্বন করে গণতান্ত্রিক ছাত্রদের দমনের জন্য বিএনপি ও জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক সংগঠন আখ্যা দিয়ে আইন মন্ত্রণালয় ও সুপ্রীম কোর্টে পত্র দিয়েছিলেন। সেই দুর্নীতিবাজ জেলা জজ এখনো কিভাবে ঢাকার জেলা জজ থাকেন? কার স্বার্থে কি কারণে কি মধু আছে তাকে ঢাকার জেলা জজশীপে রাখতেই হবে।

মুন্সীগঞ্জে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থেকে সব চাইতে জুনিয়র জেলা জজ হিসেবে তিনি যে পোষ্টিংগুলো পেয়েছেন তা অধিকাংশ সৎ ও ন্যায়পরায়ন বিচারকদের কপালে জুটে না। কুমিল্লা, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহে জেলা জজ পদে থাকার পর স্বৈরাচার পতনের ৬ মাস আগে তাকে ঢাকা জেলা জজ হিসেবে পোষ্টিং দিয়ে যায় পতিত সরকার।

ঢাকার ৩৬নং মিন্টু রোডে প্রধান উপদেষ্টার বাসা সংলগ্ন বাড়ীতে থাকেন তিনি। বাসায় সব সময় ৭টি বড় বড় ফ্রিজ মাছ মাংসে ঠাসা থাকে। তবে সম্প্রতি তার জেলা জজের বাড়ীর কোল ঘেষে এসএসএফর ক্যাম্প স্থাপন হওয়ায় ৫টি ফ্রিজ গুলশানের ভায়রার বাড়ীতে সরিয়ে ফেলেন। প্রতি শুক্র ও শনিবার তার ফ্রিজে ১০ কেজি গরু এবং ১০ কোজি খাসির মাংসসহ অন্যান্য সাপ্তাহিক বাজার তার কোর্টের নায়েব নাজির রাজু খানের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ওই জজের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র এসব তথ্য জানায়।
জেলা জজের অধীনস্থ ৪টি অর্থঋণ আদালতসহ প্রায় ২৯টি কোর্ট। আলোচ্য নায়েব নাজির রাজু সকল কোর্টের পেশকার, সেরেস্তাদার, জারীকারক ও পিওনদের কাছ থেকে জেলা জজ হেলাল উদ্দিনের নামে প্রতি মাসে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেন।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, টাকার খনি অর্থঋণ আদালতসহ সবচাইতে বেশি বড় কোর্ট এবং দুর্নীতির আখড়া হিসেবে পরিচিত কোর্টের পেশকার, সেরেস্তাদেরকে প্রতি মাসে ঘুষ দিতে হয় ২ লক্ষ টাকা করে। বাকী কোর্টগুলোর আয় বুঝে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা ঘুষ আদায় হয়। জেলা জজকে সন্তুষ্ট করতে পারলে সবই ঠিক। তাই অধীস্থন আদালতে চলে পেশকার, সেরেস্তাদার এবং জারীকারকদের ঘুষ, দুর্নীতি ও জালিয়াতির মহোৎসব। অর্থঋণ আদালতগুলোতে কি পরিমাণ ঘুষ বাণিজ্য ও জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে তা জানতে চোখ রাখুন আগামী দিনের দৈনিক নওরোজে।

Please Share This Post in Your Social Media

বিএনপি-জামায়াতকে নিষিদ্ধ আখ্যা দিয়ে পত্র দেয়া পতিত হাসিনার সেবক সেই হেলাল এখনো ঢাকার জেলা জজ

আবদুল গাফফার মাহমুদ
Update Time : ১২:৪৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫

স্বৈরাচারের বেনিফিসিয়ারী দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সব জায়গা থেকে অপসারণ করা হলেও তিনি রয়ে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিচার বিভাগকে পচানোর কাজে তিনি এখন মহাব্যস্ত। আছেন রাজকীয় হালে।

কিশোরগঞ্জ জেলার বাসিন্দা হবার সুযোগে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ভাগিনা পরিচয়ে সাবেক আইনমন্ত্রীর বান্ধবী তৌফিকা করিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগি ঢাকার জেলা জজ হেলাল উদ্দিন পুরো জজ কোর্টকে ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের রাজত্বে পরিণত করেছেন মর্মে বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ততথ্যে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্বৈরাচারের আমলে বড় বড় পোষ্টিং ছিল তার হাতের নাগালে। তেল মর্দনে ওস্তাদ এই জেলা জজ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সহস্রাধিক ছাত্র জনতা শহীদ হওয়ার পরও তিনি ফ্যাসিবাদের পক্ষ অবলম্বন করে গণতান্ত্রিক ছাত্রদের দমনের জন্য বিএনপি ও জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক সংগঠন আখ্যা দিয়ে আইন মন্ত্রণালয় ও সুপ্রীম কোর্টে পত্র দিয়েছিলেন। সেই দুর্নীতিবাজ জেলা জজ এখনো কিভাবে ঢাকার জেলা জজ থাকেন? কার স্বার্থে কি কারণে কি মধু আছে তাকে ঢাকার জেলা জজশীপে রাখতেই হবে।

মুন্সীগঞ্জে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থেকে সব চাইতে জুনিয়র জেলা জজ হিসেবে তিনি যে পোষ্টিংগুলো পেয়েছেন তা অধিকাংশ সৎ ও ন্যায়পরায়ন বিচারকদের কপালে জুটে না। কুমিল্লা, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহে জেলা জজ পদে থাকার পর স্বৈরাচার পতনের ৬ মাস আগে তাকে ঢাকা জেলা জজ হিসেবে পোষ্টিং দিয়ে যায় পতিত সরকার।

ঢাকার ৩৬নং মিন্টু রোডে প্রধান উপদেষ্টার বাসা সংলগ্ন বাড়ীতে থাকেন তিনি। বাসায় সব সময় ৭টি বড় বড় ফ্রিজ মাছ মাংসে ঠাসা থাকে। তবে সম্প্রতি তার জেলা জজের বাড়ীর কোল ঘেষে এসএসএফর ক্যাম্প স্থাপন হওয়ায় ৫টি ফ্রিজ গুলশানের ভায়রার বাড়ীতে সরিয়ে ফেলেন। প্রতি শুক্র ও শনিবার তার ফ্রিজে ১০ কেজি গরু এবং ১০ কোজি খাসির মাংসসহ অন্যান্য সাপ্তাহিক বাজার তার কোর্টের নায়েব নাজির রাজু খানের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ওই জজের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র এসব তথ্য জানায়।
জেলা জজের অধীনস্থ ৪টি অর্থঋণ আদালতসহ প্রায় ২৯টি কোর্ট। আলোচ্য নায়েব নাজির রাজু সকল কোর্টের পেশকার, সেরেস্তাদার, জারীকারক ও পিওনদের কাছ থেকে জেলা জজ হেলাল উদ্দিনের নামে প্রতি মাসে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেন।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, টাকার খনি অর্থঋণ আদালতসহ সবচাইতে বেশি বড় কোর্ট এবং দুর্নীতির আখড়া হিসেবে পরিচিত কোর্টের পেশকার, সেরেস্তাদেরকে প্রতি মাসে ঘুষ দিতে হয় ২ লক্ষ টাকা করে। বাকী কোর্টগুলোর আয় বুঝে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা ঘুষ আদায় হয়। জেলা জজকে সন্তুষ্ট করতে পারলে সবই ঠিক। তাই অধীস্থন আদালতে চলে পেশকার, সেরেস্তাদার এবং জারীকারকদের ঘুষ, দুর্নীতি ও জালিয়াতির মহোৎসব। অর্থঋণ আদালতগুলোতে কি পরিমাণ ঘুষ বাণিজ্য ও জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে তা জানতে চোখ রাখুন আগামী দিনের দৈনিক নওরোজে।