ইরানে বড়োসড়ো হামলা করবে ইসরায়েল, সমর্থন দেবেন ট্রাম্প!

- Update Time : ০৬:২০:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ১০১ Time View
চলতি বছরের মাঝামাঝিতে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর আগাম হামলা চালাতে পারে ইসরায়েল। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এমনটাই আশঙ্কা করছে বলে ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এ বছরই ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বড় ধরনের হামলা করার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। তেহরানের সাম্প্রতিক ক্ষতির পর ইসরায়েল তাদের অবস্থান শক্তিশালী করতে চাইছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শেষ মাসে একটি গোয়েন্দা বিশ্লেষণে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ধরনের হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কয়েক সপ্তাহ বা মাসের জন্য পিছিয়ে দিতে পারে, তবে এতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরো বাড়তে পারে এবং বড় ধরনের সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের শুরুর দিনগুলোতেও একই ধরনের বিশ্লেষণ করেছিল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
মার্কিন দুই কর্মকর্তার মতে, ওই বিশ্লেষণে বলা হয়েছে,ইসরায়েল মনে করে বাইডেনের চেয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইরানে হামলায় যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অর্থাৎ ডোনাল্ড ট্রাম্প এ হামলায় ইরানকে সমর্থন দিতে পারেন।
যদিও ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউস, ইসরায়েল সরকার, সিআইএ, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা এবং জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের কার্যালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
তবে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র ব্রায়ান হিউজেস বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে দেবেন না।
তিনি ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ‘যদিও তিনি ইরান সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যাগুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক, তবে ইরান ইচ্ছুক না হলে তিনি হয়তো অপেক্ষা করবেন না।’
গোয়েন্দা তথ্যের সঙ্গে জড়িত বর্তমান ও সাবেক মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েল গত অক্টোবরে ইরানের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে দুর্বল করার জন্য বোমা হামলা চালিয়েছে এবং এখন দেশটিতে পরবর্তী হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে ওয়াশিংটন পোস্ট এসব কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করেনি।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, জানুয়ারির শুরুর দিকে বিস্তৃত গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল এবং এটি জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ ও গোয়েন্দা অধিদপ্তর তৈরি করেছিল। এতে সতর্ক করা হয়েছে যে ইরানের ফোরডো ও নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার চেষ্টা করতে পারে ইসরায়েল।
ইরানের পরমাণু প্রকল্প বিষয়ক স্থাপনাগুলো দেশটির দুটি শহরে অবস্থিত—ফরদো এবং নাতাঞ্জ। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি দুটি শহরেই সম্ভাব্য হামলা ঘটবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে।
এদিকে ইরান পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারে- এ ভয় ইসরায়েলের রয়েছে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য ও অস্ত্রের সহায়তা চায় তারা। তবে সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সময়মতো সহযোগিতা পাবে না বলে মনে করছে ইসরায়েল।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ইরানের নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে, তাহলে ইরানও পাল্টা জবাব দেবে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের হুমকি দেয়, আমরাও তাদের হুমকি দেবো। যদি তারা আমাদের নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে, তাহলে আমরা তাদের নিরাপত্তা লঙ্ঘন করবো।
সম্প্রতি ইরান তাদের ‘গাজা’ ড্রোন উন্মোচন করেছে। এটি একসঙ্গে ১২টি বোমা বহন করতে সক্ষম এবং ৪ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। এই শক্তিশালী ড্রোন ইসরায়েলের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে, কারণ এটি দেশটির সীমান্তের বাইরেও হামলা চালাতে সক্ষম।
এ ছাড়া ইরান তাদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পে বিপুল অগ্রগতি করেছে। ‘ইতেমাদ’ নামের নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার দূর থেকে আঘাত হানতে সক্ষম, যা ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট।