ঢাকা ০১:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
কুবির সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্তরসহ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে শর্টকোড চালুর সিদ্ধান্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে বাস ট্র্যাকিং সিস্টেম ধর্ষণকারীর মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল নোয়াখালীতে নামাজ পড়তে গেলে মসজিদের শৌচাগারে শিশুকে বলৎকার বান্দরবানে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় ৪ আসামীর যাবজ্জীবন, ১ লাখ টাকা জরিমানা ধর্ষণ বিরোধী স্লোগানে মুখরিত কুবি ক্যাম্পাস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়কসহ ৭ জন কারাগারে মেয়েকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে জখম কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বহির্বিভাগের টিকিট বাণিজ্য

সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের চারলেন প্রকল্প বছর ধরে আটকা মন্ত্রণালয়ে

মো.মুহিবুর রহমান, সিলেট থেকে
  • Update Time : ০৭:৩৯:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৩২ Time View

সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের চারলেন প্রকল্প এক বছর ধরে আটকা রয়েছে মন্ত্রণালয়ে। এ মহাসড়কে প্রতিনিয়ত সড়কের অপ্রশস্থতার কারণে ও সংস্কারের অভাবে যানজটের ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। কিন্তু কি কারণে এ প্রকল্পটি মন্ত্রনালয়ে আটকা আছে খুজে বের করার জন্য দাবী করছেন যাত্রী সাধারনগন।

সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগ জানায়, সুনামগঞ্জ মহাসড়কের দুটি স্থান মিলে পাঁচ দশমিক আট কিলোমিটার সড়ক চারলেন করার দরপত্র ২০২৪ সালের জুলাই মাসে হলেও দরপত্র প্রক্রিয়া সিলেট তত্ত্বাবধায়ক অফিস থেকে হয়েছিল। কিন্তু দরপত্র গ্রহণ শেষে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠানো হয়। যাচাই-বাছাই শেষে সরকারি ক্রয় কমিটিতে যাবার কথা। কিন্তু এখনো সরকারি ক্রয় কমিটিতে যায়নি এই প্রকল্প।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ২৫ লাখ মানুষের জেলা সুনামগঞ্জ থেকে দূরপাল্লার বাস-মিনিবাস, কোচ, মাইক্রো, কার ও ট্রাক মিলিয়ে প্রায় ১২শ গাড়ি প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে চলাচল করছে। পাঁচ হাজারেরও বেশি সিএনজি চালিত তিন চাকার যানসহ অসংখ্য ছোট ছোট গাড়ি চলছে এই সড়কে। অথচ সড়কটি কেবল জেলা শহরের তিন দশমিক আট কিলোমিটার ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদরের দুই কিলোমিটার চারলেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে গেল বছরের জুলাইয়ে। এরপর এই বিষয়ে আর কোন অগ্রগতি হয়নি।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন প্রকৌশলী জানান, সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ার থেকে ওয়েজখালী পাড় হয়ে পৌর কলেজ পর্যন্ত এবং উজানীগাঁও থেকে শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদর পাড় হয়ে সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট পর্যন্ত চারলেন সড়ক করার উদ্যোগ নিয়ে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এই প্রকল্পে ব্যয় নির্ধারণ হয়েছিল প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি টাকা।

ওই প্রকৌশলী জানান, এই দুইটি স্থানের চারলেনের দরপত্র আহ্বান করার পর, দরপত্র গ্রহণও করা হয়েছে। পরে এগুলো অনুমোদনের জন্য সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ওখান থেকে সরকারি ক্রয় কমিটিতে যাবার কথা। কিন্তু সেটি এখনো হয় নি। সরকারি ক্রয় কমিটিতে অনুমোদনের পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয় এরপর শুরু হয় কাজ। সেই প্রক্রিয়া থেমে আছে।

পরিবহন মালিক শ্রমিকদের দেওয়া তথ্য মতে, সুনামগঞ্জের পাঁচটি পরিবহন মালিক সমিতির প্রায় পাঁচশ’ গাড়ি প্রতিদিন সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে চলাচল করছে। এছাড়া আন্ত:জেলা বাস সুনামগঞ্জ থেকে প্রতিদিন যাওয়া আসা করছে ৮০ টি। এসব বাস ছাতক ও দিরাই থেকেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই পথ দিয়েই যাওয়া আসা করে। সব মিলিয়ে আন্তজেলা বাসের সংখ্যা দেড়শ ছাড়িয়ে যাবে। এছাড়া সারা জেলায় কার, মাইক্রো, হাইয়েচ আছে প্রায় পাঁচশ’। ট্রাক আছে একশ’ এর মতো। যেগুলোর যাতায়াত এই পথ হয়েই। ছোট ছোট যানবাহনও বেড়েছে। জেলায় বৈধ সিএনজি আছে পাঁচ হাজার তিনশ’ এর মতো। অবৈধ মিলিয়ে সিএনজির সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়ে যাবে। যার বেশিরভাগই চলছে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে। জেলায় লেগুনা আছে প্রায় দুইশ। এতো যানবাহনের চাপ নিতে পারছে না ২৪ ফুটের প্রশস্ত সড়ক।

সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে নিয়মিত যাতায়াতকারী তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক সমিতির সভাপতি খসরুল আলম জানান, সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের ৬৫ কিলোমিটার পথ আরও ২০ বছর আগে বাসে যাতায়াত করতে সময় লাগতো সোয়াঘণ্টা। এখন লাগছে পৌঁনে দুইঘণ্টা। সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ায়, এই যন্ত্রণায় পড়েছেন সুনামগঞ্জবাসী।

আঞ্চলিক পরিবহন কমিটির সদস্য, জেলা বাস মিনিবাস মাইক্রোবাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া জানান, সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ককে দ্রুত চারলেনে উন্নীত করতে হবে। সুনামগঞ্জ-পাগলা-আউশকান্দি সড়ককেও স্থানে স্থানে চারলেনে উন্নীত করা প্রয়োজন।

সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ্ জানান, সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের দুটি স্থান মিলে পাঁচ দশমিক আট কিলোমিটার সড়ক চারলেন করার দরপত্র ২০২৪ সালের জুলাই মাসে হয়েছিল। এই দরপত্র প্রক্রিয়া সিলেট তত্ত্বাবধায়ক অফিস থেকে হয়েছিল। দরপত্র গ্রহণ শেষে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠানো হয়। যাচাই-বাছাই শেষে সরকারি ক্রয় কমিটিতে যাবার কথা। এখনো এটি সরকারি ক্রয় কমিটিতে যায়নি বলে জেনেছি আমরা।

এছাড়া সিলেট অঞ্চলের গোবিন্দগঞ্জ থেকে টুকেরবাজার পর্যন্ত সড়কে সিএনজির জন্য সড়ক ছোট থাকায় প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। তাই সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজন দাবী করেন এ সড়ক চারলেন সড়ক নির্মান করে লোকজনের যাতায়াতে সুব্যবস্থা করা।

Please Share This Post in Your Social Media

সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের চারলেন প্রকল্প বছর ধরে আটকা মন্ত্রণালয়ে

মো.মুহিবুর রহমান, সিলেট থেকে
Update Time : ০৭:৩৯:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের চারলেন প্রকল্প এক বছর ধরে আটকা রয়েছে মন্ত্রণালয়ে। এ মহাসড়কে প্রতিনিয়ত সড়কের অপ্রশস্থতার কারণে ও সংস্কারের অভাবে যানজটের ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। কিন্তু কি কারণে এ প্রকল্পটি মন্ত্রনালয়ে আটকা আছে খুজে বের করার জন্য দাবী করছেন যাত্রী সাধারনগন।

সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগ জানায়, সুনামগঞ্জ মহাসড়কের দুটি স্থান মিলে পাঁচ দশমিক আট কিলোমিটার সড়ক চারলেন করার দরপত্র ২০২৪ সালের জুলাই মাসে হলেও দরপত্র প্রক্রিয়া সিলেট তত্ত্বাবধায়ক অফিস থেকে হয়েছিল। কিন্তু দরপত্র গ্রহণ শেষে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠানো হয়। যাচাই-বাছাই শেষে সরকারি ক্রয় কমিটিতে যাবার কথা। কিন্তু এখনো সরকারি ক্রয় কমিটিতে যায়নি এই প্রকল্প।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ২৫ লাখ মানুষের জেলা সুনামগঞ্জ থেকে দূরপাল্লার বাস-মিনিবাস, কোচ, মাইক্রো, কার ও ট্রাক মিলিয়ে প্রায় ১২শ গাড়ি প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে চলাচল করছে। পাঁচ হাজারেরও বেশি সিএনজি চালিত তিন চাকার যানসহ অসংখ্য ছোট ছোট গাড়ি চলছে এই সড়কে। অথচ সড়কটি কেবল জেলা শহরের তিন দশমিক আট কিলোমিটার ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদরের দুই কিলোমিটার চারলেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে গেল বছরের জুলাইয়ে। এরপর এই বিষয়ে আর কোন অগ্রগতি হয়নি।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন প্রকৌশলী জানান, সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ার থেকে ওয়েজখালী পাড় হয়ে পৌর কলেজ পর্যন্ত এবং উজানীগাঁও থেকে শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদর পাড় হয়ে সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট পর্যন্ত চারলেন সড়ক করার উদ্যোগ নিয়ে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এই প্রকল্পে ব্যয় নির্ধারণ হয়েছিল প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি টাকা।

ওই প্রকৌশলী জানান, এই দুইটি স্থানের চারলেনের দরপত্র আহ্বান করার পর, দরপত্র গ্রহণও করা হয়েছে। পরে এগুলো অনুমোদনের জন্য সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ওখান থেকে সরকারি ক্রয় কমিটিতে যাবার কথা। কিন্তু সেটি এখনো হয় নি। সরকারি ক্রয় কমিটিতে অনুমোদনের পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয় এরপর শুরু হয় কাজ। সেই প্রক্রিয়া থেমে আছে।

পরিবহন মালিক শ্রমিকদের দেওয়া তথ্য মতে, সুনামগঞ্জের পাঁচটি পরিবহন মালিক সমিতির প্রায় পাঁচশ’ গাড়ি প্রতিদিন সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে চলাচল করছে। এছাড়া আন্ত:জেলা বাস সুনামগঞ্জ থেকে প্রতিদিন যাওয়া আসা করছে ৮০ টি। এসব বাস ছাতক ও দিরাই থেকেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই পথ দিয়েই যাওয়া আসা করে। সব মিলিয়ে আন্তজেলা বাসের সংখ্যা দেড়শ ছাড়িয়ে যাবে। এছাড়া সারা জেলায় কার, মাইক্রো, হাইয়েচ আছে প্রায় পাঁচশ’। ট্রাক আছে একশ’ এর মতো। যেগুলোর যাতায়াত এই পথ হয়েই। ছোট ছোট যানবাহনও বেড়েছে। জেলায় বৈধ সিএনজি আছে পাঁচ হাজার তিনশ’ এর মতো। অবৈধ মিলিয়ে সিএনজির সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়ে যাবে। যার বেশিরভাগই চলছে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে। জেলায় লেগুনা আছে প্রায় দুইশ। এতো যানবাহনের চাপ নিতে পারছে না ২৪ ফুটের প্রশস্ত সড়ক।

সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে নিয়মিত যাতায়াতকারী তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক সমিতির সভাপতি খসরুল আলম জানান, সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের ৬৫ কিলোমিটার পথ আরও ২০ বছর আগে বাসে যাতায়াত করতে সময় লাগতো সোয়াঘণ্টা। এখন লাগছে পৌঁনে দুইঘণ্টা। সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ায়, এই যন্ত্রণায় পড়েছেন সুনামগঞ্জবাসী।

আঞ্চলিক পরিবহন কমিটির সদস্য, জেলা বাস মিনিবাস মাইক্রোবাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া জানান, সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ককে দ্রুত চারলেনে উন্নীত করতে হবে। সুনামগঞ্জ-পাগলা-আউশকান্দি সড়ককেও স্থানে স্থানে চারলেনে উন্নীত করা প্রয়োজন।

সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ্ জানান, সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের দুটি স্থান মিলে পাঁচ দশমিক আট কিলোমিটার সড়ক চারলেন করার দরপত্র ২০২৪ সালের জুলাই মাসে হয়েছিল। এই দরপত্র প্রক্রিয়া সিলেট তত্ত্বাবধায়ক অফিস থেকে হয়েছিল। দরপত্র গ্রহণ শেষে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠানো হয়। যাচাই-বাছাই শেষে সরকারি ক্রয় কমিটিতে যাবার কথা। এখনো এটি সরকারি ক্রয় কমিটিতে যায়নি বলে জেনেছি আমরা।

এছাড়া সিলেট অঞ্চলের গোবিন্দগঞ্জ থেকে টুকেরবাজার পর্যন্ত সড়কে সিএনজির জন্য সড়ক ছোট থাকায় প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। তাই সংশ্লিষ্ট এলাকার লোকজন দাবী করেন এ সড়ক চারলেন সড়ক নির্মান করে লোকজনের যাতায়াতে সুব্যবস্থা করা।