নরসিংদীতে অটোরিকশাচালক হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ৪

- Update Time : ০৬:৪১:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৮৭ Time View
নরসিংদীর বেলাবতে অটোরিকশাচালক কাঞ্চন মিয়াকে হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেন পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো.এনায়েত হোসেন মান্নান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নরসিংদীর মনোহরদী ও বেলাব থানা এলাকার মো. ইয়াকিন খান (৪৬), রাশিদা বেগম (৩৫), মো. কবির হোসেন (২৮) ও ইমরান মিয়া (২২)। তাঁদের কাছ থেকে নিহত কাঞ্চনের ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, জেলার মনোহরদী উপজেলার ডোমনমারা গ্রামের অটোরিকশাচালক কাঞ্চন মিয়া (৬২) গত ২১ জানুয়ারি অটোরিকশাসহ বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন সকালে বেলাব থানাধীন বিন্নাবাইদ বিএম কলেজ সংলগ্ন রাস্তার পাশে একটি অজ্ঞাত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি কাঞ্চন মিয়ার বলে শনাক্ত করলেও তাঁর অটোরিকশা পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রিনা বেগম থানায় মামলা করেন।
মামলার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত ও অভিযান শুরু করে পিবিআই। নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ ও গাজীপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ও সোর্সের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে অটোরিকশা ছিনতাইকারী চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নরসিংদী পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো.এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা চায়ের সঙ্গে নেশাজাতীয় পদার্থ মিশিয়ে কাঞ্চন মিয়াকে অজ্ঞান করে হত্যা করে এবং তাঁর অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায় বলে স্বীকার করেছেন। আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর পর তাঁরা আদালতে ১৬৪ ধারায় অপরাধ স্বীকার করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামীরা পরস্পর একই চোর চক্রের সঙ্গবদ্ধ দলের সক্রিয় সদস্য। আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে তাদের এলাকাসহ আশাপাশ থানা এলাকার সহজ সরল অটোরিক্সা, বিভাটেক চালকদের টার্গেট করে একেক সময় একেক কৌশল অবলম্বন করে অটোরিক্সা চুরি করে থাকে। আসামীদের এছাড়া অন্য কোন দৃশ্যমান পেশা নেই।
আসামীরা জানান, গত ২১ জানুয়ারী ২০২৫ সকালে গ্রেফতারকৃত মোঃ ইয়াকিন খান (৪৬) এর মহোহরদী থানার দরগা বাজার মেলায় কাঞ্চন মিয়ার সাথে দেখা হয়। তখন আসামী ইয়াকিন কৌশলে অটো ড্রাইভার কাঞ্চন মিয়ার মোবাইল সংগ্রহ করে এবং তাকে বলে কখনো যদি কোথাও অটো রিজার্ভ নিয়ে যেতে চাই সে যাবে কিনা? এতে ভিকটিম রাজী হয় এবং মোবাইল নম্বর প্রদান করে।
ঐ দিনই আসামী ইয়াকিন খানের স্ত্রী কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ থেকে দুপুরের পরে দরগা বাজার মেলায় এসে স্বামীর সাথেএকত্রিত হয়। মেলায় ঘুরাঘুরি শেষে আসামী ইয়াকিন কৌশলে তার স্ত্রীকে দিয়ে কাঞ্চন মিয়ার মোবাইলে ফোনে করে এবং কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ যাওয়ার জন্য ভাড়া করে। অনুমান ৫ মিনিটের মধ্যে ভিকটিম অটো নিয়ে উপস্থিত হলে তারা অটোতে উঠে কাটিয়াদী, কিরোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে রাওয়ানা করে। পথিমধ্যে একটি পেট্রোল পাম্পের কাছে গিয়ে অটো থামাতে বলে এবং বাচ্চার চিপ্স কেনার কথা বলে ইয়াকিন এবং তার স্ত্রী রাশেদা নিজেরা চা পান করে এবং চায়ের সাথে আসামী কবির হোসেন এর সরবরাহ করা চেতনানাশক ঔষধ মিশিয়ে কাঞ্চন মিয়াকে খেতে দেয়। কাঞ্চন মিয়া ঐ চা পান করার অটো চালু করে রওয়ানা দিলে ৫/৭ মিনিট পরই তার ঘুম ভাব চলে আসে। তখন আসামী ইয়াকিন এবং তার স্ত্রী কাঞ্চন মিয়াকে হত্যা করে রাস্তার পাশে ধানক্ষেতে লাশ ফেলে দিয়ে অটো নিয়ে পালিয়ে যায় এবং আসামী ইমরানের গ্যারেজে গিয়ে অটো বিক্রয় করে আসামীরা নিজ বাড়ীতে চলে যায়। পরের দিন আসামী ইয়াকিন কবির হোসেনকে সাথে নিয়ে অপর আসামী ইমরানের গ্যারেজে অটো বিক্রয়ের টাকা আনতে যায়।