সালথায় মাটিখেকোদের তাণ্ডবে কমে যাচ্ছে কৃষিজমি

- Update Time : ০৪:৫১:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ৭৭ Time View
গত একযুগে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বেশিরভাগ খাল-বিল নদী-নালা শত শত বিঘা পতিত জমি থেকে অপরিকল্পিতভাবে মাটি কেটে বিক্রি করে খেয়ে ফেলেছেন প্রভাবশালী মাটিখেকোরা।
বর্তমানে সেই মাটিখেকোরা হানা দিয়েছেন পাট-পেঁয়াজ ও ধানের জমিতে। তারা খননযন্ত্র (ভেকু মেশিন) দিয়ে তিন ফসলি জমির উর্বর মাটির ওপর থেকে এক থেকে দেড় হাত (টপ সয়েল) তুলে নিয়ে অবৈধ ট্রলি গাড়িতে করে ইটভাটাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছেন। কোনো ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না মাটিখেকোদের। ফলে একদিকে জমি হারাচ্ছে তার উর্বরতা অন্যদিকে কমে যাচ্ছে মোট কৃষি জমির পরিমান।
সম্প্রতি সালথা কয়েকটি স্থানে গিয়ে দেখা যায়, অপরিকল্পিত ভাবে পতিত জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তিন ফসলি জমিতেও খনন করা হয়েছে পুকুর। কোনো কোনো জমির উর্বর অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভেকু মেশিন দিয়ে ফসলি জমির এসব মাটি কেটে ট্টলি গাড়ি ও ড্রাম ট্রাকের সাহায্যে বিভিন্ন ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছে। মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে সড়কগুলোয় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শতশত ফিটনেসবিহীন অবৈধ ট্রলি গাড়ি। এসব গাড়ির অবাধ চলাচলের কারণে নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক।
ট্রলিতে বহন করা মাটি সড়কের ওপরে পড়ে থাকছে। যে কারণে বৃষ্টি হলেই সড়ক ভিজে পিচ্ছিল হয়ে তৈরি হচ্ছে মরণফাঁদ। আবার অনেক সড়কের পিচঢালাও উঠে যাচ্ছে। ফলে ভয়াবহ দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেকে।
সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থানীয়রা বলছেন, ফসলি জমি ধ্বংসের জন্য শুধু মাটি ব্যবসায়ীরাই দায়ী নয়, জমির মালিকরাও দায়ী। কারণ মাটিখেকোদের নগদ টাকার লোভে পড়ে থাকেন জমির মালিকরা। এই সুযোগে কৌশলে জমির মালিকদের নগদ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ফসলি জমির মাটি কিনে নেয় মাটি ব্যবসায়ী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ইউনিয়নের গোপালিয়া গ্রামে শাহজাহান মেম্বার, সোনাপুরে মুরাদ, যদুনন্দী ইউনিয়নের বড় খারদিয়া গ্রামে অবুঝ, সাধুহাটি গ্রামে রিপন ফকির ও কাবুল, গট্টি ইউনিয়নের দোহারগট্টি গ্রামে মাহমুদ, মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কাগদী বাতাগ্রাম গ্রামে গৌরঙ্গ মালো ও ওবায়দুর মাটি ব্যবসায়ী ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে অবাধে ইটভাটাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে।
অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে একটিচক্র এসব মাটিখেকোদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে মাটি বাণিজ্য করার সুযোগ করে দিচ্ছেন। যে কারণে মাটি কাটা ও বিক্রি বন্ধ হচ্ছে না।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, মাটি কাটার খবর পেলেই সেখানে অভিযান চালানো হয়। তবে একটিচক্র রাতের আধারে মাটি কাটছে বলে জানতে পেরেছি। যেসব জায়গায় মাটি কাটা হচ্ছে, খোঁজখবর নিয়ে সেখানে অভিযান চালানো হবে।