ঢাকা ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জয়-পলকের সিন্ডিকেট এখনো আইসিটি সেক্টরে

বিশেষ প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৫:৩৫:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • / ১১ Time View

শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলকের সুবিধাভোগী আমলা ও কর্মকর্তারা এখনো তৎপর আইসিটির প্রধান কার্যালয়ে। এর মধ্যে তাবরুর রহমান সরকারের একজন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদায় কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে রয়েছে এনআইডির তথ্য পাচারসহ কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের সুনির্দ্দিষ্ট অভিযোগ।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় অতিবাহিত হচ্ছে দুইমাসেরও অধিক। স্বৈরাচার হাসিনা ও তার ছেলের শতশত কোটি কোটি টাকার দূর্নীতি অনিয়ম ও স্বজন প্রীতির সাথে যারা সংশ্লিষ্ট তারা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আগারগাঁওয়ের প্রধান কার্যালয়ে তারাই এখন ক্ষমতাধর। তাদের নির্দেশেই চলছে এখন আইসিটি বিভাগ। এমন অভিযোগ সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারিদের।
প্রধান কার্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা এখন তাবরুর রহমান ও একসাথে ৫টি বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত গবেষনা কর্মকর্তা শফিকউদ্দিন ভূঁইয়ার পরামর্শানুযায়ী কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। শফিক উদ্দিন ভূঁইয়া একজন সুচতুর করিৎকর্মা ও আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত বলে জানা যায়। তার চাকুরীও অবৈধ।

সুত্র জানায়, লিখিত পরীক্ষায় ৯ম স্থানে থাকার কারণে তার চাকুরি হবার কোন সুযোগই ছিলো না। ক্ষমতাবান দলের নেকনজরে থাকার ফলে কিশোরগঞ্জের ছেলে শফিক উদ্দিন ভুঁইয়ার চাকুরী হয়ে যায়। সংসদ সদস্য ডাঃ সৈয়দ লিপির তদবিরে। সেই সাথে সহযোগীতা পান হাইটেক পার্কের সাবেক পরিচালক বর্তমানে বিবিসি-র প্রকল্পের পরামর্শক সৈয়দ এমদাদুল হকের মাধ্যমে।

অভিযোগ রয়েছে, আইসিটি বিভাগের দূনীর্তির কর্ণধার তাবরুর রহমান, সাবেক এমডি জাফরউল্লাহর সময়ে হাইটেক পার্কের বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতি, টেন্ডারবাজী রদবদলে উন্নয়ন কর্মকান্ড ব্যাহত হয়।

অর্থ প্রলোভন দেখান তাবরুর রহমান। তিনি হাইটেক পার্কের ডি.ডিও সে ক্ষমতার অপব্যবহার করে হাইটেক পার্কের সাজসজ্জা কাজের নিমিত্তে প্রায় ২৭ লক্ষ টাকার বিল উত্তোলন করে। অথচ এ কাজটি বাস্তবায়ন করেছে বিভিন্ন পরিচালকের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে। এই বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে ১২ আইটি শিফট হাইটেক সিটি ২ প্রকল্পের দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে।

জুনায়েদ আহমেদ পলকের দূর্নীতির অংশিদার তাবরুর রহমান তার একান্ত সচিব মুশফিক বিদেশ ভ্রমনের জন্য প্রতিষ্ঠান থেকে ৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছিলো। একান্ত সচিব মুশফিক কোন কারণবশতঃ না যাওয়ার ফলে পুরো টাকা পকেটে ভরে তাবরুর রহমান। হাইটেক পার্কে বিনিয়োগকারীদের প্লট বা স্পেস দেয়ার বিনিময়ে মোটা টাকা সুকৌশলে হাতিয়ে নেয় তাবরুর রহমান ও শফিক উদ্দিন। এই দুজন দূর্নীতিপরায়ন কর্মকর্তা পরস্পর যোগাসাজশে কেনা সফ্টওয়্যার ল্যাব লিমিটেড, ডেফোডিল, এনার্জিপ্লাস, নভোকম লিমিটেড, ভিস্তা লিমিটেড, ন্যাশনাল ইলেক্ট্রোনিক প্রতিষ্ঠান হতে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা।

তাবরুর রহমানের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, ১১টি আইটি প্রকল্পের কম্পিউটার অপারেটরকে প্রশাসনিকভাবে ভয় দেখিয়ে অনেক অসাধ্য কাজ বাগিয়ে নেন। এ সকল বিষয়ে কেউ মুখ খুলে না, খুলতে সাহসও নেই। বিস্তর অভিযোগ শফিক উদ্দিন ভুঁইয়ার বিরুদ্ধেও। তিনি সাবেক এমডি জাফর উল্লাহ্র সময়ে গত অর্থবছরে শুধুমাত্র আপ্যায়নের কথা বলেই বিল উত্তোলন করেছে প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকা। হিসাব বিভাগের খোঁজ নিলে সব সত্যতা পাওয়া যাবে।

এই প্রাতষ্ঠানের সকল প্রকার দূর্নীতি, অনিয়ম কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ, সজিব ওয়াজেদ জয়, জুনায়েদ আহমেদ পলকের বিষয় অবগত রয়েছেন সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। এ বিষয়ে গঠিত হয়েছে আন্তকমিটি। এই কমিটিতেই অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন তাবরুর রহমান। তাহলে বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধবে কে?

আইসিটি বিভাগের সচিব হিসাবে যোগ দিয়েছেন হায়দার চৌধুরী এনডিসি এবং হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম আমিনুল ইসলাম। এদের যোগদানের পর থেকেই বেড়ে যায় তাবরুর রহমান ও শফিকের দপট।

জনমনে প্রশ্ন, যারা আইসিটি বিভাগে যোগদান করে তারাই হয়ে যায় দুর্নীতিবাজদের হাতের পুতুল। সুনিদিষ্ট অভিযোগ থাকা স্বত্তেও আলোচিত তাবরুর রহমান ও শফিকরা বেচে যায়, ব্যাহত হয় সকল ধরনের উন্নয়ন। দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে শফিক উদ্দিনকে দেয়া হয় অতিরিক্ত দায়িত্ব্। তাহলে জয়-পলকের দূর্নীতির কালো বিড়াল ধরবে কে? এ প্রশ্ন এখন ঘুরে ফিরে সর্বত্রই।

Please Share This Post in Your Social Media

জয়-পলকের সিন্ডিকেট এখনো আইসিটি সেক্টরে

বিশেষ প্রতিনিধি
Update Time : ০৫:৩৫:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলকের সুবিধাভোগী আমলা ও কর্মকর্তারা এখনো তৎপর আইসিটির প্রধান কার্যালয়ে। এর মধ্যে তাবরুর রহমান সরকারের একজন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদায় কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে রয়েছে এনআইডির তথ্য পাচারসহ কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের সুনির্দ্দিষ্ট অভিযোগ।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় অতিবাহিত হচ্ছে দুইমাসেরও অধিক। স্বৈরাচার হাসিনা ও তার ছেলের শতশত কোটি কোটি টাকার দূর্নীতি অনিয়ম ও স্বজন প্রীতির সাথে যারা সংশ্লিষ্ট তারা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আগারগাঁওয়ের প্রধান কার্যালয়ে তারাই এখন ক্ষমতাধর। তাদের নির্দেশেই চলছে এখন আইসিটি বিভাগ। এমন অভিযোগ সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারিদের।
প্রধান কার্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা এখন তাবরুর রহমান ও একসাথে ৫টি বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত গবেষনা কর্মকর্তা শফিকউদ্দিন ভূঁইয়ার পরামর্শানুযায়ী কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। শফিক উদ্দিন ভূঁইয়া একজন সুচতুর করিৎকর্মা ও আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত বলে জানা যায়। তার চাকুরীও অবৈধ।

সুত্র জানায়, লিখিত পরীক্ষায় ৯ম স্থানে থাকার কারণে তার চাকুরি হবার কোন সুযোগই ছিলো না। ক্ষমতাবান দলের নেকনজরে থাকার ফলে কিশোরগঞ্জের ছেলে শফিক উদ্দিন ভুঁইয়ার চাকুরী হয়ে যায়। সংসদ সদস্য ডাঃ সৈয়দ লিপির তদবিরে। সেই সাথে সহযোগীতা পান হাইটেক পার্কের সাবেক পরিচালক বর্তমানে বিবিসি-র প্রকল্পের পরামর্শক সৈয়দ এমদাদুল হকের মাধ্যমে।

অভিযোগ রয়েছে, আইসিটি বিভাগের দূনীর্তির কর্ণধার তাবরুর রহমান, সাবেক এমডি জাফরউল্লাহর সময়ে হাইটেক পার্কের বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতি, টেন্ডারবাজী রদবদলে উন্নয়ন কর্মকান্ড ব্যাহত হয়।

অর্থ প্রলোভন দেখান তাবরুর রহমান। তিনি হাইটেক পার্কের ডি.ডিও সে ক্ষমতার অপব্যবহার করে হাইটেক পার্কের সাজসজ্জা কাজের নিমিত্তে প্রায় ২৭ লক্ষ টাকার বিল উত্তোলন করে। অথচ এ কাজটি বাস্তবায়ন করেছে বিভিন্ন পরিচালকের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে। এই বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে ১২ আইটি শিফট হাইটেক সিটি ২ প্রকল্পের দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে।

জুনায়েদ আহমেদ পলকের দূর্নীতির অংশিদার তাবরুর রহমান তার একান্ত সচিব মুশফিক বিদেশ ভ্রমনের জন্য প্রতিষ্ঠান থেকে ৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছিলো। একান্ত সচিব মুশফিক কোন কারণবশতঃ না যাওয়ার ফলে পুরো টাকা পকেটে ভরে তাবরুর রহমান। হাইটেক পার্কে বিনিয়োগকারীদের প্লট বা স্পেস দেয়ার বিনিময়ে মোটা টাকা সুকৌশলে হাতিয়ে নেয় তাবরুর রহমান ও শফিক উদ্দিন। এই দুজন দূর্নীতিপরায়ন কর্মকর্তা পরস্পর যোগাসাজশে কেনা সফ্টওয়্যার ল্যাব লিমিটেড, ডেফোডিল, এনার্জিপ্লাস, নভোকম লিমিটেড, ভিস্তা লিমিটেড, ন্যাশনাল ইলেক্ট্রোনিক প্রতিষ্ঠান হতে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা।

তাবরুর রহমানের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, ১১টি আইটি প্রকল্পের কম্পিউটার অপারেটরকে প্রশাসনিকভাবে ভয় দেখিয়ে অনেক অসাধ্য কাজ বাগিয়ে নেন। এ সকল বিষয়ে কেউ মুখ খুলে না, খুলতে সাহসও নেই। বিস্তর অভিযোগ শফিক উদ্দিন ভুঁইয়ার বিরুদ্ধেও। তিনি সাবেক এমডি জাফর উল্লাহ্র সময়ে গত অর্থবছরে শুধুমাত্র আপ্যায়নের কথা বলেই বিল উত্তোলন করেছে প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকা। হিসাব বিভাগের খোঁজ নিলে সব সত্যতা পাওয়া যাবে।

এই প্রাতষ্ঠানের সকল প্রকার দূর্নীতি, অনিয়ম কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ, সজিব ওয়াজেদ জয়, জুনায়েদ আহমেদ পলকের বিষয় অবগত রয়েছেন সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। এ বিষয়ে গঠিত হয়েছে আন্তকমিটি। এই কমিটিতেই অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন তাবরুর রহমান। তাহলে বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধবে কে?

আইসিটি বিভাগের সচিব হিসাবে যোগ দিয়েছেন হায়দার চৌধুরী এনডিসি এবং হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম আমিনুল ইসলাম। এদের যোগদানের পর থেকেই বেড়ে যায় তাবরুর রহমান ও শফিকের দপট।

জনমনে প্রশ্ন, যারা আইসিটি বিভাগে যোগদান করে তারাই হয়ে যায় দুর্নীতিবাজদের হাতের পুতুল। সুনিদিষ্ট অভিযোগ থাকা স্বত্তেও আলোচিত তাবরুর রহমান ও শফিকরা বেচে যায়, ব্যাহত হয় সকল ধরনের উন্নয়ন। দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে শফিক উদ্দিনকে দেয়া হয় অতিরিক্ত দায়িত্ব্। তাহলে জয়-পলকের দূর্নীতির কালো বিড়াল ধরবে কে? এ প্রশ্ন এখন ঘুরে ফিরে সর্বত্রই।