ঢাকা ০৫:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
এসএসসি পরীক্ষা: মোরেলঞ্জে দায়িত্ব অবহেলার কারনে ৯ শিক্ষককে বহিস্কার চীনের উপহারের হাসপাতাল নির্মাণের লক্ষ্যে রংপুরে তিস্তা এলাকা পরিদর্শন জাতীয় প্রেস ক্লাবে অবিলম্বে নির্বাচন দাবি জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং দক্ষতা শীর্ষক সেমিনার সিরিজ অনুষ্ঠিত কুবির ভর্তি পরীক্ষা শুরু ১৯ এপ্রিল, পরীক্ষার্থীদের মানতে হবে যেসব নির্দেশনা  টঙ্গীতে গাড়ির ধাক্কায় টাইলস মিস্ত্রি নিহত উখিয়ার সেই ১৩ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় বসছেন! চতুর্থ বিয়ে নিয়ে কথা কাটাকাটি : ছোট ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে বড় ভাই খুন কোম্পানীগঞ্জে পরিবেশ অধিদপ্তরের যোগসাজশে চলছে আ.লীগ নেতার ইটভাটা মেলায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করল স্বামী

পানিবন্দি পর্যটন শহর কক্সবাজার, জনভোগান্তি চরমে

নওরোজ ডেস্ক
  • Update Time : ১০:৫১:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১১৩ Time View

চলতি মৌসুমের রেকর্ড বৃষ্টিপাতে তলিয়ে গেছে কক্সবাজার শহরের প্রায় ৯০ ভাগ এলাকা। গত প্রায় তিন দশকে এই পরিমাণ জলাবদ্ধতা দেখেননি কক্সবাজারবাসী। আটকে পড়া পর্যটকদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

টানা ভারী বর্ষণে পাহাড় ধস ও ট্রলারডুবিতে এই জেলায় আটজন নিহত হয়েছেন। সড়ক-উপসড়কে পানি উঠে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শহরের হাজারও বসতবাড়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে গেছে লাখ লাখ টাকার মালামাল। এছাড়া কক্সবাজার সদরসহ আটটি উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা পর্যন্ত অন্তত ২৫ হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন হোটেলে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিভীষণ কান্তি দাশ জানিয়েছেন, কক্সবাজারে টানা বৃষ্টিতে অনেক এলাকা পানির নিচে। কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। এবং ঝিলংজায় পাহাড় ধসে নিহত তিনজনের পরিবারকে ৭৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে কাজ চলছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনের প্রধান সড়কটি ডুবে গেছে। সড়কের দুপাশের পাঁচ শতাধিক হোটেল গেস্টহাউসে যাতায়াতের অভ্যন্তরীণ ১০টি উপসড়কও প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত ২৫ হাজার পর্যটক হোটেলে আটকা পড়েন। কলাতলী সড়ক থেকে সমুদ্র সৈকতে নামার সুগন্ধা সড়কটিও ডুবে আছে। অনেক পর্যটককে হাঁটু-কোমর পানি ভেঙে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। তবে বেশির ভাগই হোটেলকক্ষে অলস সময় কাটাচ্ছেন।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, সহস্রাধিক পর্যটক জলাবদ্ধতায় হোটেল-মোটেলে আটকা পড়েছেন। এ রকম জলাবদ্ধতা এর আগে দেখিনি।

শহরের ব্যস্ততম পাঁচ কিলোমিটারের প্রধান সড়কও পানিতে তলিয়ে গেছে। বাজারঘাটা, বড়বাজার, অ্যান্ডারসন সড়ক, টেকপাড়া, বার্মিজ মার্কেট এলাকা, বৌদ্ধমন্দির সড়ক, গোলদিঘিরপাড়, তারাবনিয়াছড়া, রুমালিয়ারছড়ার কয়েকশো দোকান, অফিস-আদালত ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বৃষ্টির পানি ঢুকেছে। জলাবদ্ধতার কারণে রান্নাবান্না বন্ধ থাকায় হাজার হাজার মানুষ এখন খাবার ও পানীয় জল সংকটে পড়েছেন।

শুক্রবার থেকে দেশের পূর্বাঞ্চলের জেলা সিলেট, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও বান্দরবানের নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক পানির ঢল নামতে থাকে। ফলে ওই এলাকাগুলোর নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত হয়।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, বৃষ্টির কারণে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিলস্না, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের সব জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। এসব এলাকায় কয়েক দিনের জন্য বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

উল্লেখ্য, সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারী, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারী এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত।

নওরোজ/এসএইচ

Please Share This Post in Your Social Media

পানিবন্দি পর্যটন শহর কক্সবাজার, জনভোগান্তি চরমে

নওরোজ ডেস্ক
Update Time : ১০:৫১:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চলতি মৌসুমের রেকর্ড বৃষ্টিপাতে তলিয়ে গেছে কক্সবাজার শহরের প্রায় ৯০ ভাগ এলাকা। গত প্রায় তিন দশকে এই পরিমাণ জলাবদ্ধতা দেখেননি কক্সবাজারবাসী। আটকে পড়া পর্যটকদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

টানা ভারী বর্ষণে পাহাড় ধস ও ট্রলারডুবিতে এই জেলায় আটজন নিহত হয়েছেন। সড়ক-উপসড়কে পানি উঠে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শহরের হাজারও বসতবাড়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে গেছে লাখ লাখ টাকার মালামাল। এছাড়া কক্সবাজার সদরসহ আটটি উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা পর্যন্ত অন্তত ২৫ হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন হোটেলে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিভীষণ কান্তি দাশ জানিয়েছেন, কক্সবাজারে টানা বৃষ্টিতে অনেক এলাকা পানির নিচে। কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। এবং ঝিলংজায় পাহাড় ধসে নিহত তিনজনের পরিবারকে ৭৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে কাজ চলছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনের প্রধান সড়কটি ডুবে গেছে। সড়কের দুপাশের পাঁচ শতাধিক হোটেল গেস্টহাউসে যাতায়াতের অভ্যন্তরীণ ১০টি উপসড়কও প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত ২৫ হাজার পর্যটক হোটেলে আটকা পড়েন। কলাতলী সড়ক থেকে সমুদ্র সৈকতে নামার সুগন্ধা সড়কটিও ডুবে আছে। অনেক পর্যটককে হাঁটু-কোমর পানি ভেঙে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। তবে বেশির ভাগই হোটেলকক্ষে অলস সময় কাটাচ্ছেন।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, সহস্রাধিক পর্যটক জলাবদ্ধতায় হোটেল-মোটেলে আটকা পড়েছেন। এ রকম জলাবদ্ধতা এর আগে দেখিনি।

শহরের ব্যস্ততম পাঁচ কিলোমিটারের প্রধান সড়কও পানিতে তলিয়ে গেছে। বাজারঘাটা, বড়বাজার, অ্যান্ডারসন সড়ক, টেকপাড়া, বার্মিজ মার্কেট এলাকা, বৌদ্ধমন্দির সড়ক, গোলদিঘিরপাড়, তারাবনিয়াছড়া, রুমালিয়ারছড়ার কয়েকশো দোকান, অফিস-আদালত ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বৃষ্টির পানি ঢুকেছে। জলাবদ্ধতার কারণে রান্নাবান্না বন্ধ থাকায় হাজার হাজার মানুষ এখন খাবার ও পানীয় জল সংকটে পড়েছেন।

শুক্রবার থেকে দেশের পূর্বাঞ্চলের জেলা সিলেট, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও বান্দরবানের নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক পানির ঢল নামতে থাকে। ফলে ওই এলাকাগুলোর নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত হয়।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, বৃষ্টির কারণে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিলস্না, লক্ষ্মীপুর, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের সব জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। এসব এলাকায় কয়েক দিনের জন্য বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

উল্লেখ্য, সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারী, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারী এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত।

নওরোজ/এসএইচ