ঢাকা ০৪:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কাল গোপালপুরে সালাম পিন্টুর মুক্তির দাবিতে সমাবেশ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৫:৫০:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১৫২ Time View

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে সূতি ভি এম পাইলট হাই স্কুল মাঠে আগামীকাল বুধবার দুপুর ২টায় স্থানীয় বিএনপির আহবানে এক বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, সাবেক উপমন্ত্রী, স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের আতংক, বর্তমানে ২১ আগস্টে শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় কারাগারে আটক আবদুস সালাম পিন্টুর মুক্তির দাবীতে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সভায় সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-র প্রচার সম্পাদক ও যুবদলের সাবেক সভাপতি স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের ত্রাস বার বার কারা নির্যাতিত নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।

সালাম পিন্টু ও তার ঐতিহ্যবাহী পরিবার আবদুস সালাম পিন্টু টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলাধীন যমুনা বিধোত গুলিপেচা গ্রামের ডাঃ মরহুম মহিউদ্দিন মিয়ার জ্যৈষ্ঠ সন্তান। ডাঃ মহিউদ্দিন এলাকায় মহু ডাক্তার নামে পরিচিত ছিলেন।

ঐতিহ্যবাহী নলিন বাজারে ছিল তার চেম্বার। এলাকার মানুষের চিকিৎসায় সে সময় একমাত্র ভরসা ছিলেন এই মহু ডাক্তার। ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি কাদেরিয়া বাহিনীর আঙ্গুঁর কোম্পানী, হাকিম কোম্পানী, ভোলা কোম্পানী ও আরজু কোম্পানীর সকল সদস্যকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছেন। সিরাজকান্দির চরে (বর্তমান যুমনা ব্রীজের উত্তর পাশে) যমুনা নদীতে পাক বাহিনীর ভারী যুদ্ধাস্ত্র বহনকারী একটি জাহাজ মুক্তিবাহিনী ডুবিয়ে দেয়। সে সময়ে এটি ছিল আলোড়ন সৃষ্টিকারী এক যুগান্তকারী ঘটনা।

সে সময় এই ঘটনা দেশে-বিদেশে আলোচনার ঝড় তোলে। রাতারাতি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে কাদের সিদ্দিকীকে বাঘা সিদ্দিকী উপাধি দিয়ে সংবাদ প্রচার করা হয়। এই খবরে গোটা দেশবাসী উৎফুল্ল হয়ে উঠে।

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ভারী সমরাস্ত্র বোঝাই ওই জাহাজটি উত্তরবঙ্গ সীমান্তে পৌঁছতে পারলে মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়তো। জাহাজ ডুবিয়ে দেয়ার সাথে জড়িত মুক্তিযোদ্ধারাও এসে মহু ডাক্তারের বাড়ীতে আশ্রয় নেয়। তাদের মধ্যে কয়েকজন ছিল টাইফয়েড আক্রান্ত। মহু ডাক্তার তাদের সবাইকে বিনামূল্যে চিকিৎসা করেন।

মহু ডাক্তারের বড় ছেলে আবদুস সালাম পিন্টু। ‘৭১ সালে পাক-বাহিনী যেদিন প্রথম ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল মার্চ করে নাটিয়াপাড়া ব্রীজে সালাম পিন্টুর নেতৃত্বে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। সেখানে বেশ কিছু সময় যুদ্ধ চলার পর পাক-বাহিনীর ভারী অস্ত্রেশস্ত্রের আক্রমণে টিকতে না পেরে প্রতিরোধকারীরা প্রতিরোধ তুলে নিতে বাধ্য হন।

পরে সালাম পিন্টু বাড়ী ফিরে যাবার সময় পাকুটিয়া এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। তাকে বহনকারী গাড়ী পুকুরে পড়ে যায়। এতে গুরুত্বর আহত হয়ে দীর্ঘদিন তিনি বাড়ীতে থেকে চিকিৎসা নেন।

স্বাধীনতার পরে তিনি ওকালতি পাস করে টাঙ্গাইলে আয়কর আইনজীবী হিসাবে প্রাকটিস শুরু করেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করলে তিনি টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সেই থেকে তিনি বিএনপিতেই আছেন।

তিনি টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূইয়াপুর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন একাধিকবার। বর্তমানে তিনি শেখ হাসিনার সমাবেশে যড়যন্ত্রমূলকভাবে দায়েরকৃত গ্রেনেড হামলা মামলার আসামী হিসাবে কারাগারে আছেন। তার ছোট ভাই আবদসু সেলিম ‘৭১-এ ভারতে ট্রেনিং নিয়ে প্রথমে টাঙ্গাইলে আসেন। তাদের দলটিই টাঙ্গাইলে প্রথম মুক্তিবাহিনীর আগমন। ছোট ভাই আবুল কালাম আজাদ, মুক্তি বাহিনীর হাতেম কোম্পানীর অধীনে প্লাটুন কমান্ডার আঃ হাইয়ের অধীনে যুদ্ধ করেছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

কাল গোপালপুরে সালাম পিন্টুর মুক্তির দাবিতে সমাবেশ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
Update Time : ০৫:৫০:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে সূতি ভি এম পাইলট হাই স্কুল মাঠে আগামীকাল বুধবার দুপুর ২টায় স্থানীয় বিএনপির আহবানে এক বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, সাবেক উপমন্ত্রী, স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের আতংক, বর্তমানে ২১ আগস্টে শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় কারাগারে আটক আবদুস সালাম পিন্টুর মুক্তির দাবীতে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সভায় সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-র প্রচার সম্পাদক ও যুবদলের সাবেক সভাপতি স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের ত্রাস বার বার কারা নির্যাতিত নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।

সালাম পিন্টু ও তার ঐতিহ্যবাহী পরিবার আবদুস সালাম পিন্টু টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলাধীন যমুনা বিধোত গুলিপেচা গ্রামের ডাঃ মরহুম মহিউদ্দিন মিয়ার জ্যৈষ্ঠ সন্তান। ডাঃ মহিউদ্দিন এলাকায় মহু ডাক্তার নামে পরিচিত ছিলেন।

ঐতিহ্যবাহী নলিন বাজারে ছিল তার চেম্বার। এলাকার মানুষের চিকিৎসায় সে সময় একমাত্র ভরসা ছিলেন এই মহু ডাক্তার। ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি কাদেরিয়া বাহিনীর আঙ্গুঁর কোম্পানী, হাকিম কোম্পানী, ভোলা কোম্পানী ও আরজু কোম্পানীর সকল সদস্যকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছেন। সিরাজকান্দির চরে (বর্তমান যুমনা ব্রীজের উত্তর পাশে) যমুনা নদীতে পাক বাহিনীর ভারী যুদ্ধাস্ত্র বহনকারী একটি জাহাজ মুক্তিবাহিনী ডুবিয়ে দেয়। সে সময়ে এটি ছিল আলোড়ন সৃষ্টিকারী এক যুগান্তকারী ঘটনা।

সে সময় এই ঘটনা দেশে-বিদেশে আলোচনার ঝড় তোলে। রাতারাতি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে কাদের সিদ্দিকীকে বাঘা সিদ্দিকী উপাধি দিয়ে সংবাদ প্রচার করা হয়। এই খবরে গোটা দেশবাসী উৎফুল্ল হয়ে উঠে।

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ভারী সমরাস্ত্র বোঝাই ওই জাহাজটি উত্তরবঙ্গ সীমান্তে পৌঁছতে পারলে মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়তো। জাহাজ ডুবিয়ে দেয়ার সাথে জড়িত মুক্তিযোদ্ধারাও এসে মহু ডাক্তারের বাড়ীতে আশ্রয় নেয়। তাদের মধ্যে কয়েকজন ছিল টাইফয়েড আক্রান্ত। মহু ডাক্তার তাদের সবাইকে বিনামূল্যে চিকিৎসা করেন।

মহু ডাক্তারের বড় ছেলে আবদুস সালাম পিন্টু। ‘৭১ সালে পাক-বাহিনী যেদিন প্রথম ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল মার্চ করে নাটিয়াপাড়া ব্রীজে সালাম পিন্টুর নেতৃত্বে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। সেখানে বেশ কিছু সময় যুদ্ধ চলার পর পাক-বাহিনীর ভারী অস্ত্রেশস্ত্রের আক্রমণে টিকতে না পেরে প্রতিরোধকারীরা প্রতিরোধ তুলে নিতে বাধ্য হন।

পরে সালাম পিন্টু বাড়ী ফিরে যাবার সময় পাকুটিয়া এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। তাকে বহনকারী গাড়ী পুকুরে পড়ে যায়। এতে গুরুত্বর আহত হয়ে দীর্ঘদিন তিনি বাড়ীতে থেকে চিকিৎসা নেন।

স্বাধীনতার পরে তিনি ওকালতি পাস করে টাঙ্গাইলে আয়কর আইনজীবী হিসাবে প্রাকটিস শুরু করেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করলে তিনি টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সেই থেকে তিনি বিএনপিতেই আছেন।

তিনি টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূইয়াপুর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন একাধিকবার। বর্তমানে তিনি শেখ হাসিনার সমাবেশে যড়যন্ত্রমূলকভাবে দায়েরকৃত গ্রেনেড হামলা মামলার আসামী হিসাবে কারাগারে আছেন। তার ছোট ভাই আবদসু সেলিম ‘৭১-এ ভারতে ট্রেনিং নিয়ে প্রথমে টাঙ্গাইলে আসেন। তাদের দলটিই টাঙ্গাইলে প্রথম মুক্তিবাহিনীর আগমন। ছোট ভাই আবুল কালাম আজাদ, মুক্তি বাহিনীর হাতেম কোম্পানীর অধীনে প্লাটুন কমান্ডার আঃ হাইয়ের অধীনে যুদ্ধ করেছেন।