ঢাকা ১২:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ
ছিনতাইকারীর কবল থেকে ইরানী দম্পতিকে উদ্ধার করলো সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা ক্যাম্প থাকলে স্থানীয়দের চাকরি থাকবে এটাই শেষ কথা! বৈছাআ ও বিএনপি নেতাদের সেনাবাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদ, রংপুরে ছুটে এলেন সারজিস দেশের ১৮ কোটি মানুষেরই পরিবেশ সচেতন হওয়া জরুরি – উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান টাকার বিনিময়ে ইরানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করছে ইসরায়েলিরা মেঘনায় ট্রলার ডুবিতে সাব পোস্টমাস্টারসহ ২জনের মৃত্যু, নিখোঁজ-২ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জনগণের সাথে আরও নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে – পানি সম্পদ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে জড়িয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ প্রকাশে নিন্দা ও প্রতিবাদ এনসিপি’র যুক্তরাজ্যে ই-সিগারেট বিক্রি নিষিদ্ধ আগামী বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা

৮০ বছরের মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিকে উল্টে দেবেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ১০:৩২:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৪৯ Time View

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তার সমালোচকরা মাঝে মাঝে হাস্যকর ও বিচ্ছিন্নতাবাদে বিশ্বাসী বলে অভিযুক্ত করেন। তার দ্বিতীয় মেয়াদ কেমন হতে চলেছে তা এরই মধ্যে কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। শপথ অনুষ্ঠানের আগেই তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন। আর্কটিকে অবস্থিত খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ গ্রিনল্যান্ড দখলে নেওয়ার কথা বলেছেন। ফলে তার দ্বিতীয় মেয়াদ প্রথমবারের চেয়ে যে জটিল হতে চলেছে শুধু তাই নয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যে পররাষ্ট্রনীতি যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে তাও তিনি ঘুরিয়ে দিতে পারেন।

কয়েক দশক ধরেই মার্কিন নেতারা যুক্তি দিয়ে আসছেন যে তাদের ক্ষমতার উৎস হলো বিশ্বকে অনেক বেশি স্থিতিশীল করার ক্ষেত্রে অপরিহার্য ডিফেন্ডার হওয়ার দায়িত্ববোধ ও গণতন্ত্রের প্রতি যত্নবান হওয়া। ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই মূল্যবোধ খাদে ফেলে দেবেন এবং ক্ষমতাকে ব্যবহার-কেন্দ্রীভূতে বেশি মনোযোগ দেবেন। তিনটি সংঘাতে তার দৃষ্টিভঙ্গি পরীক্ষিত ও সংজ্ঞায়িত হবে। সেগুলো হলো মধ্যপ্রাচ্য, ইউক্রেন ও চীনের সঙ্গে আমেরিকার স্নায়ুযুদ্ধ।

ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিরা গাজা নিয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। কারণ এক্ষেত্রে একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ট্রাম্প হুমকি দিয়ে বলেছিলেন যদি তারা সেটি করতে ব্যর্থ হয় তাহলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। চুক্তি যাতে দ্বিতীয় ধাপে পৌঁছায় সে জন্য তিনি চাপ অব্যাহত রাখবেন।

মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প অন্যদের চেয়ে আলাদা। প্রথম মেয়াদে তিনি আব্রাহাম চুক্তিতে অবদান রেখেছিলেন। জিম্মি চুক্তি ব্যবহার করে তিনি ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মধ্যে চুক্তিতে অগ্রসর হতে পারেন। যেটাকে তিনি অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করেন। গাজা, লেবানন ও সিরিয়ায় বিপর্যস্ত হয়েছে ইরানের মিত্ররা। এক্ষেত্রেও চুক্তি আসতে পারে।

ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কারণ ভ্লাদিমির পুতিনের চেয়ে আমেরিকার মিত্রদের ওপর তার বেশি লিভারেজ রয়েছে। এক্ষেত্রে তার সহজ উপায় হতে পারে কিয়েভের ওপর ছাড় ও সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া।

ক্ষমতার আশাবাদী ব্যবহারের কিছুটা সুবিধা রয়েছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিজেদের প্রতিরক্ষায় ট্রাম্প ন্যাটো সদস্যদের অব্যাহত চাপ দিয়ে যাবেন। যেটা ভালো দিক। তবে এর নেতিবাচক দিকও রয়েছে। এক্ষেত্রে ন্যাটো ওয়াক আউট, বাণিজ্য নিয়ে বিবাদ, বিদ্রোহী জাতীয় রক্ষণশীল দলগুলোকে সমর্থন ও গ্রিনল্যান্ডের ইস্যু ব্যবহার করে বাঁচতে পারে। আমেরিকার মতো আফগানিস্তানে ডেনমার্কও সেনা হারিয়েছে। গ্রিনল্যান্ডের সঙ্গে বিবাধের কারণে আমেরিকা তাদের কাছে হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।

সার্বজনীন মূল্যবোধ থেকে সরে এলে স্বৈরাচারীরা সুযোগ নেবে। ট্রাম্পের কানাডা, গ্রিনল্যান্ড ও পানামা ইস্যুতেও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আসতে পারে। কারণ বিষটি রাশিয়ার জর্জিয়া দখলের লোভ ও দক্ষিণ চীন সাগরকে চীনের দাবির মতো হয়ে যায়। তাছাড়া ট্রাম্প যদি জাতিসংঘের মতো প্রতিষ্ঠানকে আঘাত করতে থাকেন তাহলে চীন ও রাশিয়া সেখানে আধিপত্য বিস্তার করবে। দেশ দুইটি এ ধরনের প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারবে।

ট্রাম্প প্রশাসনে যেসব ব্যক্তিদের নিয়োগ করেছেন তাতে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেও বিশৃঙ্খলা ছড়াবে। ট্রাম্প তার নিজের স্বার্থকে তার দেশের থেকে আলাদা করতে অনুপযুক্ত, বিশেষ করে যদি তার ও তার সহযোগীদের অর্থ ঝুঁকিতে থাকে।

সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট

Please Share This Post in Your Social Media

৮০ বছরের মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিকে উল্টে দেবেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Update Time : ১০:৩২:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তার সমালোচকরা মাঝে মাঝে হাস্যকর ও বিচ্ছিন্নতাবাদে বিশ্বাসী বলে অভিযুক্ত করেন। তার দ্বিতীয় মেয়াদ কেমন হতে চলেছে তা এরই মধ্যে কিছুটা ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। শপথ অনুষ্ঠানের আগেই তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন। আর্কটিকে অবস্থিত খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ গ্রিনল্যান্ড দখলে নেওয়ার কথা বলেছেন। ফলে তার দ্বিতীয় মেয়াদ প্রথমবারের চেয়ে যে জটিল হতে চলেছে শুধু তাই নয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যে পররাষ্ট্রনীতি যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে তাও তিনি ঘুরিয়ে দিতে পারেন।

কয়েক দশক ধরেই মার্কিন নেতারা যুক্তি দিয়ে আসছেন যে তাদের ক্ষমতার উৎস হলো বিশ্বকে অনেক বেশি স্থিতিশীল করার ক্ষেত্রে অপরিহার্য ডিফেন্ডার হওয়ার দায়িত্ববোধ ও গণতন্ত্রের প্রতি যত্নবান হওয়া। ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই মূল্যবোধ খাদে ফেলে দেবেন এবং ক্ষমতাকে ব্যবহার-কেন্দ্রীভূতে বেশি মনোযোগ দেবেন। তিনটি সংঘাতে তার দৃষ্টিভঙ্গি পরীক্ষিত ও সংজ্ঞায়িত হবে। সেগুলো হলো মধ্যপ্রাচ্য, ইউক্রেন ও চীনের সঙ্গে আমেরিকার স্নায়ুযুদ্ধ।

ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিরা গাজা নিয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। কারণ এক্ষেত্রে একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ট্রাম্প হুমকি দিয়ে বলেছিলেন যদি তারা সেটি করতে ব্যর্থ হয় তাহলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। চুক্তি যাতে দ্বিতীয় ধাপে পৌঁছায় সে জন্য তিনি চাপ অব্যাহত রাখবেন।

মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প অন্যদের চেয়ে আলাদা। প্রথম মেয়াদে তিনি আব্রাহাম চুক্তিতে অবদান রেখেছিলেন। জিম্মি চুক্তি ব্যবহার করে তিনি ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মধ্যে চুক্তিতে অগ্রসর হতে পারেন। যেটাকে তিনি অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করেন। গাজা, লেবানন ও সিরিয়ায় বিপর্যস্ত হয়েছে ইরানের মিত্ররা। এক্ষেত্রেও চুক্তি আসতে পারে।

ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কারণ ভ্লাদিমির পুতিনের চেয়ে আমেরিকার মিত্রদের ওপর তার বেশি লিভারেজ রয়েছে। এক্ষেত্রে তার সহজ উপায় হতে পারে কিয়েভের ওপর ছাড় ও সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া।

ক্ষমতার আশাবাদী ব্যবহারের কিছুটা সুবিধা রয়েছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিজেদের প্রতিরক্ষায় ট্রাম্প ন্যাটো সদস্যদের অব্যাহত চাপ দিয়ে যাবেন। যেটা ভালো দিক। তবে এর নেতিবাচক দিকও রয়েছে। এক্ষেত্রে ন্যাটো ওয়াক আউট, বাণিজ্য নিয়ে বিবাদ, বিদ্রোহী জাতীয় রক্ষণশীল দলগুলোকে সমর্থন ও গ্রিনল্যান্ডের ইস্যু ব্যবহার করে বাঁচতে পারে। আমেরিকার মতো আফগানিস্তানে ডেনমার্কও সেনা হারিয়েছে। গ্রিনল্যান্ডের সঙ্গে বিবাধের কারণে আমেরিকা তাদের কাছে হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।

সার্বজনীন মূল্যবোধ থেকে সরে এলে স্বৈরাচারীরা সুযোগ নেবে। ট্রাম্পের কানাডা, গ্রিনল্যান্ড ও পানামা ইস্যুতেও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আসতে পারে। কারণ বিষটি রাশিয়ার জর্জিয়া দখলের লোভ ও দক্ষিণ চীন সাগরকে চীনের দাবির মতো হয়ে যায়। তাছাড়া ট্রাম্প যদি জাতিসংঘের মতো প্রতিষ্ঠানকে আঘাত করতে থাকেন তাহলে চীন ও রাশিয়া সেখানে আধিপত্য বিস্তার করবে। দেশ দুইটি এ ধরনের প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারবে।

ট্রাম্প প্রশাসনে যেসব ব্যক্তিদের নিয়োগ করেছেন তাতে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেও বিশৃঙ্খলা ছড়াবে। ট্রাম্প তার নিজের স্বার্থকে তার দেশের থেকে আলাদা করতে অনুপযুক্ত, বিশেষ করে যদি তার ও তার সহযোগীদের অর্থ ঝুঁকিতে থাকে।

সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট