সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলামের জামিন নামঞ্জুর

- Update Time : ০৫:৫৬:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
- / ২৮ Time View
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকেন্দ্রিক ঢাকার বিভিন্ন থানায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা ও চাঁদাবাজির সাত মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতা কামরুল ইসলামের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (১৪ জুলাই) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী আফতাব মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি জানান, রোববার ঢাকার পৃথক তিন অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত এসব মামলায় কামরুল ইসলামের জামিন নামঞ্জুর করেন। সাত মামলার মধ্যে কামরুল ইসলামের নির্বাচনী এলাকায় চাঁদাবাজির দুটি মামলা রয়েছে। বাকি পাঁচটি হলো বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকেন্দ্রিক হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলা।
আফতাব মাহমুদ বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন নামঞ্জুরের পর নিয়ম অনুযায়ী আমরা জজ আদালতে জামিন আবেদন করি। আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন। আমরা এখন উচ্চ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করবো।
এদিকে, সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ না দেওয়ায় পুলিশ সদস্যদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে ধমক দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলাম।
সোমবার (১৪ জুলাই) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের হাজতখানা থেকে এজলাসে তোলার সময় এ ঘটনা ঘটে।
জুলাই আন্দোলনে স্কুলছাত্র রাকিব হাসান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানিতে অংশ নিতে আদালতে হাজির করা হয়েছিল সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে।
সকাল সোয়া ১০টার দিকে তাদের আদালতে তোলা হয়। তখন তাদের হাতে হাতকড়া, গায়ে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট এবং মাথায় হেলমেট ছিল। পুলিশের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে এজলাসে তোলার সময় সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে চান কামরুল ইসলাম। তবে পুলিশ সদস্যরা তাকে থামিয়ে দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে রূঢ় কণ্ঠে বলেন, কেন, তুমি টানতেছ কেন? এরপর পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে সরাসরি ধমক দেন। তবে তার পাশেই থাকা সাবেক বিচারপতি মানিক পুরো সময় ছিলেন নীরব।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মোর্শেদ হোসেন শাহীন জানান, ঢাকা মহানগর হাকিম এম এ আজহারুল ইসলাম শুনানি শেষে মামলায় কামরুল ইসলাম ও মানিককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে, চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি একইভাবে লালবাগ থানার আলী হত্যা মামলায় আদালতে হাজির করার সময় পুলিশ সদস্যদের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছিলেন কামরুল ইসলাম। তখন লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি দিয়ে আদালতে নেওয়ায় তিনি বলেছিলেন, “ইতরামির একটা সীমা আছে, ফাজলামো পেয়েছেন নাকি?”
মামলার এজাহার অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সেন্ট জোসেফ স্কুলের সামনে গুলিবিদ্ধ হয় আইটি জেড স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র রাকিব হাসান। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৮৭ জনের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত রাকিবের চাচা নুরুল আমিন। মামলায় কামরুল ইসলাম হচ্ছেন ১০ নম্বর এবং শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ১১ নম্বর আসামি।
জানা গেছে, গত বছরের ১৮ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা-১২ নম্বর সেক্টর থেকে কামরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন ১৯ নভেম্বর তাকে নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে তার কয়েক দফা রিমান্ড শেষে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। জানা গেছে, এ পর্যন্ত মোট ২৩টি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে কামরুল ইসলামকে। এর মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানকেন্দ্রিক হত্যা, হত্যাচেষ্টা, দুর্নীতি ও আইসিটি আইনের মামলা রয়েছে।