ঢাকা ০২:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৬ দিনের মাথায় অনশন ভাঙলেন তারেক, নেওয়া হলো হাসপাতালে

রাজনীতি ডেস্ক
  • Update Time : ১১:৩৯:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫
  • / ২০ Time View

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের ‘আশ্বাসে’ আমজনতার দলের সাধারণ সম্পাদক তারেক রহমান ছয় দিনের মাথায় অনশন ভেঙেছেন।

রোববার রাত ৯টার পরে তাকে নির্বাচন ভবনের প্রধান ফটক থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়; যিনি দলের নিবন্ধনের দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে এ কর্মসূচি পালন করছিলেন।

তবে আমজনতার দলের সভাপতি মিয়া মশিউজ্জামানের দাবি, তারেক অনশন ভাঙেননি। স্বাস্থ্যগত কারণে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

পরে হাসপাতালে যাওয়ার পর অনশন ভাঙার ভিডিও পোস্ট করে তারেক ফেইসবুক লেখেন, লড়াই জারি থাকবে।

এর আগে নির্বাচন ভবনের সামনে অনশনস্থলে সালাহউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, তাদের অনু্রোধে তারেক অনশন ভেঙেছেন। রাত ৮টার দিকে নির্বাচন ভবনের মূল ফটকে যান বিএনপির এই নেতা।

আমজনতার দলের সভাপতি মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, “আমরা কেউ তারেককে রাজি করাতে পারছিলাম না। অবশেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন সাহেব আসেন। তার অনুরোধে তাকে নির্বাচন ভবনের প্রধান ফটক থেকে স্বাস্থ্যগত কারণে হাসপাতালে নেওয়া হয়।”

তার দাবি, তারেক অনশন ভাঙেননি। স্বাস্থ্যগত কারণে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

এখন পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করার পাশাপাশি আপিলের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন তিনি।

ইসির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা উপসচিব সহিদ আবদুস সালাম বলেন, রাত সোয়া ৮টার দিকে তারেককে নির্বাচন ভবনের প্রধান ফটক থেকে হাসপাতালের দিকে নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার থেকে নির্বাচন ভবনের সামনে অনশন করা তারেককে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তেজগাঁও জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আক্বাস আলী।

এর আগে নিবন্ধনের দাবিতে অনশনে থাকা আমজনতার দলের সাধারণ সম্পাদক তারেককে নির্বাচন কমিশনে আপিল করার জন্য রোববার বিকালে আহ্বান জানান ইসির সচিব আখতার আহমেদ।

তিনি বলেন, আমজনতার দল আইনসম্মত পথে এগোলে ইসি বিষয়টি বিবেচনায় নেবে।

“আইনগত দিক থেকে আমাদের যেটুকু বলার, সেটা চিঠির মাধ্যমে বলেছি। এখন আপিল করতে পারেন, ঘাটতি যেগুলো আছেন পূরণ করে দিতে পারেন। আপিল, সংশোধন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন, সময় বাড়ানো এগুলো প্রচলিত প্রথা।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মঙ্গলবার জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ তিনটি দলকে নিবন্ধন দেওয়া সিদ্ধান্ত দেয় নির্বাচন কমিশন। দলগুলো নিয়ে কারো আপত্তি থাকলে তা ১২ নভেম্বরের মধ্যে জানাতে বলা হয় কমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে।

এবার ১৪৩টি দল নিবন্ধনের আবেদন করলে ইসির প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ যায় ১২১টি। ২২টি দলের মাঠ পর্যায়ে সরেজমিন তদন্ত শেষে নিবন্ধন শর্তপূরণ করায় তিনটি দলকে নিবন্ধন দেওয়া হয়।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে ইতোমধ্যে নিবন্ধন না পাওয়ার কারণ তুলে ধরে আমজনতার দলটির সভাপতিকে চিঠি দেওয়া হয়। তবুও নিবন্ধনের দাবিতে তখন অনশন ভাঙেননি দলটির সাধারণ সম্পাদক তারেক।

‘তারেকদের হয়রানি করেছেন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা’

আমজনতার দলের তারেকের অনশন ভাঙানোর পর সালাহউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, মাঠ পর্যায়ে তদন্তের নামে তারেকের দলকে হয়রানি করেছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।

নিবন্ধন পেতে আপিলের পর দলটির বিষয়টি যেন সহানূভূতির সঙ্গে দেখা হয় সেজন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আপিলের পর মাঠ পর্যায়ে যাতে তদন্তটা সঠিকভাবে হয় সেজন্য মাঠের কর্মকর্তাদের যেন ইসি নির্দেশনা দেয়।

সালাহউদ্দিন বলেন, “তারেক বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একটা উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার সাথের অনেকেই জীবন দিয়েছে, পঙ্গু হয়েছে। তারেক অনেকবার ফ্যাসিবাদের রিমান্ডে অপরিসীম অত্যাচারের শিকার হয়েছে। সেই তারেকের প্রতি আমাদের সহানুভূতি আছে।

তিনি বলেন, “আমজনতার পার্টির সঙ্গে যতবার কথা বলেছি ততবার তারা বলেছে, মাঠ পর্যায়ে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। উপজেলা অফিসগুলোতে তদন্ত করতে গিয়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচন কর্মকর্তারা তাদেরকে হয়রানি করেছে।

“ব্যক্তিগতভাবে আমি নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কমিশনারদের সঙ্গে জানিয়েছি যে তার বিষয়ে মনে হয় ন্যায় বিচার করা হচ্ছে না। তারা আশ্বস্ত করেছিলেন যে পুন:তদন্ত করে সেগুলো বিবেচনা করার বিষয়ে। কিন্তু বারবারই দেখা গেছে যে মাঠ পর্যায়ে তার সঙ্গে সুবিচার করা হয়নি।”

সালাহউদ্দিন বলেন, “তারেকের যেহেতু শারীরিক অবস্থা নাজুক, ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। সেজন্য আমরা তাকে অনুরোধ করে তার অনশন ভাঙাতে এসেছিলাম। সে আমাদের কথা রেখেছে।”

Please Share This Post in Your Social Media

৬ দিনের মাথায় অনশন ভাঙলেন তারেক, নেওয়া হলো হাসপাতালে

রাজনীতি ডেস্ক
Update Time : ১১:৩৯:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের ‘আশ্বাসে’ আমজনতার দলের সাধারণ সম্পাদক তারেক রহমান ছয় দিনের মাথায় অনশন ভেঙেছেন।

রোববার রাত ৯টার পরে তাকে নির্বাচন ভবনের প্রধান ফটক থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়; যিনি দলের নিবন্ধনের দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে এ কর্মসূচি পালন করছিলেন।

তবে আমজনতার দলের সভাপতি মিয়া মশিউজ্জামানের দাবি, তারেক অনশন ভাঙেননি। স্বাস্থ্যগত কারণে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

পরে হাসপাতালে যাওয়ার পর অনশন ভাঙার ভিডিও পোস্ট করে তারেক ফেইসবুক লেখেন, লড়াই জারি থাকবে।

এর আগে নির্বাচন ভবনের সামনে অনশনস্থলে সালাহউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, তাদের অনু্রোধে তারেক অনশন ভেঙেছেন। রাত ৮টার দিকে নির্বাচন ভবনের মূল ফটকে যান বিএনপির এই নেতা।

আমজনতার দলের সভাপতি মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, “আমরা কেউ তারেককে রাজি করাতে পারছিলাম না। অবশেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন সাহেব আসেন। তার অনুরোধে তাকে নির্বাচন ভবনের প্রধান ফটক থেকে স্বাস্থ্যগত কারণে হাসপাতালে নেওয়া হয়।”

তার দাবি, তারেক অনশন ভাঙেননি। স্বাস্থ্যগত কারণে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

এখন পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করার পাশাপাশি আপিলের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন তিনি।

ইসির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা উপসচিব সহিদ আবদুস সালাম বলেন, রাত সোয়া ৮টার দিকে তারেককে নির্বাচন ভবনের প্রধান ফটক থেকে হাসপাতালের দিকে নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার থেকে নির্বাচন ভবনের সামনে অনশন করা তারেককে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তেজগাঁও জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আক্বাস আলী।

এর আগে নিবন্ধনের দাবিতে অনশনে থাকা আমজনতার দলের সাধারণ সম্পাদক তারেককে নির্বাচন কমিশনে আপিল করার জন্য রোববার বিকালে আহ্বান জানান ইসির সচিব আখতার আহমেদ।

তিনি বলেন, আমজনতার দল আইনসম্মত পথে এগোলে ইসি বিষয়টি বিবেচনায় নেবে।

“আইনগত দিক থেকে আমাদের যেটুকু বলার, সেটা চিঠির মাধ্যমে বলেছি। এখন আপিল করতে পারেন, ঘাটতি যেগুলো আছেন পূরণ করে দিতে পারেন। আপিল, সংশোধন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন, সময় বাড়ানো এগুলো প্রচলিত প্রথা।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মঙ্গলবার জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ তিনটি দলকে নিবন্ধন দেওয়া সিদ্ধান্ত দেয় নির্বাচন কমিশন। দলগুলো নিয়ে কারো আপত্তি থাকলে তা ১২ নভেম্বরের মধ্যে জানাতে বলা হয় কমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে।

এবার ১৪৩টি দল নিবন্ধনের আবেদন করলে ইসির প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ যায় ১২১টি। ২২টি দলের মাঠ পর্যায়ে সরেজমিন তদন্ত শেষে নিবন্ধন শর্তপূরণ করায় তিনটি দলকে নিবন্ধন দেওয়া হয়।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে ইতোমধ্যে নিবন্ধন না পাওয়ার কারণ তুলে ধরে আমজনতার দলটির সভাপতিকে চিঠি দেওয়া হয়। তবুও নিবন্ধনের দাবিতে তখন অনশন ভাঙেননি দলটির সাধারণ সম্পাদক তারেক।

‘তারেকদের হয়রানি করেছেন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা’

আমজনতার দলের তারেকের অনশন ভাঙানোর পর সালাহউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, মাঠ পর্যায়ে তদন্তের নামে তারেকের দলকে হয়রানি করেছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।

নিবন্ধন পেতে আপিলের পর দলটির বিষয়টি যেন সহানূভূতির সঙ্গে দেখা হয় সেজন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আপিলের পর মাঠ পর্যায়ে যাতে তদন্তটা সঠিকভাবে হয় সেজন্য মাঠের কর্মকর্তাদের যেন ইসি নির্দেশনা দেয়।

সালাহউদ্দিন বলেন, “তারেক বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একটা উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার সাথের অনেকেই জীবন দিয়েছে, পঙ্গু হয়েছে। তারেক অনেকবার ফ্যাসিবাদের রিমান্ডে অপরিসীম অত্যাচারের শিকার হয়েছে। সেই তারেকের প্রতি আমাদের সহানুভূতি আছে।

তিনি বলেন, “আমজনতার পার্টির সঙ্গে যতবার কথা বলেছি ততবার তারা বলেছে, মাঠ পর্যায়ে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। উপজেলা অফিসগুলোতে তদন্ত করতে গিয়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচন কর্মকর্তারা তাদেরকে হয়রানি করেছে।

“ব্যক্তিগতভাবে আমি নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কমিশনারদের সঙ্গে জানিয়েছি যে তার বিষয়ে মনে হয় ন্যায় বিচার করা হচ্ছে না। তারা আশ্বস্ত করেছিলেন যে পুন:তদন্ত করে সেগুলো বিবেচনা করার বিষয়ে। কিন্তু বারবারই দেখা গেছে যে মাঠ পর্যায়ে তার সঙ্গে সুবিচার করা হয়নি।”

সালাহউদ্দিন বলেন, “তারেকের যেহেতু শারীরিক অবস্থা নাজুক, ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। সেজন্য আমরা তাকে অনুরোধ করে তার অনশন ভাঙাতে এসেছিলাম। সে আমাদের কথা রেখেছে।”