ঢাকা ০৭:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজঃ

৫০০ কোটি ডলারের সম্পত্তি ছেড়ে সন্ন্যাসী হলেন যে যুবক

নওরোজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • Update Time : ০৮:০৩:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৩
  • / ২০০ Time View

আপনি যদি বিত্ত-বৈভব ছেড়ে জীবনের গভীর অর্থ অনুসন্ধান বা অন্য কোনোভাবে জীবনকে সমৃদ্ধ করতে চান, সেক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে আপনার অনুপ্রেরণা হওয়ার যোগ্যতা রাখেন আজহান সিরিপানিও; আজ থেকে দু’দশকেরও বেশি সময় আগে যিনি বাবার ৫৪ হাজার ৭৩০ কোটি টাকার (৫০০) কোটি ডলারের সম্পত্তির মোহ পরিত্যাগ করে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর জীবন বেছে নিয়েছেন।

৪০ বছর বয়সী আজহান সিরিপানিওর মূল নাম আজহান কৃষ্ণান। তার বাবা আনন্দ কৃষ্ণান বেশ কয়েক বছর আগে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ু থেকে মালয়েশিয়ায় গিয়ে বসতি গাড়েন।

আজহান ও তার পরিবারের সদস্যরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। আনন্দ কৃষ্ণান মালয়েশিয়ার মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানি এয়ারসেলের স্বত্ত্বাধিকারী। এছাড়া তেল-গ্যাস, ভবন নির্মাণ, ও কৃত্রিম উপগ্রহের যন্ত্রাংশ প্রস্তুতেরও ব্যবসা রয়েছে তার।

আজহান আনন্দ কৃষ্ণানের একমাত্র পুত্র সন্তান। তিনি আনন্দের প্রথম স্ত্রীর সন্তান। ছোটো বেলাতেই মাকে হারান আজহান। পরে আনন্দ দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই ঘরে দুই মেয়ে রয়েছে তার। আজহান ও তার দু’বোনের শৈশব-কৈশোর কেটেছে যুক্তরাজ্যে। তাদের পড়াশোনাও সেখানে।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষার ডিগ্রি নেওয়া আজহান সিরিপানিও মালয়, থাই, ইংরেজিসহ ৮টি ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারেন।

আনন্দের প্রথম পক্ষের স্ত্রী এবং আজহানের মা ছিলেন থাইল্যান্ডের রাজ পরিবারের সদস্য ছিলেন। মৃত্যুর পর তাকে সমাহিতও করা হয়েছিল থাইল্যান্ডেই। ১৮ বছর বয়সে মায়ের কবরে শ্রদ্ধা অর্পণ করার পর তিনি বৌদ্ধ সন্ন্যাসী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং থাইল্যান্ডের দাতো দুম বৌদ্ধ মঠে দীক্ষা গ্রহণ করেন। সন্ন্যাসী হওয়ার পর নিজের নতুন নাম দেন আহজান সিরিপানিও। থাইল্যান্ডের এই বৌদ্ধ মঠটি মালয়েশিয়ার সীমান্তবর্তী।

আজহানের বৌদ্ধ ভিক্ষু হওয়ার সিদ্ধান্তে বাধা হয়ে দাঁড়াননি বাবা আনন্দ; বরং তিনিই সব থেকে বেশি উৎসাহ জুগিয়েছেন পুত্রকে।

সম্ভবত তার প্রধান কারণ—আনন্দ একজন নিবেদিত প্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। দেশে-বিদেশে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থায় অর্থদান করার জন্যও তার সুনাম রয়েছে।

এ কারণে ছেলে পার্থিব সম্পদের মায়া ত্যাগ করে কঠিন জীবনযাপন বেছে নিতে চায় শুনে বাধা দেননি তিনি। কিন্তু কেন বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে আজহান বৌদ্ধ ভিক্ষু হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন, সে সম্পর্কে প্রকাশ্যে কখনও কিছু বলেননি আনন্দ।

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে আজহান বৌদ্ধ ভিক্ষু হিসাবে জীবনযাপন করছেন। যে মঠে দীক্ষা নিয়েছিলেন, সেই দাতো দুম মঠেই থাকেন। ভিক্ষা করে যে সামান্য আয় হয়, তাতেই অনাড়ম্বরভাবে জীবন কাটান।

Please Share This Post in Your Social Media

৫০০ কোটি ডলারের সম্পত্তি ছেড়ে সন্ন্যাসী হলেন যে যুবক

নওরোজ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
Update Time : ০৮:০৩:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৩

আপনি যদি বিত্ত-বৈভব ছেড়ে জীবনের গভীর অর্থ অনুসন্ধান বা অন্য কোনোভাবে জীবনকে সমৃদ্ধ করতে চান, সেক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে আপনার অনুপ্রেরণা হওয়ার যোগ্যতা রাখেন আজহান সিরিপানিও; আজ থেকে দু’দশকেরও বেশি সময় আগে যিনি বাবার ৫৪ হাজার ৭৩০ কোটি টাকার (৫০০) কোটি ডলারের সম্পত্তির মোহ পরিত্যাগ করে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর জীবন বেছে নিয়েছেন।

৪০ বছর বয়সী আজহান সিরিপানিওর মূল নাম আজহান কৃষ্ণান। তার বাবা আনন্দ কৃষ্ণান বেশ কয়েক বছর আগে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ু থেকে মালয়েশিয়ায় গিয়ে বসতি গাড়েন।

আজহান ও তার পরিবারের সদস্যরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। আনন্দ কৃষ্ণান মালয়েশিয়ার মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানি এয়ারসেলের স্বত্ত্বাধিকারী। এছাড়া তেল-গ্যাস, ভবন নির্মাণ, ও কৃত্রিম উপগ্রহের যন্ত্রাংশ প্রস্তুতেরও ব্যবসা রয়েছে তার।

আজহান আনন্দ কৃষ্ণানের একমাত্র পুত্র সন্তান। তিনি আনন্দের প্রথম স্ত্রীর সন্তান। ছোটো বেলাতেই মাকে হারান আজহান। পরে আনন্দ দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই ঘরে দুই মেয়ে রয়েছে তার। আজহান ও তার দু’বোনের শৈশব-কৈশোর কেটেছে যুক্তরাজ্যে। তাদের পড়াশোনাও সেখানে।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষার ডিগ্রি নেওয়া আজহান সিরিপানিও মালয়, থাই, ইংরেজিসহ ৮টি ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারেন।

আনন্দের প্রথম পক্ষের স্ত্রী এবং আজহানের মা ছিলেন থাইল্যান্ডের রাজ পরিবারের সদস্য ছিলেন। মৃত্যুর পর তাকে সমাহিতও করা হয়েছিল থাইল্যান্ডেই। ১৮ বছর বয়সে মায়ের কবরে শ্রদ্ধা অর্পণ করার পর তিনি বৌদ্ধ সন্ন্যাসী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং থাইল্যান্ডের দাতো দুম বৌদ্ধ মঠে দীক্ষা গ্রহণ করেন। সন্ন্যাসী হওয়ার পর নিজের নতুন নাম দেন আহজান সিরিপানিও। থাইল্যান্ডের এই বৌদ্ধ মঠটি মালয়েশিয়ার সীমান্তবর্তী।

আজহানের বৌদ্ধ ভিক্ষু হওয়ার সিদ্ধান্তে বাধা হয়ে দাঁড়াননি বাবা আনন্দ; বরং তিনিই সব থেকে বেশি উৎসাহ জুগিয়েছেন পুত্রকে।

সম্ভবত তার প্রধান কারণ—আনন্দ একজন নিবেদিত প্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। দেশে-বিদেশে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থায় অর্থদান করার জন্যও তার সুনাম রয়েছে।

এ কারণে ছেলে পার্থিব সম্পদের মায়া ত্যাগ করে কঠিন জীবনযাপন বেছে নিতে চায় শুনে বাধা দেননি তিনি। কিন্তু কেন বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে আজহান বৌদ্ধ ভিক্ষু হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন, সে সম্পর্কে প্রকাশ্যে কখনও কিছু বলেননি আনন্দ।

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে আজহান বৌদ্ধ ভিক্ষু হিসাবে জীবনযাপন করছেন। যে মঠে দীক্ষা নিয়েছিলেন, সেই দাতো দুম মঠেই থাকেন। ভিক্ষা করে যে সামান্য আয় হয়, তাতেই অনাড়ম্বরভাবে জীবন কাটান।