ঢাকা ০২:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১০ তলা থেকে পড়ে ইনফ্লুয়েন্সারের মৃত্যু, আটক স্বামী

বিনোদন ডেস্ক
  • Update Time : ১২:২৫:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ১০ Time View

স্বামী অ্যালেক্স লিয়েনড্রো বিস্পো দস সান্তোসের সঙ্গে মারিয়া কাতিয়ানে গোমেস দা সিলভা। ছবি: মারিয়ার ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

ব্রাজিলের সাও পাওলোর একটি বহুতল ভবনের ১০ তলার ব্যালকনি থেকে পড়ে ২৫ বছর বয়সী এক ব্রাজিলীয় অনলাইন ইনফ্লুয়েন্সার মারা গেছেন। ওই তরুণীর নাম মারিয়া কাতিয়ানে গোমেস দা সিলভা।

মারিয়া ইনস্টাগ্রামে ইনফ্লুয়েন্সার ছিলেন। গত ২৯ নভেম্বর তাঁর অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের নিচে তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর স্বামী ৪০ বছর বয়সী অ্যালেক্স লিয়েনড্রো বিস্পো দস সান্তোসকে স্ত্রীর মরদেহ ধরে থাকতে দেখা যায়। তিনি পুলিশকে জানান, ঝগড়ার পর তাঁর স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন।

অবশ্য পুলিশ শুরু থেকেই বিষয়টিকে সন্দেহজনক হিসেবে দেখছিল। তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তারা সান্তোসের বক্তব্যে অসংগতি খুঁজে পাওয়ায় ১০ দিন পর ৯ ডিসেম্বর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে নারী হত্যার অভিযোগ আনা হয়।

আসলে কী ঘটেছিল

ব্রাজিলীয় সংবাদমাধ্যম জি১ এবং ও গ্লোবোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই ভবনের বাইরে বিকট শব্দ শোনার কিছুক্ষণ আগে প্রতিবেশীরা দম্পতির অ্যাপার্টমেন্ট থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পেয়েছিলেন। জরুরি সেবা সংস্থা ও সামরিক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সিলভাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।

তদন্ত চলাকালে পুলিশ ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে। ভিডিওতে দেখা যায়, ঘটনার দিন সকালেই ভবনের পার্কিং গ্যারেজে সান্তোস তাঁর স্ত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করছেন।

আরেকটি ভিডিও ফুটেজে লিফটের ভেতরে তাঁদের ঝগড়া করতে দেখা যায়, যেখানে সান্তোসকে সিলভার ঘাড় ধরে জোর করে লিফট থেকে টেনে বের করে দিতে দেখা যায়। এর কিছুক্ষণ পরেই তাঁকে একা লিফটে ফিরে আসতে দেখা যায়।

তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলছেন, সিলভার পড়ে যাওয়ার আগে ঘটনা নিয়ে সান্তোস যে বর্ণনা দিয়েছিলেন, এই ফুটেজ তার সম্পূর্ণ বিপরীত। এই প্রমাণের ভিত্তিতে পুলিশ সান্তোসকে হেফাজতে নিয়েছে এবং মামলাটি নারী হত্যা হিসেবে তদন্ত করছে।

মারিয়া কাতিয়ানে গোমেস দা সিলভা ব্রাজিলের ক্রাটেউসের একটি গ্রামীণ অঞ্চলের বাসিন্দা ছিলেন। উন্নত জীবনের আশায় সাও পাওলোতে আসার আগে তিনি রেস্তোরাঁ ও সুপারমার্কেটে কাজ করতেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে সান্তোসের পরিচয় হয়। পরে তাঁদের বিয়ে হয়।

তদন্ত কর্মকর্তাদের মতে, সিসিটিভি ফুটেজের প্রমাণ সান্তোসের দেওয়া জবানবন্দির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই প্রমাণের ভিত্তিতেই আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। মারিয়া কাতিয়ান মূলত ইনস্টাগ্রামে একজন লাইফস্টাইল ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সেখানে তিনি ভ্রমণ, সৌন্দর্য এবং ব্যক্তিগত জীবনের নানা বিষয় শেয়ার করতেন।

সিলভা ইনস্টাগ্রামে বেশ সক্রিয় ছিলেন। সেখানে তিনি ভ্রমণ, রূপচর্চা, স্বাস্থ্য ও তাঁর দৈনন্দিন জীবনের নানা মুহূর্ত শেয়ার করতেন। গত ৮ নভেম্বর তিনি তাঁর শেষ পোস্টটি করেছিলেন। ইনস্টাগ্রামে তাঁর প্রায় সাড়ে ছয় হাজার অনুসারী ছিল। তিনি নিয়মিত বিউটি রুটিন এবং ব্যক্তিগত হালনাগাদ তথ্য দিতেন।

Please Share This Post in Your Social Media

১০ তলা থেকে পড়ে ইনফ্লুয়েন্সারের মৃত্যু, আটক স্বামী

বিনোদন ডেস্ক
Update Time : ১২:২৫:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫

ব্রাজিলের সাও পাওলোর একটি বহুতল ভবনের ১০ তলার ব্যালকনি থেকে পড়ে ২৫ বছর বয়সী এক ব্রাজিলীয় অনলাইন ইনফ্লুয়েন্সার মারা গেছেন। ওই তরুণীর নাম মারিয়া কাতিয়ানে গোমেস দা সিলভা।

মারিয়া ইনস্টাগ্রামে ইনফ্লুয়েন্সার ছিলেন। গত ২৯ নভেম্বর তাঁর অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের নিচে তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর স্বামী ৪০ বছর বয়সী অ্যালেক্স লিয়েনড্রো বিস্পো দস সান্তোসকে স্ত্রীর মরদেহ ধরে থাকতে দেখা যায়। তিনি পুলিশকে জানান, ঝগড়ার পর তাঁর স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন।

অবশ্য পুলিশ শুরু থেকেই বিষয়টিকে সন্দেহজনক হিসেবে দেখছিল। তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তারা সান্তোসের বক্তব্যে অসংগতি খুঁজে পাওয়ায় ১০ দিন পর ৯ ডিসেম্বর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে নারী হত্যার অভিযোগ আনা হয়।

আসলে কী ঘটেছিল

ব্রাজিলীয় সংবাদমাধ্যম জি১ এবং ও গ্লোবোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই ভবনের বাইরে বিকট শব্দ শোনার কিছুক্ষণ আগে প্রতিবেশীরা দম্পতির অ্যাপার্টমেন্ট থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পেয়েছিলেন। জরুরি সেবা সংস্থা ও সামরিক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সিলভাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।

তদন্ত চলাকালে পুলিশ ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে। ভিডিওতে দেখা যায়, ঘটনার দিন সকালেই ভবনের পার্কিং গ্যারেজে সান্তোস তাঁর স্ত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করছেন।

আরেকটি ভিডিও ফুটেজে লিফটের ভেতরে তাঁদের ঝগড়া করতে দেখা যায়, যেখানে সান্তোসকে সিলভার ঘাড় ধরে জোর করে লিফট থেকে টেনে বের করে দিতে দেখা যায়। এর কিছুক্ষণ পরেই তাঁকে একা লিফটে ফিরে আসতে দেখা যায়।

তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলছেন, সিলভার পড়ে যাওয়ার আগে ঘটনা নিয়ে সান্তোস যে বর্ণনা দিয়েছিলেন, এই ফুটেজ তার সম্পূর্ণ বিপরীত। এই প্রমাণের ভিত্তিতে পুলিশ সান্তোসকে হেফাজতে নিয়েছে এবং মামলাটি নারী হত্যা হিসেবে তদন্ত করছে।

মারিয়া কাতিয়ানে গোমেস দা সিলভা ব্রাজিলের ক্রাটেউসের একটি গ্রামীণ অঞ্চলের বাসিন্দা ছিলেন। উন্নত জীবনের আশায় সাও পাওলোতে আসার আগে তিনি রেস্তোরাঁ ও সুপারমার্কেটে কাজ করতেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে সান্তোসের পরিচয় হয়। পরে তাঁদের বিয়ে হয়।

তদন্ত কর্মকর্তাদের মতে, সিসিটিভি ফুটেজের প্রমাণ সান্তোসের দেওয়া জবানবন্দির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই প্রমাণের ভিত্তিতেই আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। মারিয়া কাতিয়ান মূলত ইনস্টাগ্রামে একজন লাইফস্টাইল ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সেখানে তিনি ভ্রমণ, সৌন্দর্য এবং ব্যক্তিগত জীবনের নানা বিষয় শেয়ার করতেন।

সিলভা ইনস্টাগ্রামে বেশ সক্রিয় ছিলেন। সেখানে তিনি ভ্রমণ, রূপচর্চা, স্বাস্থ্য ও তাঁর দৈনন্দিন জীবনের নানা মুহূর্ত শেয়ার করতেন। গত ৮ নভেম্বর তিনি তাঁর শেষ পোস্টটি করেছিলেন। ইনস্টাগ্রামে তাঁর প্রায় সাড়ে ছয় হাজার অনুসারী ছিল। তিনি নিয়মিত বিউটি রুটিন এবং ব্যক্তিগত হালনাগাদ তথ্য দিতেন।