ঢাকা ০৯:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হৃদয়ের গভীর থেকে উচ্চারিত এক দ্বীপ কন্যার না বলা কথা

রিয়াজুল ইসলাম, হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৭:১৮:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৮৬ Time View

হৃদয়ের গভীরে লুকিয়ে থাকা না বলা যন্ত্রণার কথা আজ প্রথমবারের মতো মনের মাধুরী মিশিয়ে দ্বীপ জনতার উদ্দেশ্যে প্রকাশ করলেন নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার অন্যতম আলোচিত বিএনপি নেত্রী ফৌজিয়া সাফদার সোহেলী। এক আবেগঘন ফেসবুক পোস্টে তিনি তুলে ধরেন নিজের রাজনৈতিক যাত্রা, পারিবারিক ঐতিহ্য, দ্বীপ জনপদের বর্তমান বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতার কথা।

তিনি লেখেন—
হৃদয়ের অতল গহব্বরে লুকিয়ে থাকা না বলা কিছু কথা আজ মনের মাধুরী মিশিয়ে দ্বীপ জনপদের নেটিজেনদের উদ্দেশ্যে প্রকাশ করছি… হৃদয়ের কোণে জমিয়ে থাকা তীব্র যন্ত্রণাদায়ক কিছু অপ্রিয় সত্য প্রকাশ করার আকাঙ্ক্ষা আমাকে পীড়া দিচ্ছে গতকাল থেকে।

ফৌজিয়া সাফদার সোহেলী তাঁর বক্তব্যে দ্বীপ জনপদের সামাজিক অবক্ষয়, রাজনীতির অপব্যবহার ও মানবিক মূল্যবোধের অবনতির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,

হাতিয়া আজ মানবিকতা, শিক্ষা ও সামাজিক সচেতনতার জায়গা থেকে অনেকখানি পিছিয়ে পড়েছে। রাজনীতির নামে চলছে ভাই-রাজনীতি, সামাজিক সংগঠনগুলো দখলদারিত্বে আক্রান্ত, শিক্ষাঙ্গনগুলো হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক আঁতুড়ঘর।

নিজের পারিবারিক ইতিহাস স্মরণ করে তিনি বলেন,
জমিদার বাবার ঘরে সোনার চামচ মুখে জন্মেছি আমি ফৌজিয়া। এটি কোনো অহংকার নয়, বরং আমার জন্মসূত্রে পাওয়া আত্মপরিচয়। সেই পরিচয় আমাকে দায়িত্বশীল করেছে দ্বীপের মানুষের প্রতি।

তিনি আরও লেখেন,
যে পরিবার শত বছর আগে হাতিয়ার বুকে শিক্ষার আলো জ্বালিয়েছে, সেই পরিবারের কন্যা হয়ে আমি দ্বীপ জনতার সুখ-দুঃখে পাশে থাকতে চাই। জীবনের শেষ নিশ্বাস অবধি আমি দ্বীপবাসীর ‘ফৌজি’ হয়েই থাকতে চাই।

রাজনৈতিক যাত্রার প্রসঙ্গে ফৌজিয়া সাফদার সোহেলী বলেন,
রাজনীতি দেখেছি নিজের বাড়ির কাচারি ঘরে। পিতা আলাউদ্দিন খিলজি ও বড় আব্বা নবীর উদ্দিন সফদারের জীবন আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। তাই জাতীয়তাবাদী আদর্শেই আমার রাজনৈতিক পথচলা।

স্বামী আফছার উদ্দিন সফদার-এর প্রতি গভীর ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি লিখেছেন,
আমার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তিনি ছিলেন আমার সঙ্গী, সারথি ও প্রেরণা। তাঁর হাত ধরে আমি দ্বীপের মানুষের জন্য লড়ছি, এবং লড়ব শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত।

পোস্টের শেষভাগে তিনি অত্যন্ত আবেগপূর্ণ ভাষায় লেখেন—
জন্মেছি দ্বীপে, নিশ্বাস হোক শেষ ধানসিঁড়ির এ তীরে। কোনো এক গোধূলি বিকেলে, কোনো বৃদ্ধার ঝুপড়ি ঘরের স্যাঁতস্যাঁতে কাঁথায় মাটির বিছানায় মাথা রাখব— সেখানেই খুঁজে নেবো শান্তি।

ফৌজিয়া সাফদার সোহেলীর এই লেখা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। দ্বীপ জনপদের নেটিজেনরা তাঁর বক্তব্যকে কেউ দেখছেন একজন সাহসী নারীর আত্মপ্রকাশ হিসেবে, আবার কেউ মনে করছেন এটি রাজনৈতিক ও সামাজিক অচলাবস্থার বিরুদ্ধে এক সততা-ভিত্তিক প্রতিবাদ।

তবে একটি বিষয় পরিষ্কার—
ফৌজিয়া সাফদার সোহেলীর হৃদয়ের গভীর থেকে উচ্চারিত এই লেখাটি দ্বীপ হাতিয়ার রাজনৈতিক ও মানবিক বাস্তবতাকে নতুন করে আলোচনায় এনেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

হৃদয়ের গভীর থেকে উচ্চারিত এক দ্বীপ কন্যার না বলা কথা

রিয়াজুল ইসলাম, হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
Update Time : ০৭:১৮:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

হৃদয়ের গভীরে লুকিয়ে থাকা না বলা যন্ত্রণার কথা আজ প্রথমবারের মতো মনের মাধুরী মিশিয়ে দ্বীপ জনতার উদ্দেশ্যে প্রকাশ করলেন নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার অন্যতম আলোচিত বিএনপি নেত্রী ফৌজিয়া সাফদার সোহেলী। এক আবেগঘন ফেসবুক পোস্টে তিনি তুলে ধরেন নিজের রাজনৈতিক যাত্রা, পারিবারিক ঐতিহ্য, দ্বীপ জনপদের বর্তমান বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতার কথা।

তিনি লেখেন—
হৃদয়ের অতল গহব্বরে লুকিয়ে থাকা না বলা কিছু কথা আজ মনের মাধুরী মিশিয়ে দ্বীপ জনপদের নেটিজেনদের উদ্দেশ্যে প্রকাশ করছি… হৃদয়ের কোণে জমিয়ে থাকা তীব্র যন্ত্রণাদায়ক কিছু অপ্রিয় সত্য প্রকাশ করার আকাঙ্ক্ষা আমাকে পীড়া দিচ্ছে গতকাল থেকে।

ফৌজিয়া সাফদার সোহেলী তাঁর বক্তব্যে দ্বীপ জনপদের সামাজিক অবক্ষয়, রাজনীতির অপব্যবহার ও মানবিক মূল্যবোধের অবনতির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,

হাতিয়া আজ মানবিকতা, শিক্ষা ও সামাজিক সচেতনতার জায়গা থেকে অনেকখানি পিছিয়ে পড়েছে। রাজনীতির নামে চলছে ভাই-রাজনীতি, সামাজিক সংগঠনগুলো দখলদারিত্বে আক্রান্ত, শিক্ষাঙ্গনগুলো হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক আঁতুড়ঘর।

নিজের পারিবারিক ইতিহাস স্মরণ করে তিনি বলেন,
জমিদার বাবার ঘরে সোনার চামচ মুখে জন্মেছি আমি ফৌজিয়া। এটি কোনো অহংকার নয়, বরং আমার জন্মসূত্রে পাওয়া আত্মপরিচয়। সেই পরিচয় আমাকে দায়িত্বশীল করেছে দ্বীপের মানুষের প্রতি।

তিনি আরও লেখেন,
যে পরিবার শত বছর আগে হাতিয়ার বুকে শিক্ষার আলো জ্বালিয়েছে, সেই পরিবারের কন্যা হয়ে আমি দ্বীপ জনতার সুখ-দুঃখে পাশে থাকতে চাই। জীবনের শেষ নিশ্বাস অবধি আমি দ্বীপবাসীর ‘ফৌজি’ হয়েই থাকতে চাই।

রাজনৈতিক যাত্রার প্রসঙ্গে ফৌজিয়া সাফদার সোহেলী বলেন,
রাজনীতি দেখেছি নিজের বাড়ির কাচারি ঘরে। পিতা আলাউদ্দিন খিলজি ও বড় আব্বা নবীর উদ্দিন সফদারের জীবন আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। তাই জাতীয়তাবাদী আদর্শেই আমার রাজনৈতিক পথচলা।

স্বামী আফছার উদ্দিন সফদার-এর প্রতি গভীর ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি লিখেছেন,
আমার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তিনি ছিলেন আমার সঙ্গী, সারথি ও প্রেরণা। তাঁর হাত ধরে আমি দ্বীপের মানুষের জন্য লড়ছি, এবং লড়ব শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত।

পোস্টের শেষভাগে তিনি অত্যন্ত আবেগপূর্ণ ভাষায় লেখেন—
জন্মেছি দ্বীপে, নিশ্বাস হোক শেষ ধানসিঁড়ির এ তীরে। কোনো এক গোধূলি বিকেলে, কোনো বৃদ্ধার ঝুপড়ি ঘরের স্যাঁতস্যাঁতে কাঁথায় মাটির বিছানায় মাথা রাখব— সেখানেই খুঁজে নেবো শান্তি।

ফৌজিয়া সাফদার সোহেলীর এই লেখা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। দ্বীপ জনপদের নেটিজেনরা তাঁর বক্তব্যকে কেউ দেখছেন একজন সাহসী নারীর আত্মপ্রকাশ হিসেবে, আবার কেউ মনে করছেন এটি রাজনৈতিক ও সামাজিক অচলাবস্থার বিরুদ্ধে এক সততা-ভিত্তিক প্রতিবাদ।

তবে একটি বিষয় পরিষ্কার—
ফৌজিয়া সাফদার সোহেলীর হৃদয়ের গভীর থেকে উচ্চারিত এই লেখাটি দ্বীপ হাতিয়ার রাজনৈতিক ও মানবিক বাস্তবতাকে নতুন করে আলোচনায় এনেছে।