ঢাকা ০৪:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করল ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১১:৪০:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১৮৫ Time View

ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ ও ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনার

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা। মধ্যস্থতাকারীরা চুক্তির বিষয়ে সমঝোতার ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা শুক্রবার সকালে এ চুক্তি অনুমোদন করে।

চুক্তিতে বলা হয়েছে, জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি বন্দীদের ছেড়ে দেবে। ইসরায়েল ধাপে ধাপে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করবে। এই চুক্তির মধ্য দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পথ খুলল। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। খবর- দ্য গার্ডিয়ান

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে বলেছেন, ‘সরকার এইমাত্র জীবিত ও মৃত সব জিম্মিকে মুক্তির বিষয়ে চুক্তির কাঠামো অনুমোদন করেছে।’ ইসরায়েল সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, চুক্তিটি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। এর পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে।

হামাসের নির্বাসিত গাজাপ্রধান খলিল আল-হাইয়া বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীর কাছ থেকে তিনি যুদ্ধের অবসানের নিশ্চয়তা পেয়েছেন। হামাস ইঙ্গিত দিয়েছে, জীবিতদের মুক্তি দেওয়ার চেয়ে নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ উদ্ধারে বেশি সময় লাগতে পারে।

নেতানিয়াহু একে ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। বিবিসির প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ এবং ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনারকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তারা ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

আল-জাজিরা জানায়, চুক্তি অনুমোদনের ভোটে ডানপন্থী ইসরায়েলি দলগুলো বিরোধিতা করে। জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির আগেই প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে জানান, তিনি এমন কোনো সরকারের অংশ হবেন না ‘যে সরকার গাজায় হামাসের শাসন অব্যাহত থাকতে দেবে’।

এই চুক্তির প্রথম ধাপে থাকছে, হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি। হামাস বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেবে। বিপরীতে ইসরায়েল শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। ইসরায়েল গাজার কিছু অংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করবে এবং প্রতিদিন শত শত ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করবে।

এদিকে ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি ‘সোমবার বা মঙ্গলবারে’র মধ্যে হতে পারে। হামাসের আলোচনাকারী দলের প্রধান খালিল আল-হাইয়া জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর কাছ থেকে তারা স্পষ্ট নিশ্চয়তা পেয়েছেন যে, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ কার্যকর হওয়া মানে গাজায় যুদ্ধের ‘সম্পূর্ণ সমাপ্তি’।

২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৬৭ হাজার ১৯৪ জন নিহত হয়েছেন এবং এক লাখ ৬৯ হাজার ৮৯০ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো হাজারো মানুষের লাশ চাপা পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করল ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা

নিজস্ব প্রতিবেদক
Update Time : ১১:৪০:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা। মধ্যস্থতাকারীরা চুক্তির বিষয়ে সমঝোতার ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা শুক্রবার সকালে এ চুক্তি অনুমোদন করে।

চুক্তিতে বলা হয়েছে, জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি বন্দীদের ছেড়ে দেবে। ইসরায়েল ধাপে ধাপে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করবে। এই চুক্তির মধ্য দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পথ খুলল। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। খবর- দ্য গার্ডিয়ান

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে বলেছেন, ‘সরকার এইমাত্র জীবিত ও মৃত সব জিম্মিকে মুক্তির বিষয়ে চুক্তির কাঠামো অনুমোদন করেছে।’ ইসরায়েল সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, চুক্তিটি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। এর পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে।

হামাসের নির্বাসিত গাজাপ্রধান খলিল আল-হাইয়া বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীর কাছ থেকে তিনি যুদ্ধের অবসানের নিশ্চয়তা পেয়েছেন। হামাস ইঙ্গিত দিয়েছে, জীবিতদের মুক্তি দেওয়ার চেয়ে নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ উদ্ধারে বেশি সময় লাগতে পারে।

নেতানিয়াহু একে ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। বিবিসির প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ এবং ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনারকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তারা ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

আল-জাজিরা জানায়, চুক্তি অনুমোদনের ভোটে ডানপন্থী ইসরায়েলি দলগুলো বিরোধিতা করে। জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির আগেই প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে জানান, তিনি এমন কোনো সরকারের অংশ হবেন না ‘যে সরকার গাজায় হামাসের শাসন অব্যাহত থাকতে দেবে’।

এই চুক্তির প্রথম ধাপে থাকছে, হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি। হামাস বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেবে। বিপরীতে ইসরায়েল শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। ইসরায়েল গাজার কিছু অংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করবে এবং প্রতিদিন শত শত ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করবে।

এদিকে ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি ‘সোমবার বা মঙ্গলবারে’র মধ্যে হতে পারে। হামাসের আলোচনাকারী দলের প্রধান খালিল আল-হাইয়া জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর কাছ থেকে তারা স্পষ্ট নিশ্চয়তা পেয়েছেন যে, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ কার্যকর হওয়া মানে গাজায় যুদ্ধের ‘সম্পূর্ণ সমাপ্তি’।

২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৬৭ হাজার ১৯৪ জন নিহত হয়েছেন এবং এক লাখ ৬৯ হাজার ৮৯০ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো হাজারো মানুষের লাশ চাপা পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।