হামলার ঘটনায় তদন্তের আশ্বাস দিয়ে বিবৃতি দিলো বাকৃবি প্রশাসন

- Update Time : ০৭:৪৪:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ১৫ Time View
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের ছাত্র-ছাত্রীদের দীর্ঘদিনের কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে চলমান আন্দোলনে বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় জড়িতদের তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের আশ্বাস দিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হেলাল উদ্দীন স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে এটি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের ছাত্র-ছাত্রীদের দীর্ঘদিনের কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবির প্রেক্ষিতে গত ৩১ আগস্ট অনুষ্ঠিত একাডেমিক কাউন্সিল সভায় সর্বসম্মতভাবে সুপারিশ গৃহীত হলেও পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সভা চলাকালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে তালাবদ্ধ করে রাখে।
আরও বলা হয়, ওইদিন সকাল ১১টায় একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভা আহ্বান করা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন ২৫১ জন শিক্ষক। কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত ছয় দফা সুপারিশমালা আলোচনার পর সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, শুরুতে শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর প্রস্তুতি নিলেও পরবর্তীতে একটি ‘স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধনে’ পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যায়।
অবরুদ্ধ শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ শিক্ষক, হৃদরোগী, ডায়াবেটিস আক্রান্ত, শারীরিকভাবে অসুস্থ শিক্ষক ও গর্ভবতী মহিলা শিক্ষকও। দুপুরের তীব্র গরমে, দীর্ঘ সময় অভুক্ত ও মানসিক চাপের কারণে কয়েকজন মহিলা শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে শিক্ষার্থীরা অসুস্থদের বের করে দিতে অস্বীকৃতি জানায় বলে অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অবরুদ্ধদের স্বজন, অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিকেলে মিলনায়তনের চারপাশে জড়ো হতে শুরু করলে উত্তেজনা বাড়ে। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনও শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনায় ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে বিকেলে অডিটরিয়ামের দক্ষিণ দিক ও মুক্তমঞ্চের গেট ভেঙে যায়। কে বা কারা তালা ভেঙেছে তা স্পষ্ট নয়। কর্তৃপক্ষের দাবি, এটি বাইরে থেকে স্বজন বা এলাকাবাসীর কেউ করেছে কি না, তা তদন্তসাপেক্ষ। তবে গেট ভেঙে দেওয়ার সুযোগে অবরুদ্ধ শিক্ষকরা মিলনায়তন থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়, এতে কয়েকজন আহত হন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং আহত শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করেছে।
বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযোগ করে, শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার পরও একটি মহল বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করতে ভাঙচুর চালিয়েছে। এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাত সাড়ে ৯টায় সিন্ডিকেটের জরুরি ভার্চুয়াল সভা ডাকা হয়। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা জেলা প্রশাসনের হাতে ন্যস্ত করা হয় এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। কারা শিক্ষার্থীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করছে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে তা খুঁজে বের করতে দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। দোষী যেই হোক, তদন্তসাপেক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আরও জানানো হয়, শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি পূরণে প্রশাসন বরাবরের মতোই সচেষ্ট ছিলো, আছে এবং থাকবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ স্থিতিশীল রাখতে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহবান জানানো হয়।
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়