ঢাকা ০২:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাদিকে গুলির ঘটনা নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের অংশ: তারেক রহমান

রাজনীতি ডেস্ক
  • Update Time : ১০:৫৫:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ১৬ Time View

বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

ওসমান হাদিকে (ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি) গুলি করার ঘটনাটি নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তারেক রহমান ওই সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের জনগণ সাক্ষী, কারণে–অকারণে শর্তের পর শর্ত জুড়ে দিয়ে কিংবা নানা অজুহাতে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী একটি চক্র নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে বারবার নানা রকম বিঘ্ন সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সব রকম বাধা উপেক্ষা করে প্রায় দেড় দশকের বেশি সময় পর নির্বাচন কমিশন শেষ পর্যন্ত জনগণের সেই আকাঙ্ক্ষিত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখটি ঘোষণা করেছে।

সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র কিন্তু এখনো থেমে নেই। গণতন্ত্রের পক্ষের সাহসী সন্তান ওসমান হাদিকে গুলি করার যে ঘটনা, এটা কিন্তু সেই ষড়যন্ত্রের অংশ। কী ছিল ওসমান হাদির অপরাধ? একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমার মনে যে প্রশ্নগুলো দেখা দিয়েছে, এই কয়েকটি প্রশ্নের জবাবের মধ্যেই আমার মনে হয় এই ঘাতকদের চরিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠবে।’

তারেক রহমান বলেন, ‘একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে যে প্রশ্নগুলো দেখা দিয়েছে, এক. বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা সরকারকে যদি ব্যর্থ করা যায় কারা তাহলে খুশি হবে? দুই. নির্বাচন ছাড়াই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বহাল রাখা গেলে কারা লাভবান হবে? তিন. দেশে জনগণের ভোটে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে কাদের লাভ? আমি বিশ্বাস করি, এসব প্রশ্নের জবাবের মধ্যেই হাদির ঘাতকেরা লুকিয়ে রয়েছে। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের শত্রুরা ঘাপটি মেরে রয়েছে এসব প্রশ্নের উত্তরে।’

পতিত ও পলাতক একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের হীন ও দলীয় স্বার্থে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ইতিহাসকে দলীয় ইতিহাসে পরিণত করার অপচেষ্টা অতীতেও হয়েছে, এখনো পরাজিত একটি চক্র বিজয়ের নতুন ইতিহাস রচনার চেষ্টা করছে। এর বিপরীতে প্রতিশোধ নয়, বরং প্রতিটি মানুষের ঘরে বিজয়ের সুফল পৌঁছে দিয়ে একটি সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়াই হোক এবারের বিজয় দিবসের অঙ্গীকার।

তিনি বলেন, বিএনপি মনে করে, জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত না হলে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র টেকসই হবে না। দেশের ইতিহাসে যতবার গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে, ততবারই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়েছে। জনগণকে ক্ষমতাহীন করে রাষ্ট্র কখনো শক্তিশালী হতে পারে না। তাই জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠাই বিএনপির মূল লক্ষ্য। এ কারণেই দলটি সব সময় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, যারা স্বাধীনতাপ্রিয় ও গণতন্ত্রকামী মানুষকে ভয় দেখাতে চায়, তারা ব্যর্থ হবেই। ১৯৭১, ১৯৭৫, ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের আন্দোলন প্রমাণ করেছে জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে বিজয় অনিবার্য। নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ইনশা আল্লাহ এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার মিছিলে তিনি নিজেও থাকবেন বলে আশ্বাস দেন।

তারেক রহমান আরও বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন শুধু একটি নির্বাচন নয়; এটি বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থ, দেশের সার্বভৌমত্ব ও আগামী দশকের রূপান্তরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। নারী, তরুণ, কৃষক-শ্রমিকসহ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে একটি স্বনির্ভর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়াই বিএনপির লক্ষ্য।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে তিনি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

হাদিকে গুলির ঘটনা নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের অংশ: তারেক রহমান

রাজনীতি ডেস্ক
Update Time : ১০:৫৫:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

ওসমান হাদিকে (ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি) গুলি করার ঘটনাটি নির্বাচনে বিঘ্ন সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তারেক রহমান ওই সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের জনগণ সাক্ষী, কারণে–অকারণে শর্তের পর শর্ত জুড়ে দিয়ে কিংবা নানা অজুহাতে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী একটি চক্র নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে বারবার নানা রকম বিঘ্ন সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সব রকম বাধা উপেক্ষা করে প্রায় দেড় দশকের বেশি সময় পর নির্বাচন কমিশন শেষ পর্যন্ত জনগণের সেই আকাঙ্ক্ষিত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখটি ঘোষণা করেছে।

সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র কিন্তু এখনো থেমে নেই। গণতন্ত্রের পক্ষের সাহসী সন্তান ওসমান হাদিকে গুলি করার যে ঘটনা, এটা কিন্তু সেই ষড়যন্ত্রের অংশ। কী ছিল ওসমান হাদির অপরাধ? একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমার মনে যে প্রশ্নগুলো দেখা দিয়েছে, এই কয়েকটি প্রশ্নের জবাবের মধ্যেই আমার মনে হয় এই ঘাতকদের চরিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠবে।’

তারেক রহমান বলেন, ‘একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে যে প্রশ্নগুলো দেখা দিয়েছে, এক. বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা সরকারকে যদি ব্যর্থ করা যায় কারা তাহলে খুশি হবে? দুই. নির্বাচন ছাড়াই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বহাল রাখা গেলে কারা লাভবান হবে? তিন. দেশে জনগণের ভোটে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে কাদের লাভ? আমি বিশ্বাস করি, এসব প্রশ্নের জবাবের মধ্যেই হাদির ঘাতকেরা লুকিয়ে রয়েছে। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের শত্রুরা ঘাপটি মেরে রয়েছে এসব প্রশ্নের উত্তরে।’

পতিত ও পলাতক একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের হীন ও দলীয় স্বার্থে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ইতিহাসকে দলীয় ইতিহাসে পরিণত করার অপচেষ্টা অতীতেও হয়েছে, এখনো পরাজিত একটি চক্র বিজয়ের নতুন ইতিহাস রচনার চেষ্টা করছে। এর বিপরীতে প্রতিশোধ নয়, বরং প্রতিটি মানুষের ঘরে বিজয়ের সুফল পৌঁছে দিয়ে একটি সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়াই হোক এবারের বিজয় দিবসের অঙ্গীকার।

তিনি বলেন, বিএনপি মনে করে, জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত না হলে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র টেকসই হবে না। দেশের ইতিহাসে যতবার গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে, ততবারই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়েছে। জনগণকে ক্ষমতাহীন করে রাষ্ট্র কখনো শক্তিশালী হতে পারে না। তাই জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত, জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠাই বিএনপির মূল লক্ষ্য। এ কারণেই দলটি সব সময় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, যারা স্বাধীনতাপ্রিয় ও গণতন্ত্রকামী মানুষকে ভয় দেখাতে চায়, তারা ব্যর্থ হবেই। ১৯৭১, ১৯৭৫, ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের আন্দোলন প্রমাণ করেছে জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে বিজয় অনিবার্য। নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ইনশা আল্লাহ এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার মিছিলে তিনি নিজেও থাকবেন বলে আশ্বাস দেন।

তারেক রহমান আরও বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন শুধু একটি নির্বাচন নয়; এটি বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থ, দেশের সার্বভৌমত্ব ও আগামী দশকের রূপান্তরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। নারী, তরুণ, কৃষক-শ্রমিকসহ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে একটি স্বনির্ভর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়াই বিএনপির লক্ষ্য।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে তিনি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।