ঢাকা ১১:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাদিকে গুপ্ত বাহিনী ও নিষিদ্ধ বাহিনী হামলা করেছে-শিবির সেক্রেটারি

নোয়াখালী প্রতিনিধি
  • Update Time : ০৮:২৮:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / ১৯ Time View

হাদিকে গুপ্ত বাহিনী নিষিদ্ধ বাহিনী হামলা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বরে ৭ শহীদের স্মরণে এক আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, শরিফ ওসমান হাদি জুলাই বিপ্লবের অন্যতম সেনা নায়ক আপোষহীন নেতৃত্ব আজীবন আধিপত্য বাদের বিরুদ্ধে যার কন্ঠস্বর জারি রেখেছেন যিনি আমাকে বারবার বলতেন এই গুলিবিদ্ধ হওয়ার দুই তিন দিন আগেও কথা হয়েছে। তিনি বিভিন্ন ভাবে আমাদের সাথে কথাবার্তা বলে আশঙ্কা করতেন আমাকে হত্যা করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমরা বারবার তাকে রিকুয়েষ্ট করতাম হাদি একটু সাবধানে থাকো, বের হইয়ো না। সে বলসে মওতের ফয়সালা আসমানে হয়। আমি যদি ঘরের ভেতরও থাকি তাও ত মারা যাব।

তিনি আরও বলেন, রাজনীতিবীদদের জন্য এটা শোভনীয় নয়। সুতরাং ঘরের ভেতর থেকে মৃত্যুবরণ করতে নয় রাজপথে থেকে মৃত্যুবরণ করার জন্য আমার জন্ম হয়েছে। সেই শরিফ ওসমান হাদিকে গুপ্ত বাহিনী নিষিদ্ধ বাহিনী হামলা করে সে এখন জীবন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এই ভরা মজলিসে মহান রবের কাছে তার প্রাণ ভিক্ষা চাই। আল্লাহ যেনো আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এই বলিষ্ঠ কন্ঠস্বরকে আরও কিছু দিন আমাদের জন্য ফেরত দেন। এই বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর বাতিলের এক আতঙ্কে পরিনত হয়েছে। এক ব্যক্তি যেভাবে কথা বলতো তাদের তত্ত তাউস নরবড়ে হয়ে গিয়েছে। তারা মনে করেছে আমাদের গুলি করে দমাতে পারবে। তারা ভুলে গিয়েছে আমরা মায়ের উদর থেকে শাহাদাতের তামান্না নিয়ে এই জমিনে পা রেখেছি।

উদয় অথবা অস্তের কোনো ক্লান্তি আমাদের দুর্বল করতে পারবে না উল্লেখ করে শিবিরের এ সেক্রেটারি বলেন, উদয় অথবা অস্তের কোনো ক্লান্তি আমাদের দুর্বল করতে পারবে না। আমাদের শাহাদাতের তামান্না আমাদের রক্তের ধমনীতে প্রবাহিত হয়। সুতরাং যারা মনে করো ইসলামী ছাত্রশিবিরকে গুম, খুন, হত্যা, দেশান্তরিত করার মধ্যে দিয়ে নির্বাসিত করতে পারবা তোমরা দেখে নাও কোম্পানীগঞ্জবাসী সারা বাংলাদেশ জেনে নাও আমরা হুশিয়ার করে বলছি তোমাদের বাতিলরা যদি সোজা না হও।

তিনি আরও বলেন, এক রক্তের বিনিময়ে হাজারো রক্ত জন্ম নেয়। এই কোম্পানীগঞ্জের মাটি এখন উর্বর হয়েছে। লক্ষ লক্ষ তরুণ যুবক কোরআনের প্রেমে আসক্ত হয়ে ইসলামী আন্দোলনের পথে তাদের জীবনকে বিনিয়োগ করতে ওয়াদাবদ্ধ হয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সবাইকে কবুল করুক।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নোয়াখালী জেলা দক্ষিণের সভাপতি হাফেজ সাইফুর রসুল ফুহাদের সমাবেশে সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন নোয়াখালী ৪ আসনের সংসদ সদস্য ও নোয়াখালী জেলা জামায়াতে আমীর ইসহাক খন্দকার।

এছাড়াও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় বায়তুলমাল সম্পাদক আনিসুর রহমান, কেন্দ্রীয় শিল্প ও সংস্কৃতি সম্পাদক এইচ এম আবু মুসা, কেন্দ্রীয় কার্যকারী পরিষদ সদস্য ও নোয়াখালী শহরের সভাপতি হাবিবুর রহমান আরমান, নোয়াখালী জেলা উত্তরের সভাপতি দাউদ ইসলাম, নোয়াখালী-৫ আসনের জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা বেলায়েত হোসেন, বসুরহাট পৌর জামায়াতের আমির মোশাররফ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে কোম্পানীগঞ্জে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক ছাত্র ও যুবক অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠান শেষে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, ২০১৩ সালে ১৪ ডিসেম্বর নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভায় আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিতে ৭ শিবিরকর্মী নিহত হয়। তারা হলেন, আব্দুস সাত্তার, সাইফুল ইসলাম, মতিউর রহমান সজিব, আব্দুর নুর রাসেল, আব্দুল আজিজ রায়হান, সাইফুল ইসলাম ও মো. মিশু ।

Please Share This Post in Your Social Media

হাদিকে গুপ্ত বাহিনী ও নিষিদ্ধ বাহিনী হামলা করেছে-শিবির সেক্রেটারি

নোয়াখালী প্রতিনিধি
Update Time : ০৮:২৮:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

হাদিকে গুপ্ত বাহিনী নিষিদ্ধ বাহিনী হামলা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বরে ৭ শহীদের স্মরণে এক আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, শরিফ ওসমান হাদি জুলাই বিপ্লবের অন্যতম সেনা নায়ক আপোষহীন নেতৃত্ব আজীবন আধিপত্য বাদের বিরুদ্ধে যার কন্ঠস্বর জারি রেখেছেন যিনি আমাকে বারবার বলতেন এই গুলিবিদ্ধ হওয়ার দুই তিন দিন আগেও কথা হয়েছে। তিনি বিভিন্ন ভাবে আমাদের সাথে কথাবার্তা বলে আশঙ্কা করতেন আমাকে হত্যা করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমরা বারবার তাকে রিকুয়েষ্ট করতাম হাদি একটু সাবধানে থাকো, বের হইয়ো না। সে বলসে মওতের ফয়সালা আসমানে হয়। আমি যদি ঘরের ভেতরও থাকি তাও ত মারা যাব।

তিনি আরও বলেন, রাজনীতিবীদদের জন্য এটা শোভনীয় নয়। সুতরাং ঘরের ভেতর থেকে মৃত্যুবরণ করতে নয় রাজপথে থেকে মৃত্যুবরণ করার জন্য আমার জন্ম হয়েছে। সেই শরিফ ওসমান হাদিকে গুপ্ত বাহিনী নিষিদ্ধ বাহিনী হামলা করে সে এখন জীবন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এই ভরা মজলিসে মহান রবের কাছে তার প্রাণ ভিক্ষা চাই। আল্লাহ যেনো আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এই বলিষ্ঠ কন্ঠস্বরকে আরও কিছু দিন আমাদের জন্য ফেরত দেন। এই বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর বাতিলের এক আতঙ্কে পরিনত হয়েছে। এক ব্যক্তি যেভাবে কথা বলতো তাদের তত্ত তাউস নরবড়ে হয়ে গিয়েছে। তারা মনে করেছে আমাদের গুলি করে দমাতে পারবে। তারা ভুলে গিয়েছে আমরা মায়ের উদর থেকে শাহাদাতের তামান্না নিয়ে এই জমিনে পা রেখেছি।

উদয় অথবা অস্তের কোনো ক্লান্তি আমাদের দুর্বল করতে পারবে না উল্লেখ করে শিবিরের এ সেক্রেটারি বলেন, উদয় অথবা অস্তের কোনো ক্লান্তি আমাদের দুর্বল করতে পারবে না। আমাদের শাহাদাতের তামান্না আমাদের রক্তের ধমনীতে প্রবাহিত হয়। সুতরাং যারা মনে করো ইসলামী ছাত্রশিবিরকে গুম, খুন, হত্যা, দেশান্তরিত করার মধ্যে দিয়ে নির্বাসিত করতে পারবা তোমরা দেখে নাও কোম্পানীগঞ্জবাসী সারা বাংলাদেশ জেনে নাও আমরা হুশিয়ার করে বলছি তোমাদের বাতিলরা যদি সোজা না হও।

তিনি আরও বলেন, এক রক্তের বিনিময়ে হাজারো রক্ত জন্ম নেয়। এই কোম্পানীগঞ্জের মাটি এখন উর্বর হয়েছে। লক্ষ লক্ষ তরুণ যুবক কোরআনের প্রেমে আসক্ত হয়ে ইসলামী আন্দোলনের পথে তাদের জীবনকে বিনিয়োগ করতে ওয়াদাবদ্ধ হয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সবাইকে কবুল করুক।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নোয়াখালী জেলা দক্ষিণের সভাপতি হাফেজ সাইফুর রসুল ফুহাদের সমাবেশে সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন নোয়াখালী ৪ আসনের সংসদ সদস্য ও নোয়াখালী জেলা জামায়াতে আমীর ইসহাক খন্দকার।

এছাড়াও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় বায়তুলমাল সম্পাদক আনিসুর রহমান, কেন্দ্রীয় শিল্প ও সংস্কৃতি সম্পাদক এইচ এম আবু মুসা, কেন্দ্রীয় কার্যকারী পরিষদ সদস্য ও নোয়াখালী শহরের সভাপতি হাবিবুর রহমান আরমান, নোয়াখালী জেলা উত্তরের সভাপতি দাউদ ইসলাম, নোয়াখালী-৫ আসনের জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা বেলায়েত হোসেন, বসুরহাট পৌর জামায়াতের আমির মোশাররফ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে কোম্পানীগঞ্জে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক ছাত্র ও যুবক অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠান শেষে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

জানা গেছে, ২০১৩ সালে ১৪ ডিসেম্বর নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভায় আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিতে ৭ শিবিরকর্মী নিহত হয়। তারা হলেন, আব্দুস সাত্তার, সাইফুল ইসলাম, মতিউর রহমান সজিব, আব্দুর নুর রাসেল, আব্দুল আজিজ রায়হান, সাইফুল ইসলাম ও মো. মিশু ।