হঠাৎ উত্তপ্ত ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট

- Update Time : ০৪:৩৮:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫
- / ১১০ Time View
ধর্মঘটের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট! বিসিবির গঠনতন্ত্র সংস্কার প্রস্তাবে ক্লাবগুলোর স্বার্থে আঘাতের অভিযোগ এনে বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাতে যাচ্ছে তারা। ঢাকা বিভাগের ৭৬টি ক্লাবের প্রতিনিধিরা মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। তাদের দাবি, ঢাকার ক্লাবগুলো গুরুত্ব না দিয়েই গঠনতন্ত্রে সংস্কার আনতে যাচ্ছে বোর্ড। এ ধরনের সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। তবে বিসিবি বলছে, ক্লাবের স্বার্থের ওপর আঘাত আসবে না। ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিসকে (সিসিডিএম) ব্যাপ্তি আরও বাড়াতেই চাইছেন তারা।
বিসিবির সাধারণ পরিষদে ক্যাটাগরি-২-তে ঢাকার ক্লাবগুলোর কাউন্সিলরশিপ। বর্তমানে এখানে মোট কাউন্সিলর সংখ্যা ৭৬ জন। এখান থেকে ক্লাবের প্রতিনিধি হিসেবে বিসিবিতে নির্বাচিত হয়ে আসেন ১২ জন পরিচালক। তবে প্রস্তাবিত সংশোধনীতে এ ক্যাটাগরির কাউন্সিলর সংখ্যা কমানোর পাশাপাশি পরিচালক সংখ্যাও হ্রাস হতে যাচ্ছে। ক্লাবগুলোর দাবি এ সংখ্যা কমিয়ে ৪ করার প্রস্তাব করেছে বিসিবির বর্তমান পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিমের নেতৃত্বাধীন গঠনতন্ত্র সংস্কার কমিটি। পাশাপাশি জেলা ও বিভাগীয় কাউন্সিলর ও পরিচালক সংখ্যাও ১০ থেকে ১৩-তে বৃদ্ধির প্রস্তাবও নাকি চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে এ কমিটি।
বিসিবির আগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলা বিভাগগুলো থেকে পরিচালক হওয়ার সুযোগ পেতেন ১০ জন। ৭১ জন কাউন্সিলরের ভোটে নির্বাচিত হন তারা। কিন্তু বিশ্বস্ত একটি সূত্র কালবেলাকে জানিয়েছে, সংশোধনী প্রস্তাব অনুযায়ী জেলা ও বিভাগীয় কাউন্সিলর সংখ্যাও বাড়তে যাচ্ছে। এতে ১০ জনের পরিবর্তে ১৩ জন পরিচালক পেতে যাচ্ছে জেলা ও বিভাগ নিয়ে গঠিত ক্যাটাগরি-১। যদিও গঠনতন্ত্র সংশোধনের এমন প্রস্তাব কোনোভাবেই মেনে না নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিচ্ছে ঢাকা বিভাগের ক্লাবগুলো। তাদের কাউন্সিলরশিপ কমিয়ে সেটা জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বাড়ানোর প্রস্তাবকে ‘না’ জানাতেই আজ বৈঠকে বসছেন ক্লাব কর্মকর্তারা। এমন কিছু করতে চাইলে ক্লাব ক্রিকেটই বন্ধ করে দেওয়ার মতো হুঁশিয়ার দিয়েছেন অনেকে। ক্লাবগুলোর দাবি, ক্রিকেটার তৈরির মূল জায়গা ক্লাব। কিন্তু সেখানেই যদি এমন কিছু করতে চাওয়া হয়, তাহলে ক্লাব ক্রিকেটই বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন অনেকে।
জানা গেছে, এমন প্রস্তাবের পক্ষে আছে খোদ আবাহনী, মোহামেডান, শেখ জামালের মতো শীর্ষস্থানীয় ক্লাবগুলোও। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিসিবির সাবেক পরিচালক ও ক্রীড়া সংগঠক রফিকুল ইসলাম বাবু কালবেলাকে বলেন, ‘গঠনতন্ত্রের একটা সংশোধনীতে এক প্রস্তাব আমাদের নজরে এসেছে। যেখানে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটকে ধ্বংস করা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা এমন প্রস্তাবনার বিপক্ষে নিজের অবস্থান জানাতেই বৈঠকে বসব।’
সিসিডিএম ছোট হচ্ছে—এমন ভয় ক্লাব কর্মকর্তাদের। কেননা, ২০২২ সালে ক্লাবগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কাউন্সিলরশিপ সমন্বয় করেছিল নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন বোর্ড। সেবার ঢাকা বিভাগের প্রিমিয়ার থেকে শুরু করে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগের সব ক্লাবকেই কাউন্সিলরশিপ দেওয়া হয়। অর্থাৎ ২৪টি কাউন্সিলরশিপ বৃদ্ধি পায় ঢাকার ক্রিকেটে। পরে সেটা বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) কাউন্সিলরদের ভোটে সংশোধিত রূপও পায়। কিন্তু দুই বছর পরই এখন ক্লাব কাউন্সিলরশিপ কমানো ও তাদের পরিচালক সংখ্যা হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন নাজমুল আবেদীন ফাহিমরা। যদিও ক্লাবগুলোর এমন দাবিকে ইতিবাচক বলছেন ফাহিম, ‘ক্লাবের স্বার্থে আঘাত এলে তারা প্রতিবাদ জানাতেই পারে।’
তবে তাদের উদ্দেশ্য ক্লাবের ক্ষতি নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সিসিডিএমকে আরও বড় পরিসরে নিয়ে যেতে চাই। ক্রিকেটকে শুধু ঢাকা নয়, সব বিভাগে ছড়িয়ে নিতেই চাচ্ছি।’
তবে গঠনতন্ত্রের সংশোধনী বিষয়ে ফাহিম বলেন, ‘এখনো কয়েকটা মিটিং বাকি আছে। কোনো কিছুই এখনো নিশ্চিত নয়। তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।’
Please Share This Post in Your Social Media
-
সর্বশেষ
-
জনপ্রিয়